ফাইল ছবি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মঠবাড়ি এলাকায় মদের টাকা সংগ্রহ করতে পরিকল্পিতভাবে ইজিবাইক চালক শাকিলকে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা। হত্যার একদিন পর স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার জনসন রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে শনিবার মধ্যরাতে হত্যায় জড়িত চারজনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
নিহত শাকিল একই ইউনিয়নের পালিরা গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে। সে দশম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা ছোটবেলায় মারা যায়। নিজের
পড়াশোনা, মায়ের চিকিৎসা ও সংসারের খরচ যোগাতে সে স্কুল শেষে প্রতিদিন
বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইজিবাইক চালাত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, মো. জনি, মো. শারাফাত, ইব্রাহিম চান, সাব্বির হোসেন মেহেদী। আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু, সিএনজি অটোরিকশা ও চালকের ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ফোন করে জানান, মঠবাড়ী পদ্মা রেলওয়ে সেতুর নিচে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের পরিত্যক্ত ইটের খোলায় গলা কাটা দেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। শাকিলের পরিবার পরে মরদেহ শনাক্ত করে।
তিনি বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট করার সময় দেখা যায়, তার মাথা দেহ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। পিঠে ১১টি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করায় নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে শাকিলের বড় বোন সীমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্তে নেমে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনাক্ত করে পুলিশ। ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িতরা নিজেদের দায় স্বীকার করেছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, হত্যায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সবাই মাদকাসক্ত। গত ১৮ মে তারা পরিকল্পনা করে একটা ইজিবাইক ছিনতাই করবে। এরপর সেটির ব্যাটারি বিক্রির টাকা দিয়ে মদের পার্টি করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ মে সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার ইব্রাহিম চানের সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাটাইল ঘাটে ‘টার্গেট’ ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরে কোন টার্গেট ইজিবাইক না পেয়ে শরাফত ও জনি কাটাইল ঘাট এলাকায় শাকিলের ইজিবাইক পায়। শাকিল ঘাতক জনির পূর্ব পরিচিত ছিল। পরে জনি, শারাফাত ও সাব্বির শাকিলের গাড়ি নিয়ে মঠবাড়ী পরিত্যক্ত ইটখোলায় যায়। অপরদিকে ইব্রাহিম চান সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে পিছু পিছু আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শারাফাত সুযোগ বুঝে সুইসগিয়ার দিয়ে শাকিলের গলায় টান দেয়। এতে শাকিল ইজিবাইক থেকে পড়ে যায় এবং গলা চেপে ধরে চিৎকার শুরু করে । তখন জনি পেছন থেকে শাকিলের পিঠে এলোপাথাড়ি চাকু মারতে থাকে। কিন্তু তারপরও শাকিল চিৎকার ও দাপাদাপি করতে থাকায় জনি, সাব্বির ও ইব্রাহিম চান শাকিলের মাথা ও হাত-পা চেপে ধরে এবং শরাফাত শাকিলকে সুইসগিয়ার দিয়ে মাথার সামনে-পেছনে জবাই করে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর শরাফত, জনি ও ইব্রাহিম চান সিএনজি অটোরিকশায় করে চলে যায়। আর সাব্বির নিহত শাকিলের ইজিবাইক নিয়ে চলে যায়।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.