× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিক্ষা-গবেষণা-অবকাঠামো উন্নয়নে আলো ছড়াচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১৬:১৯ পিএম

শিক্ষা-গবেষণা-অবকাঠামো উন্নয়নে আলো ছড়াচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গল্লামারীতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ২৫ মে যোগদান করেন অধ্যক্ষ ড. মাহমুদ হোসেন। সে হিসেবে তার কর্মমেয়াদের দুই বছর পূর্তি হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৫ মে)। করোনা মহামারির এক স্থবির পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই ছিল তার সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়া গবেষণায় উদ্যম সৃষ্টি, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সচল করাও ছিল চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে গত দুই বছরে তার নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নে কেটেছে স্থবিরতা। ঘুরে দাঁড়িয়েছে খুুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ডে এখন আলো ছড়াচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রধান এ বিদ্যাপীঠ। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এপিএ মূল্যায়নে পেয়েছে আশাব্যঞ্জক মূল্যায়ন। গবেষণা তহবিলের জন্য করা হয়েছে নিজস্ব ফান্ড। প্রণয়ন করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকল্প, অভিলক্ষ্য, উদ্দেশ্য, স্লোগান এবং গবেষণা নীতি ও কৌশল।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রাজস্ব বাজেটে বরাদ্দ পেয়েছে ১৬০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ। এর আগে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে। যার সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ ছিল ১৩৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা, গবেষণা ও ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই বাজেট বরাদ্দের হার প্রত্যাশিতভাবে বাড়ছে।

উপাচার্যের পদক্ষেপে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এসেছে গতিশীলতা। বিশেষ করে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অগ্রণী অবস্থানে থেকে আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ওবিই) কারিকুলা প্রণয়ন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে একাডেমিক ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করে পাঠদান শুরু হয়েছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ডিজিটাল নথি যুগেও প্রবেশ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়টি। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গভাবে ডি-নথির আওতায় আনার চেষ্টাও চলছে। এ বিষয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারারসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। খুবির আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে পর্যায়ক্রমে পুরোপুরি অটোমেশনে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া করোনা মহামারির মধ্যে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়নের ক্ষেত্রে যুগোপযোগী একটি নীতিমালা প্রণয়ন, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনে ভর্তি কার্যক্রম, আইকিউএসির মাধ্যমে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ৫২টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধুমাত্র ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আইকিউএসির মাধ্যমে ৩১টি প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়; যাতে ২ হাজার ৭১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নিয়েছেন। গবেষকদের গবেষণা কাজের সুবিধার্থে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিকমানের ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। এছাড়া এই মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় একটি ইনোভেশন হাব তৈরির কাজও চলমান রয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলতে ৬৪ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেখানে ক্যাম্পাসের আবর্জনা দিয়েই তৈরি হবে কম্পোস্ট সার, বিক্রিও করা হবে। খুবিতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে; যা থেকে  বছরে উৎপাদিত হবে ৭৫ কিলোওয়াট গ্রিন এনার্জি, মেয়াদকালে হ্রাস পারে সাড়ে ১৬শ’ টন কার্বন নিঃসরণ। টেনসাইল মেমব্রেন স্ট্রাকচার প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে খুলনাঞ্চলের প্রথম বৃহদাকার উন্মুক্ত ছাদ।

উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহ জোগাতে গুরুত্ব দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব গবেষণা তহবিল গঠনের আহ্বান জানানোর পর তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব রিসার্চ ইনডোমেন্ট ফান্ড গঠন করেছেন। উপাচার্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ ফান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইতোমধ্যে ৫ লাখ টাকা অনুুদান করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক বছরে ৮০০টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ এবং ১১০টির বেশি গবেষণা প্রকল্প শেষ হয়েছে। একই বছরে পিএইচডি প্রোগ্রামে রেকর্ডসংখ্যক ৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন-প্রবীণ গবেষকদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে গত দুই বছরে চার কোটি টাকারও বেশি অনুদান হয়েছে। যার মধ্যে গত এক বছরে দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকা গবেষণা অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতজন শিক্ষককে ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে পাঁচ প্রজাতির উপকারি পোকার দ্রুত উৎপাদন ও বংশবিস্তার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষকরা। ক্ষেতে এসব উপকারি পোকা ফসলের ক্ষতিকর পোকা দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এতে একদিকে কৃষকের খরচ কমবে, বাড়বে ফসলের পুষ্টিগুণও।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিসীমায় নিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণায় যুক্ত করতে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অনেকগুলো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বা এমওইউ হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলের মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে বহুমুখী গবেষণার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও নেদারল্যান্ডসের ইউট্রেক্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোলাবরেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার পরিবেশ, লবণাক্ততা, মাটি ও কৃষি গবেষণায় এক কোটি ২৮ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। এ লক্ষ্যে খুবি ও ব্যাংক এশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে। ক্যান্সার নিয়ে গবেষণায় খ্যাতনামা ওষুধ কোম্পানী বিকনের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটিই দীর্ঘমেয়াদি এমওইউ।

কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে আন্তর্জাতি কমানের যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক ডিসিপ্লিনের গবেষণাগারের জন্য আরও নতুন যন্ত্রপাতির সংস্থান করা হচ্ছে। এসডব্লিউ ডিসিপ্লিনের ল্যাবে অর্ধকোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে অ্যাটোমিক অ্যাবজর্পশন স্পেকট্রোফটোমিটার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজের সুবিধার্থে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সিএসই ডিসিপ্লিনে একটি স্মার্ট ল্যাব তৈরি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় গবেষণারের জন্য এ বছর ছয় কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সংস্থান করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে একটি সেন্ট্রাল কম্পিউটিং ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। করোনাকালে গবেষণাগারে স্থাপিত আরটি-পিসিআর মেশিনে করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সেন্টারে ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়া আইসিটি সেলের মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজেশন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষক ও গরীব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও শিক্ষাব্যবস্থা সহজতর করার জন্য দ্রতু এগিয়ে চলছে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অটোমেশনের কাজ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পাশাপাশি উদ্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ইনোভেশন হাব তৈরির কাজ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের জন্য ক্রয়কৃত একটি ইউনিভার্সাল টেস্টিং মেশিন (ইউটিএম) কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে স্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিকসহ সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের গতি ত্বরান্বিত করতে সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচারের আওতায় হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যাকবোন, সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপন এবং স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সফট্ অবকাঠামো’ শীর্ষক ৪০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় সাপেক্ষ একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি ডিসিপ্লিনে ইতোমধ্যে স্মার্ট ক্লাসরুম ও ল্যাবরেটরি এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত প্রশিক্ষণ কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।

গত দুই বছরে সাতটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সিম্পোজিয়াম ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য জব ও ক্যারিয়ার ফেয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ বছর পর এবার অ্যাথলেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১টি ইভেন্টে আয়োজিত এ অ্যাথলেট এখন থেকে প্রতিবছর নিয়মিতভাবে আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন ও গ্রহণে আগামী দশ বছরের জন্য জনবলের সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করা হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই অর্গানোগ্রাম (২০২১-২২ থেকে ২০৩১-৩২) ইউজিসির চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু অবকাঠামোর নির্মাণকাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এর মধ্যে দশ তলা জয়বাংলা একাডেমিক ভবন, পাঁচ তলা আইইআর ভবন, চার তলা মেডিকেল সেন্টার, কেন্দ্রীয় গবেষণাগার, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পার্শ্ব ও ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, টিএসসি ভবন, জিমনেশিয়াম কমপ্লেক্স, আবাসিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন মেইনগেট, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হানাদার বাহিনীর টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত টিনশেড ঘরটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে সংরক্ষণে মেরামত ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে কাজ চলমান রয়েছে। উপাচার্যের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মহিলাদের নামাজ আদায়ে একটি অংশে উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নস্বরূপ প্রথমবারের মতো দুইজনকে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

২০২১ সালের গত ১০ অক্টোবর বিজ্ঞানীদের বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান লাভ করেন। খুবিতে কৃষি ও ফরেস্ট্রি প্রথম, দেশে চতুর্থ, এশিয়ায় ১৫১, বিশ্বে ৮২৫ তম স্থান লাভ করেন তিনি। একই বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের এসডিজি অর্জনে সহায়তায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পান খুবির শিক্ষার্থী ফাইরুজ বিথার আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে খুবি দেশসেরা হয়। স্টুডেন্ট প্রজেক্ট প্রতিযোগিতায় ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে খুবির অপটিমিস্ট দলের উদ্ভাবনা চ্যাম্পিয়ান হয়। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এসেছে সাফল্য। এ বছর আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দল রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ইন্টারন্যাশনাল হাইফেক্টর জার্নালে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশনায় রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান, প্রত্যেকটি স্কুলকে প্রতি বছর কমপক্ষে একটি জাতীয়/আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং ডিসিপ্লিনে কমপক্ষে একটি সেমিনার/কর্মশালা আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের জন্য একটি গ্রিনহাউস স্থাপন। জীববিজ্ঞানভিত্তিক সাতটি বিভাগের জন্য মাঠ গবেষণারে প্রয়োজনীয় জমিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী একশ বছরের চাহিদা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণ, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে স্থাপিত গবেষণা যন্ত্রপাতির আইএসও সার্টিফাইড করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কাজে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুবিধার্থে একটি ইন্টারন্যাশনাল হল তৈরি।

দুই বছর মেয়াদ পূর্তির প্রাক্কালে উপাচার্য বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার গড়ার স্বপ্ন পূরণে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টিতে নানামুখী উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।

তিনি তার গত দুই বছরে কর্মমেয়াদে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর তথা মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি  কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রচেষ্টায় ভবিষ্যতেও তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা