প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩ ২২:৩৯ পিএম
প্রতীকী ছবি।
প্রকৌশলী স্বামীর নির্যাতনের পর আহত ফাতেমা নাসরিন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার মধ্যরাতে মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল গত ৮ মার্চ। ওই দিনই তার স্বামী প্রকৌশলী মির্জা সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তিনি কারাগারে রয়েছেন। জানা গেছে, নিহত নাসরিন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভাতিজি। শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানান, নাসরিনের ১৯ বছরের সংসার। ১৭ বছরের একটি মেয়ে আছে তাদের। দীর্ঘদিন ধরে যৌতুক হিসেবে এক কোটি টাকা দাবি করে আসছিলেন সাখাওয়াত। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় প্রায়ই স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। সাখাওয়াতের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের উত্তর মিঠাপুকুরে। পরিবার নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডের একটি বাড়িতে বাস করতেন। ঢাকায় গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত তিনি। গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে স্ত্রীকে নিয়ে পঞ্চগড়ে যান সাখাওয়াত। সেখানে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ১০ জানুয়ারি পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মামলা করে পরিবার। মামলায় সাখাওয়াত গ্রেপ্তার হন। এর পরই ফাতেমা ঢাকার বাসায় চলে আসেন। সাখাওয়াত জামিনে বের হয়ে আসেন ঢাকায়। আবারও শুরু করেন নির্যাতন।
নিহতের বোন আরজিনা বেগম বলেন, গত ৮ মার্চ বিকালে হুমায়ুন রোডের বাসায় ফাতেমাকে বেধড়ক মারধর করেন সাখাওয়াত। মশলা বাটার কাঠের বাটলা নিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার সময় তাদের মেয়ে ও ফুফাত বোন বঁটি কেড়ে নেন। খবর পেয়ে একই ভবনের অন্য ফ্লাটে বসবাসকারী এক স্বজন সাখাওয়াতের বাসায় যান। তিনি ফাতেমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, ফাতেমার মাথার পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। এ কারণে তাকে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই দিন থেকেই সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফাতেমা। শুত্রক্রবার রাত ১টার দিকে মার যান তিনি।
জানা গেছে, ৮ মার্চ যখন ফাতেমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয় তখনই থানায় খবর দেন স্বজনরা। যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে ওই দিনই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বোন আরজিনা বাদি হয়ে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, হত্যাচেষ্টার মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। পুলিশ তদন্ত করছে।