× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নারীবাদ নিয়ে যত বই

আয়শা জাহান নূপুর

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৭:২১ পিএম

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:২৪ পিএম

নারীবাদ নিয়ে যত বই

প্রকাশের স্বাধীনতা নারীবাদীদের এগিয়ে রেখেছে। কলম থেকে কাগজে যা স্থির হয়েছে তা প্রতিবাদের এক একটা দেয়াল টপকানোর গল্প। পৃথিবীতে আলোড়ন তুলেছিল যে নারীবাদী বইগুলো, তা ব্যবচ্ছেদ করলেই আলোর দেখা পাবে এ যুগের মানুষ। তার আগে জেনে নেওয়া যাক নারীবাদ শব্দটি আমাদের মনে বিভ্রান্তি ছড়ায় কী না? নারীবাদী ভাবনা কোনো পুরুষের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, মানুষের জন্য মানবিক। তারা শুধু মুঠো মুঠো আলো নিয়ে পথ চলতে চায়। যদি আপনার ভাবনায় কোনো বিভ্রান্তি না থাকে, তাহলে চলুন পরিচিত হই নারীর লেখা নারীবাদী বইয়ের অন্দরমহলে।



 ১. দ্য সেকেন্ড সেক্স- সিমোন দ্য বোভোয়ার, ১৯৪৯

ফরাসি ভাষায় লেখা এই বইটি দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগ Facts and Myths এবং দ্বিতীয় ভাগ Lived Experience (ফ্রেঞ্চ ভাষায় Les faits et les mythes এবং Lexperience vecue)। প্রকাশের পর বইটি ঝড় তুলেছিল চেতনাদীপ্ত মানুষের মজ্জায়। লেখক বলতে চেয়েছেন, নারীকে কেন ভাবা হয় উৎপাদনের সম্ভাবনা আর সন্তান জন্মদানের উপযুক্ত জমিন হিসেবে? যা নারীর জন্য অবমাননাকর। এতে করে নারী তার নিজের শরীরের ওপর অধিকার হারায়।

বোভোয়ার বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত লেখকের মতামতকে বাতিলের খাতায় ছুড়ে দিয়েছেন। সিগমুন্ড ফ্রয়েড, আলফ্রেড অ্যাডলার এবং ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। এঙ্গেলস তার The Origin of Family, Private Property and the State (1884 ) বইতে নারীর অধীনতার কথা বলতে গিয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণার কথা বলেন। তবে কি নারী সম্পত্তি?

 

২. দ্য ফেমিন মিস্টিক- বেটি ফ্রাইডেন, ১৯৬৩

এই বইতে উঠে এসেছে লেখিকার প্রতিবেশীয় জীবনস্পর্শী অভিজ্ঞতা। একবার কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বন্ধুদের আড্ডায় উঠে আসে তাদের যাপিত জীবনের সাতকাহন। সুখী হওয়ার মন্ত্র ভুলে সবাই যেন ভুলে গেছে বাঁচার সরল পথ। এই অভিজ্ঞতাই এই বইয়ের ভিত। প্রথমে তো প্রকাশের অযোগ্য বলেই প্রকাশকদের দল ফিরিয়ে নিয়েছিল মুখ, তারপর বাকিটা ইতিহাস। বছরের মাথায় হিসাবে উঠে এলো আশ্চর্য হওয়ার সব উপকরণ। ইউরোপের সচেতন নারীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হলো। তারা নিজেদের আবিষ্কার করতে পেরেছিল এই বইয়ের পাতায় পাতায়।

 

৩. সেক্সুয়াল পলিটিক্স- কেইট মিলেট, ১৯৭০

কেইট মিলেট তাঁর বইয়ে মে তীব্র সমালোচনা করেছেন তা থেকে ডি.এইচ. লরেন্স, হেনরী মিলার, নরমান মেইলার, সিগমুন্ড ফ্রয়েড, জন স্টুয়ার্ট মিল কেউই রেহাই পাননি।

লৈঙ্গিক রাজনীতির বই সাহিত্যজগতে ইতিহাস তৈরি করেছে। একজন নারী লেখকের দৃষ্টিতে উঠে এসেছে পুরুষ লেখকদের লেখার গভীর অসুস্থতা। পুরুষের লেখায় নারীচিত্র ধরা পড়ে দোকানে সাজানো ঝলমলে পোশাকের প্রদর্শনীর মতো। নারীর জন্য তাঁরা বেছে নেন উত্তেজক বর্ণনার শব্দ, যা পাঠক ভাবনায় নারীকে কেবল কামনা করার প্রচেষ্টা তৈরিতে সহায়তা করা ছাড়া আর কোনো ভূমিকা রাখে না।

এই বই সেই সব পুরুষের মুখে বিচিত্র কালি মাখিয়ে রাস্তায় নামানোর গল্প। কেইট মিলেট অনুপ্রাণিত হয়েছেন সিমোন দ্য বোভোয়ার দ্বারা।

 

৪. দ্য ফিমেল ইউনাক- জার্মেইন গ্রির, ১৯৭০

বইটি প্রকাশের পর থেকেই জনমনে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন নারীদের কৌমার্য বিসর্জন দিতে এবং নিজেদের রক্তস্রাবের স্বাদ গ্রহণ করতে। তিনি বলেছেন, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নারীকে পেছন থেকে টেনে ধরেছে। পুরুষ নারীকে ভালোবাসে না, তাকে কেবল নিজের গোপন ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে বেছে নেয় নারীকে।

 

৫. এ রুম অব ওয়ানস ওইন : ভার্জিনিয়া উলফ, ১৯২৯

নারীবাদী আন্দোলনের রক্ষা কবজ ভার্জিনিয়া উলফের এই বই।এটি মূলত লেখকের নারীউপন্যাস নামে দুটো বক্তৃতার পরিবর্ধিত রূপ। ১৯২৮ সালের অক্টোবরে লেখিকা গার্টন ও নিউনহ্যাম নামে মেয়েদের দুটি কলেজে এই বক্তৃতা দিয়েছিলেন। পরের বছর সেগুলোই বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই বইয়ের একটা উক্তির জন্য বইটি আজও বিখ্যাত- নারী যখন ফিকশন লেখে তখন তার একটি কক্ষ আর কিছু অর্থ খুব প্রয়োজন।

উলফ এখানে নারীদের পিছিয়ে পড়ার কিংবা তাদের পিছিয়ে রাখার বিভিন্ন কারণের সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। নারী কেন শেক্সপিয়ার হতে পারেন না কিংবা তাদের সাহিত্য কেন কেবল গল্প, উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে? উত্তরে উলফ বলেছেন- জেইন অস্টেন থেকে ব্রন্টি ভগ্নিদ্বয়, জর্জ এলিয়ট ও মেরি কারমাইকেল পর্যন্ত সব লেখিকারই ছিল বিরল প্রতিভা কিন্তু তাঁরা শেষ পর্যন্ত শেক্সপীয়রের মতো স্তরে উঠতে পারেননি কেবলমাত্র পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে। যদি নিজস্ব একটা ঘর আর ৫০০ পাউন্ডের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, নারীরাও অনেক উন্নতমানের সাহিত্য উপহার দিত, এটা তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন। হাতে খুন্তি নাড়তে নাড়তে আর নিজের ভাবনার জন্য, খোলা আকাশ দেখার জানালা না থাকলে নারী কীভাবে টপকাবে পুরুষ লেখকদের?

উল্লেখযোগ্য বইয়ের অল্প কিছু সংখ্যকের কথা এখানে উল্লেখ করা হলো। আগ্রহী পাঠক অনুসন্ধান করলে আরো বইয়ের খোঁজ পাবেন।

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা