প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৩ ১৮:৪৩ পিএম
আপডেট : ০৬ মে ২০২৩ ১৯:১৫ পিএম
দেশের কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার গুণগত মান প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে প্রকৌশল পেশাজীবীদের সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)।
সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশের বিদ্যমান পাঁচটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান সন্তোষজনক। এগুলো ছাড়াও আরও ৪০টি পাবলিক ও ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল ডিগ্রি দিচ্ছে। এর মধ্যে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার গুণগত মান প্রশ্নবিদ্ধ। এই মান নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবিষ্যতে প্রকৌশল শিক্ষা হুমকির মধ্যে পড়বে। দেশের উন্নয়নমূলক কাজের গুণগত মানে ধস নামবে। অতিদ্রুত প্রকৌশল শিক্ষাব্যবস্থাকে নীতিমালার আওতায় নিয়ে এসে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৬ মে) আইইবির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), পিইঞ্জ।
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (ইঞ্জিনিয়ার্স ডে) অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষে আগামী ৭ মে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আইইবির পতাকা উত্তোলন, প্রকৌশলীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণে শপথ ও উৎসব র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। ওই দিন বিকাল ৫টায় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হবে। একই দিন দেশব্যাপী আইইবির ১৮টি কেন্দ্র, ৩৪টি উপকেন্দ্র ও ১৪টি ওভারসিজ চ্যাপ্টারেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
প্রকৌশল সংস্থাসমূহের শীর্ষ পদগুলোতে প্রকৌশলীদেরই পদায়নের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থার কাজ কারিগরি বিষয়সংশ্লিষ্ট বিধায় প্রকৌশল সংস্থাসমূহের চেয়ারম্যান, কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সর্বোপরি সংস্থাসমূহের শীর্ষ পদগুলোতে প্রকৌশলীর অভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, রাজউক ও বিসিআইসির শীর্ষ পদে ইতঃপূর্বে প্রকৌশলী থাকলেও বর্তমানে অপ্রকৌশলীকে পদায়ন করা হয়েছে। তাই প্রকৌশল সংস্থা ও কোম্পানিগুলোতে সার্বিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থার শীর্ষ পদগুলোতে অপ্রকৌশলী ব্যক্তিদের স্থলে প্রকৌশলীদের পদায়ন করতে হবে।
শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু) বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ সংস্থায় কর্মরত প্রকৌশলীরা ভারপ্রাপ্ত, অতিরিক্ত দায়িত্ব, চলতি দায়িত্ব পালনে ভারাক্রান্ত। পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পদোন্নতি না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত, চলতি দায়িত্ব, অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের অনুমোদিত পদের অধিক পদে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। পক্ষান্তরে, একই পদে ২০ বছরের অধিক চাকরিকালে পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রকৌশল কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সংস্থাগুলোর কর্মক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রকৌশলীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রকৌশল সংস্থায় কর্মরত প্রকৌশলীদের ফিডার পদে চাকরির শর্ত পূর্ণ হওয়ার পর পরবর্তী ধাপের পদোন্নতি বা গ্রেড প্রদান করা হলে তারা একদিকে যেমন ন্যায্য অধিকারপ্রাপ্ত হবেন, অন্যদিকে তাদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’
বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থাকে বিসিএস ক্যাডারভুক্তকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ’এলজিইডিকে ক্যাডারভুক্ত করা, ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে ‘পানিসম্পদ প্রকৌশল ক্যাডার’ সৃষ্টি করা, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিসিএস টেলিযোগাযোগ ক্যাডারের সঙ্গে আইসিটিকে সম্পৃক্ত করে বিসিএস টেলিযোগাযোগ ক্যাডারের পরিবর্তে ‘টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি ক্যাডার’ নামে নামকরণ করা, ‘টেক্সটাইল ক্যাডার’ সৃষ্টি করা। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ‘সিনিয়র সার্ভিস পুল’ অর্থাৎ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্য থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রকৌশল উইং সৃষ্টিসহ কারিগরি জ্ঞানহীন বা প্রকৌশল কাজে চর্চাবিহীন ব্যক্তিদের পিডি হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের পিডি হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।’
আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুল হুদার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আইইবির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এসএম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল কালাম হাজারী, ইঞ্জিনিয়ার মো. রনক আহসান, ইঞ্জিনিয়ার প্রতীক কুমার ঘোষ, শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তী, ইঞ্জিনিয়ার মো. নাসির উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া, ইঞ্জিনিয়ার মেছবাহুজামান চন্দন, আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খায়রুল বাসার, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিব আহমেদ হালিম মুরাদসহ আইইবির বিভিন্ন সেন্টার, সাব-সেন্টারের নেতারা।