প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ২২:০১ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ২২:৩৯ পিএম
ইকবাল মনোয়ার। সংগৃহীত ছবি
‘দুর্নীতি হচ্ছে, তাই বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জেরে গত বুধবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত করে’ প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সুনাম ক্ষুণ্ন’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে সিন্ডিকেট সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর নাম ইকবাল মনোয়ার। তিনি ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং যায়যায়দিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।
এদিকে ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কার করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়। প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকরা।
বৃস্পতিবার (৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সভাপতি মামুন তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, একটি অনুষ্ঠানে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। পরে তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচারে’র অভিযোগের সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশে কোনো ভুল থাকলে তা প্রতিকারের জন্য যথোপযুক্ত আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা বাঞ্চনীয় ছিল। তা না করে প্রশাসন ওই সংবাদকর্মীর পেশা জীবনে সংঘটিত ঘটনার প্রতিক্রিয়া তার শিক্ষা জীবনের উপর দেখিয়েছে, যা কোনো বিচারেই যুক্তিযুক্ত নয়।
তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (বাকৃবিসাস)। যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে প্রশাসন। সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরতেই প্রশাসন এ ধরনের ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মরত সাংবাদিকরা। বিবৃতি দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জাবিসাস)। সংগঠনের সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জল ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসাইন হিমু যৌথ বিবৃতিতে বলেন, তথ্য-প্রমাণসমেত সংবাদ প্রকাশের পরও একজন সাংবাদিককে শাস্তির মুখোমুখি করার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশও (ইরাব) এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বলেছেন, বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে দুর্নীতির পক্ষ নেওয়া উপাচার্যের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে লিখিত অভিযোগ করা হবে।