বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৫ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫৪ পিএম
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে রবিবার অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন চবি শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফেরার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার চেয়ে ক্লাস বর্জন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা ক্লাসে এসে ফিরে যান। অবস্থান কর্মসূচি থেকে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিসহ মোট পাঁচ দফা দাবি পূরণে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক জিরো পয়েন্টের রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
হামলার শিকার মেহেদী হাসান নওশেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ওপর হামলা করা হয়েছে। এতদিন হয়ে যাওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতা। জড়িতদের শাস্তির বিধানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথোপযুক্ত পদক্ষেপ দেখতে চাই।’
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুমাইয়া রেজা বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন হচ্ছে, ততক্ষণে আমরা আমাদের কর্মসূচি থেকে ফিরে আসব না। আমাদের আন্দোলন চলবে।’
হামলার পরে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফজলে রাব্বী টেকনাফ থানায় একটি মামলা করেন। তবে মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা।
এই বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা নিজেরাই মর্মাহত। শিক্ষার্থীদের সব দাবি আমরা আমলে নিয়েছি এবং তা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। জড়িতদের দ্রুত বিচারের বিষয়ে চবি প্রশাসন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিবে।’
কর্মসূচি থেকে পাঁচ দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হলো-
১. এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাহাজের স্টাফ সন্ত্রাসী বাহিনীকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
২. বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের লাইসেন্স আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে।
৩. বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজ কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা ও বানোয়াট স্টেটমেন্ট প্রত্যাহার করে লিখিত মুছলেকা দিয়া নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৪. জাহাজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জানমালের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৫.দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গাফিলতির জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জড়িতদের শাস্তি দাবিতে এর আগে ১৫ মার্চ চবি ক্যাম্পাসে ও ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
১৪ মার্চ সেন্ট মার্টিন থেকে অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর ব্যাচ ট্যুর শেষে বে-ক্রুজ জাহাজে করে টেকনাফ ফিরছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, টেকনাফ থেকে ফেরার সময় আসনে বসাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা সৃষ্টি করেন বে ক্রুজ-১ জাহাজের স্টাফরা। প্রথমে তর্কতর্কির এক পর্যায়ে দুই শিক্ষকসহ ১০ জন শিক্ষার্থীর ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করেন তারা। পরে দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছানোর পর আবার হামলা চালানো হয়। এতে দুজন শিক্ষক ও এক ছাত্রীসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে ১০ জন গুরুতর আহত হন।