বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪১ এএম
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১৮ পিএম
বাগেরহাটের চিতলমারীতে ঘের থেকে উদ্ধার করা স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমির। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমির উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের মো. হাসান শেখের মৎস্য ঘের থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। ট্রাকে করে কুমিরটি খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার (ডিএফও) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কুমিরটিকে সুন্দরবনের গভীরে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়ছেন ডিএফও নির্মল কুমার পাল। এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাত থেকে কুমিরটি হাসান শেখের ঘেরে অবস্থান করছিল।
স্থানীয়রা জানায়, হঠাৎ করে ঘেরে কুমিরটি দেখতে পায় তারা। বিষয়টি জানাজানি
হলে স্থানীয়রা কুমির দেখতে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে সবাই মিলে কুমিরটিকে উদ্ধার করে। কুমিরের
শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার রয়েছে। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা কুমিরটিকে নিয়ে গেছেন।
খবর পেয়ে পুলিশও আসে ঘটনাস্থলে।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন,
কেউ যাতে কুমিরটির ক্ষতি না করে সেজন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। খবর শোনার
পর থেকে আমরা বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছি। খুলনা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য
সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্যর নেতৃত্বে একটি দল ট্রাকে করে কুমিরটিকে খুলনায় নিয়ে
গেছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার
(ডিএফও) নির্মল কুমার পাল বলেন, আমরা কুমিরটিকে উদ্ধার করেছি। কুমিরটি সুস্থ্য রয়েছে।
পরবর্তীতে কুমিরটিকে সুন্দরবনের গভীরে অবমুক্ত করা হবে।
গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনের কুমিরের চলাচল ও গতিপথ জানার জন্য গত
১৩ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে চারটি কুমির সুন্দরবনের হারবাড়িয়া
পয়েন্টে অবমুক্ত করা হয়। চারটি কুমিরের তিনটির অবস্থান সুন্দরবনে পাওয়া গেলেও একটি
কুমিরের অবস্থান বিভিন্ন সময় মোংলা, বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ, পিরোজপুর এলাকায় পাওয়া গেছে।
অবমুক্ত করা চারটি কুমিরের মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী কুমির রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন
সময় সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ২০০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিল।
কিন্তু তাদের গতিবিধি এমনভাবে নজর দেওয়া হয়নি। তবে এর আগে একইভাবে শরীরে স্যাটেলাইট
ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
মো. আজাদ কবির বলেন, স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো চারটি কুমিরের মধ্যে তিনটি সুন্দরবন
এলাকায় অবস্থান করলেও একটি কুমির অন্যত্র চলে যায়। কিছুদিন ধরে সেটি পিরোজপুরের নদ-নদীতে
ঘোরে। নিজের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান পেতে তার এমন পথচলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। কুমিরটি
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ উদ্ধার করেছে।