বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৩ পিএম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৬ পিএম
আবর্জনায় ধরানো আগুনে গাছের নিচের অংশ পুড়ে গেছে। প্রবা ফটো
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়ে থাকে মতিহারের সবুজ চত্বর। আর সেই সবুজ চত্বরেই ময়লা আবর্জনার সঙ্গে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে বিশাল বিশাল সব গাছপালা। আবর্জনায় ধরানো আগুনে গাছ পোড়ার সঙ্গে তৈরি করছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। এই সঙ্গে চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হলেও প্রশাসনের নজরে আসেনি। বিতর্কিত বিষয় হওয়ায় পোস্টটাতে কেউ কমেন্টও করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের পেছনে ও আবাসিক এলাকা সংলগ্ন তৈরি করা হয়েছে আবর্জনার স্তূপ। দিনশেষে রাস্তার দুইপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ময়লা নিয়ে জড়ো করা হয়। সেগুলোকে ধ্বংস করার জন্য মাঝে মধ্যে লাগানো হয় আগুন। আর সেই আগুনেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছপালা।
রাস্তার দুইপাশে স্তূপাকারে সারি সারি করে জড়ো করে রাখা হয়েছে ময়লা। সেই ময়লার স্তূপে রয়েছে কাগজের টুকরো, প্লাস্টিকের কাগজ, পিকনিকে ব্যবহৃত ওয়ান টাইম প্লেট, ফেলে দেওয়া জামা-কাপড়, নষ্ট বৈদ্যুতিক বাল্ব, প্লাস্টিকের বিভিন্ন বোতল।
কোনো কোনো স্তূপে জ্বালানো আগুনের সঙ্গে পুড়ে গেছে বিশাল আকৃতির গাছের গোড়া, আগুনে ঝলসে গেছে গাছের পাতা ও সেই সঙ্গে তৈরি করছে বিষাক্ত ধোঁয়া।
এ আবর্জনা স্তূপের এক পাশে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বোটানিক্যাল পেস্টিসাইড রিসার্চ ফিল্ড। স্তূপের আরেক পাশে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন।
ময়লার ভাগাড় সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় বাস করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রফেসর ড. শাহরিয়ার হোসেন। তার সহধর্মিণী ও উদ্যোক্তা শামসুন্নাহার নাসরিন বলেন, ‘ময়লার ভাগাড়টি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন তার ওপর পরিবেশের ক্ষতি। যখন আবর্জনা পোড়ায় তখন আমাদের অক্সিজেনের সমস্যা হয় কারণ ধুলা আর ধোঁয়া পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত। এভাবে যাতায়াতের রাস্তার পাশে ময়লা রাখলে আর কয়েকদিন পর দুর্গন্ধে ওদিক দিয়ে যাওয়া যাবে না।’
তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘যে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় গৌরবের ৬৭ বছর, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিত চিন্তা-ভাবনার কারণে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে এই গাছগুলো। পশ্চিম পাড়ার আবাসিক এলাকা সংলগ্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে ভাগার। যদিও তৈরি করা হয়েছে বর্জ্য নিঃসরণের আধুনিক স্থাপত্য। সুন্দর এই স্থাপত্যের কাজ কি তা অস্পষ্ট। ফলে এই ভাগাড়ে পাহাড়সম ময়লা জমা হয়ে যায়। মাঝে মাঝেই সেখানে ধরানো হয় আগুন। আগুনে পুড়ছে বিশাল আকৃতির গাছগুলো, তৈরি হচ্ছে বায়ু দূষণ। এই পোস্টটি যদি একজন কর্তৃপক্ষেরও নজরে পড়ে তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে খুশি হব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা অবগত নই। আগুন লাগানোর নিয়ম বন্ধ করা হয়েছে আগেই। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ময়লাগুলো নিয়ে যাওয়ার কথা। ময়লা নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কালকেও কথা বলেছি। আর আগুন যেনো না লাগানো হয় সে ব্যাপারে খোঁজ রাখছি।’