বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৯:২২ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২০:৪৬ পিএম
ছাত্রলীগের মারধরের শিকার সাংবাদিক আসিফ আল মামুন। প্রবা ফটো
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। রবিবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
ওই সাংবাদিকের নাম আসিফ আল মামুন। তিনি বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলে ৪৭ ব্যাচের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে ৪৮ এবং ৪৯ ব্যাচের গেস্টরুম চলছিল। গেস্টরুম চলাকালীন বাইরে থেকে কেউ ভিডিও করছে এমন সন্দেহে নেতাকর্মীরা একজনকে ধাওয়া করে। এ সময় তারা সন্দেহজনক ব্যক্তিকে চোর চোর বলে ধাওয়া করলে হলের শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসে। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিক আসিফ হলের মাঠে নেমে এলে তাকে মারধর করেন নেতাকর্মীরা।
মারধরের শিকার সাংবাদিক আসিফ আল মামুন বলেন, ঘটনার সময় আমি দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হলে মাঝে মধ্যে সাইকেল বা বিভিন্ন জিনিস চুরির ঘটনা ঘটে। তাই হট্টগোল শুনে কৌতূহলবশত মাঠে যাই। সেখানে যাওয়ার পর তারা আমাকে মারধর করে। মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি দুহাত দিয়ে মাথাকে সেইফ করছিলাম। মারধরের কারণে এখন হাতের আঙুল নাড়াতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, আমি এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। মারধরে অভিযুক্তরা আমার জুনিয়র ব্যাচের হবে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তারা আরও বেশি মারধর করে। মারধরের সময় আমি গেস্টরুমের আশেপাশে ছিলাম কিনা, ভিডিও করছিলাম কি না, এসব প্রশ্ন করতে থাকে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী অমর্ত্য রায় বলেন, আমি আর আসিফ ভাই বটতলা থেকে হলে ফিরে চা খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে হট্টগোলের শব্দ শুনে আসিফ ভাই নিচে নামলে তাকে উপর্যুপরি মারধর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, একটু আগেই আমি বিষয়টা জেনেছি। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
হলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সাংবাদিক আসিফ মারধরকারীদের শনাক্ত করেন। তারা হলেন- আমিনুর সুমন (বোটানি ৪৮), হৃদয় রায় (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব ৪৮), শাফায়েত হোসেন তোহা (বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি ৪৮), মোহাম্মদ নাঈম হোসেন (বোটানি ৪৮)। মারধরের সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান (ফাইন আর্টস ৪৭), উপ কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার শাকিল (ইতিহাস ৪৭), সহ-সম্পাদক রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব ৪৭), উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম নিরব (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ৪৭), কর্মী সৌরভ পাল (জিওলজিক্যাল সায়েন্সেস ৪৭), তাওহীদ (পরিসংখ্যান ৪৭), মাহীদ (প্রত্নতত্ত্ব ৪৭) এবং সীমান্তসহ আরও কয়েকজন।
অভিযোগ উঠা নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. এজহারুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি।