মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩ ২০:৪৮ পিএম
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৩ ২১:০১ পিএম
মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। সংগৃহীত
রাজধানীর স্বনামধন্য মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন, যা তার এখতিয়ারের বাইরে। উত্তেজনার মধ্যে সেই ছুটি বাতিল করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন। এতে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এখতিয়ারবহির্ভূত ছুটি ঘোষণা করায় সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) নোটিস পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলছেন, সভাপতি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করতে পারেন না।
এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে নতুন নিয়োগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে তার পদে যোগদান করতে দিচ্ছেন না এই সভাপতি। এসব অসহযোগিতার কারণে তাকে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে ম্যানেজিং কমিটি বলছে, মো. জাকির হোসেন একজন বরখাস্তকৃত শিক্ষক। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তা ছাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষকের পদ নেই। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ থাকেন। কিন্তু মো. জাকির হোসেনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করতে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, জাকির হোসেন সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তাই তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের বাধা নেই।
২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয় মাউশি। শিক্ষকদের একটি পক্ষ তাকে সমর্থন করলেও অপর একটি পক্ষ বিরোধিতা করছে। এই বিরোধের জেরে সভাপতি দেলোয়ার হোসেন পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করেন বলে কমিটির সদস্যরা দাবি করেছেন। এ বিষয়ে সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে বন্ধ পাওয়া গেছে।
দুই পক্ষের এই বিরোধে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। তারা বলছেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ছুটিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে তারা এর আশু সমাধান দাবি করেন।
সভাপতি ছুটি ঘোষণা করলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন সেই ছুটি বাতিল করেছেন। তিনি এক নোটিসে বলেছেন, ‘বিধিবহির্ভূতভাবে ঘোষিত ছুটির নোটিসটি প্রত্যাহার করে প্রধান শিক্ষকের সংরক্ষিত তিন দিনের ছুটি থেকে শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ছুটি ঘোষণা করছি। আগামী ১২ মার্চ রবিবার থেকে যথারীতি শ্রেণি ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলবে।’
শিক্ষা বোর্ড পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন ও কমিটি অনুমোদন করলেও শিক্ষক নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য কিছুর তদারকি করে মাউশি। মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমদ উদ্ভূত পরিস্থিতি বিষয়ে বলেন, ’কমিটির কাজ হচ্ছে সরকারি কাজে সহায়তা করা। কিন্তু কমিটি তা করছে না। এই কমিটি সাবেক অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাকে এই কমিটি পুনরায় নিয়োগ দিতে চায় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।’
নেহাল আহমদ বলেন, ’আগের প্রধান শিক্ষকের (ফরহাদ হোসেন) বয়স শেষ হয়েছিল এবং তিনি অবৈধভাবে চেয়ারে ছিলেন। তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে আরেক শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিটি তাকে (জাকির হোসেন) চেয়ারে বসতে দিচ্ছেন না। এটা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।