নওগাঁ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৮ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৬ পিএম
দেশীয় অস্ত্র হাতে শান্ত বাহিনীর মহড়া। রবিবার রাত ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ড এলাকায়। প্রবা ফটো
নওগাঁয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়ার মধ্য দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন নামে পল্লী বিদ্যুতের এক ঠিকাদারকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মোশারফ হোসেন শান্ত নামের এক যুবক ধারালো অস্ত্র হাতে সজ্জিত ১০-১২ জন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঠিকাদার সাজ্জাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধারালো হাঁসুয়া (দেশীয় অস্ত্র) দিয়ে সাজ্জাদের মাথায় কোপ দেয় শান্ত। গুরুত্বর জখম বাবাকে বাঁচাতে ছুটে যান সাজ্জাদের ছেলে হৃদয়। হৃদয়কেও বেধড়ক মারে শান্তর অনুসারীরা। এ ঘটনার সময় রাস্তায় শত শত মানুষ চলাচল করছিল।
শান্তের অনুসারীদের অস্ত্রের মহড়ার পর শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে ঘটনার পর মোশাররফ হোসেন শান্ত ও তার অনুসারীরা গা ঢাকা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বাসস্টান্ডে সোহরাওয়ার্দী নামে একটি মুদিখানার দোকানিকে রাতে আকস্মিক কল দিয়ে হাত পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় শান্ত। এর কিছুক্ষণ পর ওই দোকানে গিয়ে সোহরাওয়ার্দীকে মারপিট শুরু করেন শান্ত ও তার অনুসারীরা। পুরো ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ঠিকাদার সাজ্জাদ। বাধা দিতে গেলে সাজ্জাদের ওপর চড়াও হয় শান্ত ও তার অনুসারীরা। এরপর সেখান থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে তারা শুরু করে অস্ত্রের মহড়া। হামলা করা হয় সাজ্জাদ ও তার ছেলের ওপর।
ভুক্তভোগী ঠিকাদার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘নববর্ষের দিন স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঘোরাঘোরি শেষে বাড়িতে ফিরছিলাম। ফেরার পথে স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়ে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে নেমে যাই। পথে শান্তের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সে আমার পথরোধ করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। শান্তর সাথে থাকা ১০-১২ জনের প্রত্যেকের হাতেই ধারালো অস্ত্র ছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে। আমাকে বাঁচাতে এলে আমার ছেলেকেও তারা বেদম মারে। শান্ত বাহিনীর অত্যাচারে পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আমরা অতিষ্ঠ।’
সাজ্জাদ হোসেনের অভিযোগ, এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে আমাকে হত্যা করবে বলে এখনও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে শান্ত বাহিনীর সন্ত্রাসীরা।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, ‘খবরটি পাওয়ার পর রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ওই ঠিকাদার বর্তমানে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষে এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।’
ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাজ্জাদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে পুলিশ। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’