বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩ ১১:৪৩ এএম
শাবিপ্রবির টিম সাস্ট অলীক।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায়’ ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) দল ‘সাস্ট অলীক’।
তার পরের বছর নাসা থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ‘সাস্ট অলীক’ দলের সদস্যদের। কিন্তু সে বছর ভিসা জটিলতায় নাসার আমন্ত্রণে যেতে পারেননি তারা। এবার নাসা থেকে পুনরায় আমন্ত্রণ জানানো হলেও আর্থিক সংকটে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের নাসায় যাত্রা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে ‘সাস্ট অলীক’-এর সদস্য এসএম রাফি আদনান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘গতবার আমাদের ভিসা না হওয়ায় আমরা নাসার আমন্ত্রণে যেতে পারিনি। গত বছরের ২ ডিসেম্বর আবারও নাসা থেকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আগামী ১৫ এবং ১৬ মার্চ নাসার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে হবে। আমন্ত্রণে অংশ নেওয়ার জন্য আমরা ভিসার জন্য আবেদন করি এবং তা পেয়েও গেছি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ করতে না পারায় আমাদের যাওয়া এবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
জানা গেছে, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা-২০১৮-এর ‘বেস্ট ইউস অব ডেটা’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ‘সাস্ট অলীক’। এই দলের সদস্যরা হলেন– শাবিপ্রবির জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাবিক মাহদি, কাজী মইনুল ইসলাম, সাব্বির হাসান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এসএম রাফি আদনান এবং অলীক দলের মেন্টর কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে ২০২১ সালের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’র দল ‘মহাকাশ’। এ দলের সদস্যরা হলেন– শিক্ষার্থী বর্ণিতা বসাক তৃষা, শিশির কৈরী, মমিনুল হক এবং সুমিত চন্দ্র। ‘মহাকাশ’ দলের সদস্যরা নাসার আমন্ত্রণে ভিসা পেলেও অর্থ সংগ্রহ করতে না পারায় তাদেরও নাসায় যাওয়া অনিশ্চিত হয়েছে।
রাফি আদনান বলেন, ‘আমাদের বিমান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে ব্যক্তি খরচে এতো টাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের স্পন্সর করে তাহলে হয়তো দুটি টিম বাংলাদেশ থেকে নাসার আমন্ত্রণে অংশ নিতে পারবে।’
‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা-২০১৮’তে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ২০১৯ সালের ২১ জুন নাসা থেকে সাস্ট অলীকের প্রত্যেক সদস্যকে ২১-২৩ জুলাই নাসার অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পরে দূতাবাসে ভিসার আবেদন করলে দূতাবাস ভিসা প্রত্যাখ্যান করায় তারা সেই বার নাসার আমন্ত্রণে অংশ নিতে পারেননি।
অবশ্য সে সময় প্রতিযোগীরা নাসার অনুষ্ঠানে যেতে না পারলেও সেখানে আইসিটি ডিভিশন থেকে ৬ এবং বেসিস থেকে একজন গিয়েছিলেন সে অনুষ্ঠানে।
সাস্ট অলীকের দলনেতা আবু সাবিক মাহদি বলেন, ‘এবার অংশ নিতে হলে আমাদের আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে ফ্লাইট ধরতে হবে। অন্যথায় যাওয়া সম্ভব হবে না। আমাদের জন্য নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার বাংলাদেশে আঞ্চলিক আয়োজক বেসিস স্পন্সর সংগ্রহের চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কোনো স্পনসর সংগ্রহ করতে পারেনি।’
নাসার স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন ‘সাস্ট অলীক’ নাসার তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে ‘লুনার ভিআর’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছিল।
অ্যাপটির মাধ্যমে নাসার অ্যাপোলো-১১ অভিযান, মহাকাশ যানটির অবতরণ এলাকা, চাঁদ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা ও চাঁদকে একটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আবর্তন করা যায়।