বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩ ২৩:১৬ পিএম
রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। প্রবা ফটো
সন্ত্রাস, নির্যাতন ও দখলদারিত্বের মাধ্যমে ছাত্রলীগ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নাৎসি বাহিনীর মতো ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে’ পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা। ছাত্রলীগের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের এসব কর্মকাণ্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও তাকে আক্রমণের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ফ্রন্টের নেতারা এসব কথা বলেন।
রবিবার (৫ মার্চ) মধুর ক্যান্টিনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করেন নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ। কমিটির সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ঢাবি শাখার সভাপতি রাজীব কান্তি রায়, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি অনিক কুমার দাস।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বরাবরের মতোই শাসক শ্রেণির চক্রান্তের শিকার। সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ দেশের শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন ও দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছে। জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রতিদিনই ছাত্রলীগের দুষ্কর্মের চিত্র দেখা যায়। একথা আজ স্পষ্ট যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নাৎসি বাহিনীর মতো কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প গড়ে তুলেছে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরের মতোই দায় এড়িয়ে গেছে এবং সন্ত্রাসীদেরকে মদদ দিয়েছে। একদিকে ছাত্রলীগ র্যাগিং বিরোধী র্যালি করছে, এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছে আর ঠিক সেদিন রাতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, বদরুন্নেসা কলেজে ছাত্রলীগের হাতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।’
কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ টেনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ফুলপরী খাতুনের ওপর নির্যাতনের ঘটনার ভয়াবহতা আদিম যুগের বর্বরতাকেও হার মানায়। এরই মাঝে তারা আবার নতুন নাটক শুরু করেছে। যে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষক সমাজে ন্যায়ের কথা বলতেন, মেরুদণ্ড সোজা করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে পাশে দাঁড়াতেন, তাদের একজন ঢাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে তারা নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। তার ক্লাসে থাকা ৭২ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত বিবৃতিতেই স্পষ্ট হয়ে যায় রাজনৈতিক হীন স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ছাত্রলীগ এই ষড়যন্ত্র করছে।’
সব গণতান্ত্রিক ও বিবেকবান শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদেরকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানসহ সব গণতান্ত্রিক আওয়াজের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।