আয়শা ঝর্না
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৭:৪৮ পিএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৫৬ পিএম
সিলভিয়া জন্মেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জ্যামাইকায়
১৯৩২ সালে। ছোটবেলায়ই লেখায় হাতেখড়ি। সিলভিয়ার ভাষায় : ‘আমার বয়স যখন মাত্র সাড়ে আট বছর, তখনই লেখার শুরু।’ প্রথম লেখাটি দ্য বস্টন ট্রাভেলারে প্রকাশিত হয়। বিবিসির ইন্টারভিউয়ে
বলেছিলেন কবি না হলে ছোটবেলা থেকে তার ছিল ডাক্তার হওয়ার শখ।
কিন্তু সিলভিয়া ছিলেন পুরোদস্তুর কবি। কবি ছাড়া
অন্য কিছু তার রক্তে ছিল না তা তিনি তার কবিতায় স্বীকার করে গেছেন। কবিতার ইতিহাসে
করেছিলেন নতুন সংযোজন, কনভেনশনাল পোয়েট্রি। তার শব্দচয়ন আর ইমেজ সম্পূর্ণ নতুন, যা
কবিতার ইতিহাসে এনেছে নতুন মাত্রা।
ক্যামব্রিজে পিএইচডি করতে আসেন। এখানেই টেড হিউজের
সঙ্গে পরিচয়। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। বাড়তে থাকে তাদের ইন্টেমেসি। সে সময় প্রচুর লিখতে থাকেন
দুজনই। ১৯৫৬ সালের ১৬ জুন বিয়ে করেন তারা।
সিলভিয়া সারা জীবন কবিতাকেই বেঁচে থাকার উৎস হিসেবে
দেখেছেন। তাই সবকিছুতেই খুঁজে বেড়িয়েছেন কবিতা।
সকালের গান
হে তোমাকে মোটা সোনায় মোড়ানো ঘড়িতে পরিণত করছে
ছোট্ট পায়ে পরিচারিকার ছোট্ট চাপড়
আর আদুরে কান্না
সবকিছুর ভেতর জায়গা করে নিল।
আমাদের স্বর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে তোমার
আগমনকে বিবর্ধিত করেছে। নতুন মূর্তি
আকর্ষক জাদুঘরে, তোমার আদুল গা
আমাদের স্বস্তিকে ছায়া দেয় আশ্বস্ত করে
আমরা গোল হয়ে নিরেট দেয়ালের মতো দাঁড়াই।
আমি তোমর মায়ের চেয়ে বেশি কিছু নই
মেঘের গায়ে রৌদ্রচ্ছটা প্রতিফলিত
হয়ে ধীরগতিতে মেলায় বাতাসের হাতে
সারারাত তোমার শ্বাস-প্রশ্বাস
গোলাপের পাতায় পোকার মতো কাঁপছে।
আমি জেগে উঠি শোনার জন্য
দূর সমুদ্র ভেসে আসে আমার কানে।
একটি কান্না এবং আমি প্রায় পড়ে যাচ্ছিলাম
বিছানা থেকে, আমার ফুলেল নাইটগাউনটি
বেড়ালের মতো তোমার মুখ খুলে গেল, বর্গাকার জানালাটি
মিটমিটে তারাগুলোকে গ্রাস করছে, সরিয়ে দিচ্ছে
এবং এখন তুমি চেষ্টা করছো
মুঠোভর্তি নোটস দিতে,
পরিষ্কার স্বরবর্ণগুলি জেগে উঠছে বেলুনের মতো।
আবেদনকারী
তুমি কি সেই রকম ব্যক্তি আমরা যাকে চাই?
তুমি কি পরো কাচের চোখ, নকল দাঁত বা ক্র্যাচ
একটি গেলিস বা একটি হুক,
রাবারের বুক অথবা কোমরবন্ধনী
সূচিছিদ্রগুলো দেখাতে যে কিছু একটা হারিয়েছে?
না, না।
তাহলে তোমাকে আমরা একটা কিছু কীভাবে দেব?
কান্না থামাও
তোমার হাত খোলো,
শূন্য, শূন্য? এই যে এখানে একটি হাত
ভরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং ইচ্ছুক
চায়ের কাপ আনতে, মাথার ব্যথা
সারিয়ে তুলতে এবং করবে তুমি যা বলবে।
তুমি কি তাকে বিয়ে করবে?
এটা নিশ্চিত যে
এর আঙুলগুলো ঘুম পাড়িয়ে দেবে তোমার চোখগুলোকে
আর মোচন করবে দুঃখ।
আমরা লবণ থেকে গড়ে তুলি নতুন ভান্ডার।
আমি লক্ষ করেছি যে তুমি পুরোদস্তুর নগ্ন।
কেমন এ পোশাক
কালো এবং জৌলুসহীন কিন্তু ফিটফাট
একে কি তুমি করবে বিয়ে?
এটি ওয়াটারপ্রুফ, শ্যাটারপ্রুফ, প্রুফ
আগুন থেকে ছাদ ভেদ করে পড়া বোমা থেকে।
বিশ্বাস করো তারা তোমাকে কবর দেবে এর মধ্যে।
আসি তোমার মাথার প্রশ্নে, দুঃখের বিষয়, এটি শূন্য।
আসো মিষ্টি মেয়ে নিভৃত কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসো।
আচ্ছা তুমি এ নিয়ে কী ভাবছো?
একটি সাদা কাগজের নগ্নতা থেকে পারো শুরু করতে
কিন্তু বছর পঁচিশের মধ্যে সে হবে রুপা,
পঞ্চাশে সে হবে সোনা।
এক জ্যান্ত পুতুল যেদিকে তাকাবে তুমি।
এটি সেলাই করতে পারে, রাঁধতে পারে,
এটি কথা বলে, কথা বলে।
এটি কাজ করে এতে কোনোই ভুল নেই।
তোমার একটি গর্ত আছে এটি বেদনা উপশম করার উপনাহ।
তোমার একটি চোখ আছে যা একটি উপমা।
শোনো ছেলে এই হলো তোমর শেষ আশ্রয়।
তুমি কি তাকে বিয়ে করবে, করবে বিয়ে, করবে বিয়ে?