বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:২৮ পিএম
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:১১ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেধড়ক মারধরের খবর পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলেও অপরজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, কাওসার হাসান কায়েস ও সাব্বির হোসাইন। তারা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মারধরের পর দুজনকেই প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সাব্বিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর গুরুতর আহত কাওসার হোসেনকে ভর্তি করা হয় ধানমন্ডির পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কাওসারের মাথা, চোখে ও সাব্বিরের মাথায়, ঘাড়ে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
এ মারধরের ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির টানাপড়েন চলছে এবং ঢাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রের নেতাদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন।
‘ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ করস’ বলেই মারধর
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা কাওসার বলেন, ‘রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আমতলী গেটের সামনে দিয়ে বের হওয়ার সময় একটা মোটরসাইকেল আসে। তারা সামনে এসে বলে, ‘নেশা করেছিস নাকি’ এসব বলে গালমন্দ করতে থাকে। পরে দুই পক্ষই সরি বললে তারা সেখান থেকে চলে যায়।’
এ ঘটনার কিছু সময় পর আরও চারটি মোটরসাইকেল এসে তাদের পথ রোধ করে জানিয়ে বলেন, ‘আমরা মোটরসাইকেল থেকে নামলে আমাদের আবারও গালমন্দ করতে থাকে তারা। ‘ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ করস, তাই না?’ এই কথা বলেই আমাদের ওপর হামলা করে। এলোপাতাড়ি ঘুষি মারে। যার হাতে যা ছিল তা দিয়েই মারে। কারও হাতে বাঁশ ছিল, কারও হাতে কলম ছিল। এলোপাতাড়ি যা-তা বলে মারতে লাগল। আমার অপরাধটা কী তা আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারা মারল, বসাল, এরপর পুলিশ আসল। তখন তারা সরে গেল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাত কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের বিরোধিতার জেরে এ মারধরের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন আহত কাওসার হাসান কায়েসের। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, ঢাবি ছাত্রলীগ ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নিয়ে যে ঝামেলা চলছে, তার জন্যই এই হামলা হতে পারে।’
হামলায় জড়িতদের তাৎক্ষণিক কাউকে চিনতে পারেননি বলে জানান তিনি। তবে তাদের আবার দেখলে চিনতে পারবেন বলে জানান কাওসার।
এদিকে আহতদের দেখতে এসে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে খবর পাই। হাসপাতালে এসে দেখি এখানে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী ছুটে এসেছেন। মূলত ঢাকা মেডিকেল মোড়ে চা পান করার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত দুইজনই বেশ জখম হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে ইনান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না। এটি খতিয়ে দেখব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করব যেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পারে।’ একই সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।