বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪২ পিএম
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩ ১৬:৫৯ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সজিব আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আহত সজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের গেস্টরুমে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ ফরিদ পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
ঘটনাস্থলে থাকা একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গেস্টরুমে হলের এক সিনিয়রের অতিথির সঙ্গে জুনিয়রদের একটি ঝামেলাকে কেন্দ্র করে এদিন রাতে সজিবের কানে থাপ্পড় মারেন ফরিদ। এতে ঘটনাস্থলে তার কান ফেটে রক্ত বের হয়। সজিব কাঁন্নাকাটি করেন।
‘এ সময়ে গেস্টরুমে উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বলেন, ও নাটক করতেছে, ওরে তোল। আজকে এই গেস্টরুম থেকে ওর লাশ বের হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘কয়েকজন সজিবকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের হলে ইমরান আহত সজিবকে হল গেটে আর ১৫ থেকে ২০ মিনিট আটকে রাখেন। পরে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে এবং পরে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার শুভ জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর চিকিৎসা করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কানসহ গালের মাংসপেশিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। পরীক্ষা করে দেখা গেছে কানের পর্দা বেশি গুরুতর জখম হয় নি, তবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পরেনি।
কানের পর্দা ফেটেছে কিনা সেসম্পর্কে তিনি জানান, এটা আসলে ক্লিয়ার না। সেভাবে পর্দা ফাটেনি, তবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটাও ফাটার মতোই। আঘাতপ্রাপ্ত কান সর্বদা রেস্টে রাখতে হবে। তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেড় থেকে তিন মাস পর্যন্ত নিয়ম মেনে চলতে হবে।
ইমরান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
অপর অভিযুক্ত ফরিদ বলেন, ‘এরকম কিছু গেস্টরুমে ঘটেনি, কেউ আহত হননি। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। দশ বারোজন আমার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিলেই হবে নাকি? ওদের বক্তব্য ওরা দিছে, আমার কথা আমি বলছি।’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক এম ওবায়দূর রহমান বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এখনও আমাদের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেননি। সন্ধ্যায় আমরা হল প্রশাসন এ ব্যাপারে মিটিং ডেকেছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা জানা হবে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওই ঘটনার সময় গেস্টরুমে জাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সামিন ইয়াসির শাফিন, শাহ পরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক আল রাজি সরকার উপস্থিত ছিলেন।