প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫২ পিএম
বই হাতে শিক্ষার্থীদের উৎসব। ছবি : সংগৃহীত
নির্বাচনের কারণে এবার বই উৎসব পেছানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বলেছেন, ‘এবার বই উৎসব জানুয়ারির ১ তারিখে করবো নাকি নির্বাচনের পরে ১০-১১ তারিখে হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে স্কুলে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, এবার বই উৎসব নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। যেহেতু ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়টা আসলে কেমন থাকবে, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। সে কারণে এবার বই উৎসবটা ঠিক ১ তারিখে করবো নাকি নির্বাচনের পরে ১০-১১ তারিখ করবো, সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি। সার্বিক অবস্থাটা বিবেচনায় খুব শিগগির সেটা জানাতে পারবো।
স্কুলে ডিজিটাল ভর্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের কারণে আজকের এই লটারিটা আরও পরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করছি। আবার বার্ষিক পরীক্ষা, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নও এগিয়ে এনে দ্রুত শেষ করছি। নির্বাচনের আগের যে পরিবেশ-পরিস্থিতি সেটা অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।
নবম ও ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শুরু না হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেগুলো ছাপা শুরু হয়নি। সেগুলো ছাপানো শুরু হয়ে যাবে। বই উৎসব যখনই করি না কেন, শতভাগ শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হবে।’
এর আগে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল অনলাইন লটারীর ফলাফল উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলেমান খান, মাধ্যমকি ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে.এম হাবিবুর রহমানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, টেলিটক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এক সময় স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার নামে কোচিং বাণিজ্য চলত। ছিল ভর্তির জন্য শ্রেণি, ধর্ম, সামাজিকসহ নানা বৈষম্য । ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো ফিল্টারিং করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করত। আমরা ভর্তিকে অধিকারে রূপান্তর করার চেষ্টা করছি। সবার জন্য সমান শিক্ষা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। নির্দেশনা না মানলে যত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
অধ্যাপক নেহাল আহমদ বলেন, বিদ্যালয়ে ভর্তি শিক্ষার্থীদের অধিকার। কিন্তু ভর্তির জন্য এক সময় যুদ্ধে নামতে হতো। অনলাইনে ডিজিটাল ভর্তি শুরুর পর কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৬৫৮ সরকারি এবং ৩ হাজার ১৮৮ বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি আবেদন শুরু হয় গত ২৪ অক্টোবর। যা চলে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
সবমিলিয়ে দেশব্যাপী ৩৮৪৬ টি বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তিও লক্ষ্যে মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার ৯ টি শূন্য আসনের চাহিদা পাওয়া যায়। উক্ত শূন্য আসনের বিপরীতে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯২ আবেদন গৃহীত হয়। গৃহীত আবেদনসমূহ হতে ভর্তির লক্ষ্যে শ্রেণিভিত্তিক বণ্টন কার্যক্রমে ডিজিটাল লটারি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২১ সাল থেকে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।