× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঈদ মোনাজাতে স্বদেশে ফেরার আকুতি রোহিঙ্গাদের

নুপা আলম, কক্সবাজার প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৬ পিএম

আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫৮ পিএম

উখিয়ার বালুখালী এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদের নামাজ  অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রবা ফটো

উখিয়ার বালুখালী এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রবা ফটো

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। সব মিলিয়ে এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্প ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের বসবাস। বাংলাদেশে আশ্রয়রত সাড়ে ৬ বছরের বেশি সময় ধরে আশ্রয়রত এসব রোহিঙ্গারা বছরে দুটি  করে (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহা) ১৪টি ঈদ কাটিয়েছেন এই ক্যাম্পে।

উদ্বাস্তু আর ভিন্ন দেশে দুঃস্মৃতি নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন লাখো রোহিঙ্গারা। ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। আর স্বদেশে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে আকুতি জানিয়েছে সবাই।

রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজারের ৩২টি ক্যাম্পে অবস্থিত ৩ হাজারের মতো মসজিদ ও নূরানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব মসজিদ ও নূরানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন রোহিঙ্গারা।

সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ। তাই প্রতিটি বসতি থেকে দলে দলে ঈদের নামাজ আদায়ে ময়দানে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। সবার গায়ে নতুন জামা। ঠিক ৮টার দিকে একযোগে ক্যাম্পে শুরু হয় ঈদ জামাত। ছোট-বড় সবাই আদায় করেন ঈদের নামাজ।

নামাজ শেষে শুরু হয় মোনাজাত, চলে দীর্ঘক্ষণ। আর মোনাজাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং স্বদেশে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও ফিলিস্তিন মুসলমানদের রক্ষায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন রোহিঙ্গারা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) উখিয়ার বালুখালী এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদুল ফিতরে উৎসবের আমেজ কিছুটা বেশি উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে। আর  শিশুরা সেজেগুজে, নতুন জামা-কাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে। রোহিঙ্গারা বলছেন, ঈদের সবচেয়ে বড় জামাতটি হয়েছে উখিয়ার বালুখালীর ৮ নম্বর ক্যাম্পে।

ওই ক্যাম্পের চারপাশে রোহিঙ্গাদের বসতি, ঠিক বসতির মাঝখানে খোলা মাঠ। এই খোলা মাঠে করা হয়েছে ঈদের নামাজ আদায়ের প্যান্ডেল। বাঁশ আর রঙিন কাগজ। সুতার সঙ্গে মাঝে মাঝে টাঙানো হয়েছে ফুল আর বেলুন। এভাবে সেজেছে  ক্যাম্পের প্রতিটি ঈদ নামাজ আদায়ের ময়দান।

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বশর বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরেছি তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। তবে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম যদি নিজ দেশ মিয়ানমারে ঈদ উদযাপন করতে পারলে? আমাদের এখন একমাত্র স্বপ্ন মিয়ানমারে ঈদের নামাজ আদায় করা। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসে আহ্বান জানাচ্ছি।

লম্বাশিয়া ক্যাম্প-১ এর বাসিন্দা হামিদ বলেন, ‘আমরা দেশে যেভাবে ঈদ করতাম, এখানে সেভাবে ঈদ করতে পারি না। কারণ সবকিছুর পরও এটা আমাদের দেশ না। এই জন্য শিশুদের মাঝে আনন্দ দেখা গেলেও আমাদের কোনও আনন্দ নেই। তাই ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে বিশেষ করে নিজ ভূমিতে অধিকার নিয়ে ফিরে যেতে পারব, সেই প্রার্থনাও করা হয়েছে।’

কুতুপালং ক্যাম্প-ডি-৫ এর বাসিন্দা বাদশা মিয়া বলেন, ‘ঈদের সময় গ্রামের লোকজন ঘরে এসে সেমাই ও চালের রুটির সঙ্গে রান্না করা গরুর মাংস খেয়েছে। আর এখন সেমাইর জন্য অন্যের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। এটা বড়ই লজ্জার ব্যাপার। প্রিয় জন্মভূমিতে সত্যিই কি ফেরা হবে এমন সংশয় এখনো গভীর রোহিঙ্গাদের ভেতরে। এই দেশে বোঝা হয়ে আর কত দিন থাকতে হবে? জানি না, আবার কখন ফিরে পাবো, হারানো ঈদের সুখের দিনগুলো।’

ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন বলছে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঈদ উপলক্ষে নজরদারিতে রাখা হয়েছে ক্যাম্পগুলো।

উখিয়ার ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর বলেন, ‘ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেছেন। তবে কেউ যাতে ক্যাম্পের বাইরে না যান, সেজন্য মাঝিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকেও নজরদারি রাখা হয়েছে।’

মো. আমির জাফর আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদের নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে নজরদারিতে রাখা হয়েছে ক্যাম্পগুলো।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা