জবি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫০ পিএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৫ পিএম
ফাইল ছবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে
রেখে বাধ্যতামূলকভাবে পিকনিকের চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর
পিকনিক বা বার্ষিক বনভোজনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মানবিক
বিবেচনায় অনেক শিক্ষার্থীকে নেওয়া হয়। পরে সেই টাকার জন্য তাদের চাপ দেওয়া হয়।
এমনকি টাকার জন্য সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফি দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র
আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের
জন্য বনভোজন আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা ধরা হয়।
ওই টাকা অনেক শিক্ষার্থীরই সাধ্যের বাইরে থাকে। মানবিক বিবেচনার কথা বলে বিভাগগুলো
সেই সময় চাঁদার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ছাড় দেয়। তবে পরীক্ষার আগে টাকা আদায়ের জন্য
পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যানসহ বেশ কয়েকটি
বিভাগে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে টাকা না থাকায় আমি পিকনিকে যেতে চাইনি। এরপরও যাওয়ার পরে
পরীক্ষার সময় সেই টাকার জন্য আমার অ্যাডমিট কার্ড আটকে রাখে। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা
শুরু হলে বিভাগের স্টাফ পরীক্ষার হলে এসে সবার সামনে সেই পিকনিকের চাঁদা দাবি করে।’
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী সিফাত হোসেন বলেন, ‘পিকনিকের চাঁদার টাকা না দিলে অ্যাডমিট কার্ড দেবে না বলে জানানো হয় বিভাগ
থেকে। পরে পরীক্ষা না দিতে দেওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে আমরা টাকা পরিশোধ করে অ্যাডমিট কার্ড
নিয়ে পরীক্ষা দিই।’
শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বনভোজনে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে কি না জানতে
চাইলে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আকরাম উজ্জামান বলেন, ‘এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো শিক্ষার্থী
যেতে চাইলে যাবে, নইলে যাবে না। সবার অংশগ্রহণের জন্য আমরা বলে থাকি।’
বনভোজনে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী পিকনিকে গিয়েছিল এবং পিকনিক কমিটিতে যারা ছিল তাদের
সঙ্গে কথা বলো। আমি কিছু বলতে পারছি না।’
এই কথা বলে ফোন কেটে দেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান।
পরীক্ষার ফি পরিশোধ করার পরও বনভোজনের টাকার জন্য বিভাগগুলো অ্যাডমিট
কার্ড আটকে রাখতে পারবে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যাডমিট কার্ডের সাথে শুধুমাত্র পরীক্ষার
ফিয়ের সম্পর্ক। কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফি পরিশোধ করলেই সে অ্যাডমিট কার্ড পাবে। কোনো
জরিমানা বা বিলম্ব ফি তো সে তার সঙ্গেই দিয়ে দেয়। এর সঙ্গে অন্য কোনো ফি বা টাকার জন্য অ্যাডমিট কার্ড আটকে রাখার কোনো নিয়ম নেই। আমরা বিভাগগুলোকে অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে দিই। তারা
কী জন্য আটকে রাখবে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বা নিয়ম-নীতিমালায় বনভোজনের বাধ্যতামূলক কোনো নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এমন কোনো নিয়ম নেই।’