নড়াইল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০০ পিএম
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রবা ফটো
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদের জেরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় নারীসহ আহত হন তিনজন।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মন্ডলভাগ বাজারে ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত কর্মীকে হাসাপাতালে নেওয়ার পথে এ্যাম্বুলেন্সে হামলার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের তীর ইউনিয়নটির নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। আহতরা হলেন উপজেলার শালনগর গ্রামের নাহিদ খান, আরাফাত শেখ ও রোজিনা খানম।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত একটি টি শার্ট পরে স্থানীয় চা দোকানীর ছেলে। এ সময় আকিজের ছেলে এ ধরনের টিশার্ট পরায় কটুক্তি করে। পরে বাক-বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাহিদ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে এলাকায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল কাজী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা টুটুলের মধ্যে গড়ায়। ঈদের দিন সন্ধ্যায় ইউনিয়নটির নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা তরিকুলের দুলাভাই মো. লাবু মিয়া স্থানীয় ভাবে দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে সালিশ শেষ করেন। আওয়ামী সমর্থিত নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যানের বিচারে অসন্তোষ প্রকাশ করে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। ঘটনার পরে নাহিদ খানকে মন্ডলভাগ বাজারে একা পেয়ে সংবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়ে আহত করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতাকর্মীরা হামলার খবর শুনে পাল্টা হামলা চালায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত নাহিদ অভিযোগ করে বলেন,চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের হলে কি হবে, তিনি বিএনপির কর্মীদের আস্কারা দেন। বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে কটুক্তি করার বিচার কি শুধু ধমক! আজকের এ ঘটনার মুল হোতা ইউপি চেয়ারম্যান লাবু মিয়া, সে পেছনে থেকে কলকাঠি নেড়ে আজকের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এদিকে আহত নারী রোজিনা খানম বলেন, আমি বাজারে ঔষুধ আনতে গেছিলাম। বাজারে গেঞ্জাম চলছিলো দেখে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফিরতে গেলে কে বা কারা আমার মাথায় কোপ দেন। আমি মাটিতে পড়ে যাই পরে আমার কিছু মনে নাই।
অ্যাম্বুলেন্স চালক পিকুল মোল্যা বলেন, শালনগর থেকে ফোন আসে মারামারিতে আহত রোগীকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই, রোগী নাহিদকে নিয়ে ফেরার পথে ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলো পার হওয়ার পর প্রতিপক্ষরা পথ আটকে দেয়। তারা ইট পাটকেল মেরে আমার অ্যাম্বুলেন্সের গ্লাস ভেঙ্গে দেয়, পরিস্থিতি খারাপ দেখে আমি দ্রুত চালিয়ে চলে আসি।
এদিকে শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. লাবু মিয়া সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক দ্বন্দ্বের সালিশ করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলি। কিন্তু নাহিদ ও শিমুল বিচার নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। পরে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে।
কি বিষয় নিয়ে বিরোধ হয়েছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, কি নিয়ে বিবাদ তা ঠিক জানা নাই। বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে কটুক্তি করা হয়েছে এমন অভিযোগের সালিশ করছেন কি না প্রশ্নে লাবু মিয়া বলেন, না এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় প্রতিদিনেরে বাংলাদেশকে জানান,‘সংঘর্ষের ঘটনা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে এলাকায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’