× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কিশোরগঞ্জের হাওরে বন্যার শঙ্কায় বোরো ধান কাটায় ধুম

সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৮ পিএম

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ২০:২৮ পিএম

অনুকূল আবহাওয়া থাকলে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাওরের সিংহভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে বলে মনে করেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

অনুকূল আবহাওয়া থাকলে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাওরের সিংহভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে বলে মনে করেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কায় এক সপ্তাহ ধরে কৃষকরা ব্রি-২৮, ব্রি-৮৮ ও ব্রি- ৯৮ জাতের বোরো ধান আগাম কাটতে শুরু করেছেন। হাওরে এখন পর্যন্ত পানি না আসায় তারা স্বস্তিতে ধান কাটছেন। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকলে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাওরের সিংহভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। এবার ধানের দাম বেশ ভালো। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ কৃষক কাটা ধান বিক্রি করছেন না।

চলতি বছর দেশের হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘাম ঝরানো মাঠে পরিশ্রমের ফসল দেখতে পেয়ে কৃষকের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। কিন্তু সেই হাসির পাশাপাশি তাদের মনে ছিল উদ্বেগ। বর্ষা আসন্ন, সঠিক সময়ের মধ্যে ধান কাটতে না পারলে উজানের ঢলে তলিয়ে যাবে সব। 

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার ছিলনী হাওরসহ বিস্তীর্ণ হাওরে গিয়ে দেখা যায়,  যে দিকে চোখ যায় শুধু পাকা ধান আর ধান। ক্ষেতের পর ক্ষেত ধানে ভরে গেছে। মৃদুমন্দ বাতাসে দুলছে লম্বা লম্বা পাকা ও আধাপাকা ধানের সোনালি শীষ। এসব হাওরে পুরোদমে পাকা ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষি শ্রমিকরা ধান কাটতে হাওরে এসে জড়ো হচ্ছেন। কোনো কোনো হাওরের উঁচু স্থানে অস্থায়ী ঘর (জিরাতি) তৈরি করেছেন শ্রমিকরা। কৃষি শ্রমিকদের পাশাপাশি যন্ত্র দিয়ে দিনরাত চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। 

জেলার কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে , কিশোরগঞ্জে এবার ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ  ৬২৫ শত মেট্রিক টন। জেলায় চাহিদা রয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টনের মতো।

ইটনার বড়িবাড়ি হাওরের জিরাতি কৃষক তাইজুল মিয়া বলেন, জিরাতিরা নিজেদের বাড়িঘর ফেলে সুখের আশায় খড়কুটো বা টিন দিয়ে ছোট্ট কুঁড়েঘরের মতো অস্থায়ী কাঁচাঘর তৈরি করে হাওরের মাঝখানে বছরের প্রায় অর্ধেকটা সময় কাটিয়ে দেন। আবার বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই সবকিছু নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কারণ তখন হাওর পানিতে টইটম্বুর থাকে। প্রতিবছর হাওরাঞ্চলে এভাবে ধান চাষে কৃষকদের গোলায় হাজার হাজার মণ ধান ওঠে।

উপজেলার কামালপুর গ্রামের কৃষক শুকুর আলী জানান , ধানের ছড়ায় মাঠ ভরে গেছে। সোনা রঙের মাঠভরা ধান দেখলে মনটা জুড়িয়ে যায়। হাওরে পানি না আসাতে আমরা খুশি। ডিঙ্গাপোতা হাওরে পুরোদমে জমির ধান কাটা চলছে। মাঠেই ভিজা ধান প্রতি মণ ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলামসহ ১৪ জন কৃষক জানান, প্রতিবার বোরো লাগানোর সময় থেকে তারা বাড়িঘর ফেলে খড় বা টিন দিয়ে ছোট ঘর তৈরি করে হাওরের মাঝখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকেন। সেখানে রোদ, বৃষ্টি ও তুফান উপেক্ষা করে বছরের অর্ধেক কাটিয়ে দিতে হয়। বিনিময়ে তারা পান গোলাভরা ধান।

জেলার মিঠামইন উপজেলার কৃষক সোহরাব উদ্দিন জানান, আগের চেয়ে কম হলেও এখনও শ্রমিক সংকট রয়েছে। তবে ১৫ দিনের মধ্যে হাওরের সব ধান কেটে ফেলা যাবে বলে তিনি আশা করেন।

নিকলী উপজেলার মোজাহিদ সরকার জানান, এ পর্যন্ত জেলার হাওরাঞ্চলের। ৩৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। অন্যবারের তুলনায় এবার ধানের ফলনও হয়েছে বাম্পার। 

জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগাম বন্যায় স্মরণকালের ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। সব হাওরের কাঁচা ধানই তলিয়ে গিয়েছিল। কৃষকরা এক মণ ধানও তুলতে পারেননি। ওই অভিজ্ঞতা থেকে আগাম জাতের ধান আবাদে আগ্রহ বাড়ে তাদের। এসব জাতের ধান এবার চৈত্র মাস শেষ হওয়ার সাত দিন যাবৎ কৃষকরা তাদের ক্ষেতে আবাদ করা ব্রি-২৮,  ব্র- ৯৮ ও ব্রি-৮৮ জাতের আগাম বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বন্যার আশঙ্কায় আগাম জাতের ধান আবাদ করছেন চাষিরা। প্রচণ্ড গরমের কারণে দ্রুত ধান পেকে যাচ্ছে। বৈশাখের শুরু থেকেই বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু দিনের মধ্যে ওই সব ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা