× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

খোলাবাজারে চাল কিনতে মধ্যরাত থেকে অপেক্ষা

দিনাজপুর সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৫৩ পিএম

আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২২ ১৬:৩২ পিএম

খোলাবাজারে চাল কিনতে দীর্ঘ অপেক্ষা। ছবি : প্রবা

খোলাবাজারে চাল কিনতে দীর্ঘ অপেক্ষা। ছবি : প্রবা

নতুন আমন ধান বাজারে আসা শুরু হলেও দিনাজপুরে ফের বেড়েছে চালের দাম। বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এতে খোলা বাজারের সরকারি চাল বিক্রির কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। কেউ মধ্যরাত থেকে অপেক্ষা করে চাল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আবার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাউকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে চাল বিক্রেতারা দুষছেন মিল মালিকদের। আর মিল মালিকদের দাবি, মিলগেটে নতুন চালের দাম বেশি থাকলেও পুরোনো চালের দাম বাড়েনি।

দিনাজপুর শহরের প্রধান চালের মোকাম এনএম মার্কেট বাহাদুর বাজারে সরেজমিনে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তার দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত। আর প্রকারভেদে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত।

সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা জাতের হাইব্রিড চাল ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা, গুটি স্বর্ণা চাল ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, সুমন স্বর্ণা চাল ২ হাজার ৫০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকা, বিআর-১৯ জাতের চাল ২ হাজার ৫৫০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা, বিআর-২৮ জাতের চাল ২ হাজার ৭০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা ও প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চাল ৩ হাজার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়।

বাহাদুর বাজারের চাল বিক্রেতা এরশাদ হোসেন বলেন, ‘সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু থাকার কারণে বাজারে মোটা চাল বিক্রি কমেছে। এরপরও মিলের মালিকরা হঠাৎ চালের দাম বাড়িয়েছেন। মিলের মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি।’

তবে দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসাদ্দেক হুসেন বলেন, ‘নতুন আমন ধান কেবল বাজারে আসতে শুরু করেছে। দামও বেশি। বেশি দামে নতুন ধান কিনতে হলে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হবে।’ 

তার দাবি, গত মৌসুমের বোরো ধানের চালের দাম বাড়েনি। মিল থেকে এসব চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাহাদুর বাজারে চাল কিনতে আসা মো. খোরশেদ মিস্ত্রি জানান, তিনি গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল কিনেছেন ৬৮ টাকা দরে। কিন্তু শুক্রবার এসে সেই একই মিনিকেট চাল তিনি কিনেছেন ৭২ টাকায়। 

এদিকে জেলা শহরের চাউলিয়াপট্টি, বালুয়াডাঙ্গা, বালুবাড়ী ও রামনগর মোড়ে খাদ্য অধিদপ্তরের খোলাবাজারে চাল বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতে ব্যাগ নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ রাত ৩টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এদের অধিকাংশই নারী।

চাউলিয়াপট্টি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা টুকু মিয়া ও আমিনুল ইসলাম জানান, ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সবাইকে চাল দিতে পারছেন না তারা। নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল বিতরণের পর অনেকে বাদ থাকছেন। এ জন্য চাল না পেয়ে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন।

রাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে সকালে চাল কিনতে পেরেছেন আকলিমা। তার ভাষ্যে, ‘আমার স্বামী ওয়াটার লাইন মিস্ত্রির কাজ করে। তার আয়ের অল্প টাকায় সংসার চালানো কঠিন। বর্তমান বাজারে চালের কেজি ৬০-৬৫ টাকা। তাই কয়েক দিন ধরেই ভাবছি ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনব। কিন্তু পরিমাণে কম আসায় ৩ দিন ঘুরেও আমার কপালে চাল জোটেনি। তাই সারারাত জেগে ছিলাম। ভোরে চাল নিয়ে পেয়েছি। আমার মতো ২৫-৩০ জন সারারাত জেগে সকালে চাল নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।’

নাসিমা নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সংসারে অভাবের তাড়নায় ৬ দিন ধরে পাঁচ কেজি চালের জন্য ঘুরছি। কিন্তু পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে সারারাত জেগেছি। সকালে চাল নিয়ে বাড়ি ফিরছি।’

দিনাজপুর জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কামাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত চাল ও আটা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। কিন্তু বরাদ্দের বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। আমার ধারণা, চালের দাম খুব একটা বাড়বে না। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত ৮ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। নতুন ধান পুরোদমে বাজারে উঠলেই চালের দাম কমতে শুরু করবে।’

তিনি বলেন, ‘জেলায় ৪৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ৪৮ টন চাল ও ৪৮ টন আটা সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। দিনাজপুর পৌর এলাকায় ১২ জন ডিলার ও  বাকি ১৩ উপজেলায় ৩৬ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া আছে। তারা প্রতিদিন সরকারি মূল্যে চাল ও আটা বিক্রি করছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা