বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৪ পিএম
অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রবা ফটো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে ছাত্রকে অপমান করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তার বিচার দাবি করে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিয়েছেন তারা। এসময় ছাত্রলীগের প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা
গেছে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে শ্রেণীকক্ষে
এক শিক্ষার্থীকে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের
প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপ-সম্পাদক এসএম এহসান উল্লাহ ধ্রুব এ অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় এহসান
উল্লাহ ওরফে ধ্রুব ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু হলের
পুকুর পাড় থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে
অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফিল্ডট্রিপে গিয়েছিলাম।
পরে জানতে পারি, এহসান ধ্রুব তার এক সহপাঠীকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় মিথ্যা তথ্য ছাড়াচ্ছিল।
গত পরশু তিনি আমার রুমে আসেন এবং আমি তাকে সাধারণভাবে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেই। পরে জানতে
পারি এহসান যাকে নিয়ে মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে তাকে তিনি পছন্দ করতেন। তাকে নাকি প্রেমের
প্রস্তাবও দিয়েছেন। কিন্তু, রাজি না হওয়ায় এহসান ক্ষুব্ধ ছিলেন। আমি তাকে বুঝিয়েছি,
বিকেলে ফুচকা খাইয়েছি। তার মায়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে আমার। অথচ রাতে ফেসবুকের একটি পোস্টে
আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করেছেন।’
আত্মহত্যার জন্য দায়ী
করার বিষয়ে তানজীমউদ্দিন তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পাবলিক পোস্ট করেন। সেখানে তিনি
লিখেন, ‘তার (ধ্রুব) ফেসবুক স্টাটাস এবং আত্নহনন চেষ্টাটা
নিয়ে যেরকম নোংরামি শুরু হয়েছে, সেটা নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত এবং হতাশ! এমনকি কোনো এক
“রাজনৈতিক” কর্মী ‘প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায়’
এর মত ভয়ানক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছে, যা আমার জীবনের প্রতি হুমকি ছাড়া অন্য কিছু হিসেবে
বিবেচনা করতে পারি না! একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এভাবে প্রকাশ্যে কোনো শিক্ষককে
জীবন নাশের হুমকি দিতে পারে সেটা আমার ধারনার বাইরে ছিল! আমরা আসলে শিক্ষার্থীদের কী
শিক্ষা দিচ্ছি? তবে এই মুহূর্তে আমার একান্ত কামনা আমাদের শিক্ষার্থীটি পুরোপুরি সুস্থ
হয়ে উঠুক! তারপর আসল সত্যটা জানা সবার জন্য জরুরি। শিক্ষার্থীর মায়ের সাথে গতকাল সন্ধ্যায়
এবং আজকে সকালেও লম্বা সময় ধরে কথা হয়েছে। ধ্রুব এখন অনেকটা ভালো আছে।’
নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে
এহসান পোস্ট করেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম জানবেন। আমার খুব
ইচ্ছা ছিল আপনার সাথে দেখা করার। আপনার একটা ছবি তোলার। পূরণ হলো না। জীবনের সব ইচ্ছা
পূরণ হয় না। কী আর করা। কিন্তু আপনার কাছে আমি আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার দিয়ে
গেলাম।’ তিনি ওই পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘প্রিয় তানজিম স্যার, আপনার পরে আমার আর কোনো রাগ নেই। ভালো থাকবেন।’
এহসান ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘বাবা-মা, ক্ষমা করে দিও। ভেবেছিলাম দোকান ঘুরে ঘুরে দুই একটা করে কিনব। এক দোকানেই দুই পাতা বিক্রি করল। সন্দেহ হচ্ছে ঔষধে ভেজাল আছে। যদি ভেজাল না থেকে থাকে তাহলে এন্ড অব দ্যা জার্নি।’