লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩১ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৫ পিএম
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষক। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরে মলম পার্টি অপবাদ দিয়ে আক্তার হোসেন বাবু নামে এক স্কুলশিক্ষককে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ওই শিক্ষকের ভাই মাসুদুর রহমান মাসুদ সদর মডেল থানায় আটজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে পেঁচা সুমন নামে এক যুবকসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষককে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সমাজমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতনের বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আক্তার লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের লাহারকান্দির মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে ও ঢাকার ক্যামব্রিজ স্কলারস স্কুলের শিক্ষক।
জানা গেছে, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আইয়ুব আলীর পুল এলাকায় শিক্ষক আক্তারের ওপর এ নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আক্তারের পরিবার ও স্বজনরা জানায়, ঈদের ছুটিতে আক্তার বাড়ি এসেছেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর আইয়ুব আলীর পুল এলাকায় তিনি ছোট ভাই মাসুদের বাড়ি দাওয়াতে যান। ফেরার পথে পেঁচা সুমন, সাইমন হোসেন, অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন আলো, মমিন উল্যাহ, সুমনসহ কয়েকজন তাকে মলম পার্টি অপবাদ দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ফেলে। তারা তার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে জনসম্মুখে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এদিকে ঘটনার ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, মলম পার্টি বলে পেঁচা সুমন নামে যুবক লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি শিক্ষক আক্তারের পায়ে আঘাত করছে। একই সঙ্গে সুমন বলছে, তোদের কারণে কত মাইনষে কাঁদে। এ সময় শিক্ষক আক্তারও আল্লাহকে ডেকে অঝরে কাঁদতে থাকেন।
শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবু বলেন, ‘মাসুদের বাড়ি থেকে আসার সময় পথ রোধ করে তারা আমার মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তারা আমাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েছে। এতে আমি অচেতন হয়ে পড়ি। আমি ওই বখাটেদের বিচার চাই।’
আক্তারের ভাই মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘আমার ভাইকে মলম পার্টি আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করেছে বখাটেরা। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারাই প্রকৃত মলম পার্টি।’
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. একে আজাদ বলেন, ‘আক্তারের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরীক্ষানিরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেলে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকের ভাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।