বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১২:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৩:১৯ পিএম
ফাইল ছবি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়ার স্ত্রী অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ সিন্ডিকেট। শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৪তম সিন্ডিকেটে অভি বড়ুয়ার নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের একজন সদস্য বলেন, আবেদনপত্রে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দেওয়া, বিজ্ঞাপনের শর্ত পূরণ না করা ও পালি বিভাগের সভাপতির আপত্তির কারণে অভি বড়ুয়ার নিয়োগের সুপারিশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
ওই সদস্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থই আমাদের স্বার্থ। অনেকে আমার কাছে এসেছে। আইন যেটা বলে আমি সেটাই বলেছি। আমি ব্যক্তি দেখিনি, চেহারা দেখিনি। এটা আমার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন।
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি পালি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপকের বিপরীতে একটি স্থায়ী প্রভাষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আবেদন করেন ৩৮ জন প্রার্থী। তবে আবেদনকারী অভি বড়ুয়া তার আবেদনপত্রে এমএ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দিলেও তা দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। তবে পরে আর ভাইবা বোর্ড বসেনি।
২০২২ সালের ২৪ আগস্ট প্রভাষক পদে অস্থায়ী নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরেকটি বিজ্ঞাপন দেয়। আবেদন জমা পড়ে ২৭টি। ৬ নভেম্বর পরিকল্পনা কমিটির সভায় ২৭টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে ২১টি আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে শর্ত পূরণ না হওয়ায় ছয়টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্তাবলি পূরণ না হওয়ায় চারজন প্রার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়। তবে দুইজন আবেদনকারী- অভি বড়ুয়া ও সুরভী বড়ুয়া তাদের আবেদনপত্রে ফলাফল সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় বিষয়টিকে জালিয়াতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তবে পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তগুলো গোপনীয় হলেও পরিকল্পনা কমিটির সদস্য সহকারী প্রক্টর তার স্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং আবেদনকারী অভি বড়ুয়া পরবর্তীতে তিনি ভুল স্বীকার করে বিধিবহির্ভূতভাবে ৬ নভেম্বর রেজিস্ট্রার বরাবর আবার আবেদন করেন। অভি বড়ুয়ার আবেদনপত্রটি গ্রহণ করে ১৮ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিটির কাছে পাঠানো হয় পুনর্বিবেচনার জন্য।
নতুন করে জমা দেওয়া আবেদনপত্রটিও ছিল অসম্পূর্ণ। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শতকরা হিসাবে প্রাপ্ত নম্বর উল্লেখ করার শর্ত থাকলেও প্রার্থী তা করেননি। তাই পরিকল্পনা কমিটি সুপারিশ না করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। তারপরও অভি বড়ুয়াকে ভাইবা বোর্ডে ডাকা হয়।
অভি বড়ুয়া তার আবেদনে ২০০৩ সালের এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করেন। তথ্যটি ছিল ভুল। ২০০৩ সালে পড়াশোনা শেষ করলেও গত ২০ বছরে তিনি কোনো একাডেমিক বা চাকরির অভিজ্ঞতা দেখাতে পারেননি। স্নাতক পরীক্ষার ফলাফল ছিল ৩.৪৩। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগে এমন ফলাফল নিয়ে শিক্ষকতার জন্য আবেদনের যোগ্যতাও রাখেন না কেউ।