রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১৯:২৭ পিএম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩ ২১:১৩ পিএম
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অদম্য মেধাবী চান মিঞা। প্রবা ফটো
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন রাজশাহীর বিনোদপুর-সংলগ্ন ধরমপুর এলাকার রিকশাচালক জাহিদুল ইসলামের সন্তান চান
মিঞা। তবে অর্থের অভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার
পর চান মিঞার মেডিকেলে পড়াশোনার খরচসহ সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র
এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। অদম্য মেধাবী চান মিঞা এর আগে ২০১৯ সালে ডাঁশমারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসতিতে
জিপিএ-৫ এবং ২০২১ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী কলেজ থেকে জিপিএ-৫
পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
হতদরিদ্র পরিবারের চান মিঞার মেডিকেলে পড়ার অনিশ্চয়তা নিয়ে ১৬ মার্চ
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রচারিত হয়। পরে বিষয়টি
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নজরে আসে। তাৎক্ষণিক রাসিক মেয়র তার
ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে চান মিঞার
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন।
মেয়রের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাতে চান মিঞার বাড়িতে যান টিটু। রাসিক
মেয়র ব্যক্তিগত উদ্যোগে অদম্য মেধাবী চান মিঞার মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনাসহ সকল
খরচ ব্যয় করবেন বলে জানান তিনি। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে
নগরপিতাকে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞ চান মিঞার পরিবার।
চান মিঞার পিতা জাহিদুল ইসলাম বলেন,
‘মেডিকেল কলেজে ভর্তির
জন্য লাগবে ২৫ হাজার টাকা। ভর্তির পর বইসহ আনুষঙ্গিক খরচে প্রয়োজন আরও এক লাখ টাকা। রিকশা চালিয়ে আমার পক্ষে ছেলের ভর্তির জন্য এতগুলো টাকা
জোগাড় করা কখনই সম্ভব না। ছেলে মেডিকেলে
ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর তাকে ভর্তি করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ি। এই দুঃসময়ে কাউকে
পাশে পাচ্ছিলাম না। ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের পাশে এসে
দাঁড়িয়েছেন মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আমরা মেয়র মহোদয়ের প্রতি অশেষ
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
চান মিঞার মাতা শিরিনা বেগম বলেন,
‘মেয়র মহোদয় যদি আমার
সন্তানের পাশে না এসে দাঁড়াতেন, তাহলে হয়তো ছেলেকে পড়ালেখা করানো সম্ভব হতো না।
আমরা মেয়র মহোদয়ের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি।’
চান মিঞা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা
করে আজকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। মেডিকেল চান্স পাওয়ার পর আমি ও আমার
পরিবার অনেক খুশি হই। কিন্তু ভর্তি ও পড়ালেখার খরচে অর্থসংকটে দিশেহারা হয়ে পড়ি।
আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আমার বিশ্বাস ছিল, যদি সংবাদটি মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান স্যার দেখেন, তাহলে তিনি অবশ্যই আমার জন্য কিছু করবেন।
মেয়র স্যার আমার ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমি ও আমার পরিবার
দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছি। মেয়র স্যারের প্রতি আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘একজন মেধাবী
শিক্ষার্থী শুধু অর্থের কারণে মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি হতে পারবে না, তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে, স্বাধীন দেশে এটা হতে পারে না। বিষয়টি জানার পর আমি ওই শিক্ষার্থীর
পরিবারের বিষয়ে খবর নিই এবং জানতে পারি তার পরিবার আসলেই দরিদ্র। এ কারণে আমি তাকে
সহযোগিতা করেছি। এর আগেও আমি এমন অনেক
দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাওয়ার
দায়িত্ব নিয়েছি। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। সেই সঙ্গে আমার মনে হয়, সমাজে যারাই বিত্তবান আছেন, তারা দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। এভাবেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।’