× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

গুচ্ছে থাকতে ১০ দফা দাবি শিক্ষক নেতাদের

ইউছুব ওসমান, জবি

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:০৪ এএম

গুচ্ছে থাকতে ১০ দফা দাবি শিক্ষক নেতাদের

নানা নাটকীয়তার পর দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে অনুষ্ঠেয় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতেও অংশ নিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে গুচ্ছ পদ্ধতিতে না থাকা এবং একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছেন। চলতি বছর শিক্ষকরা সরাসরি বিরোধিতা না করলেও গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে থাকতে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের আপত্তি কিংবা ১০ দফা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক নেতারা।

শিক্ষক সমিতির নেতারা অভিযোগ করেছেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ ইউজিসিকে জানালেও শিক্ষকরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। নিয়মানুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলে এ নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও তা হয়নি।’ প্রসঙ্গত, এর আগে শিক্ষকরা সরাসরি একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেছেন। তবে এবার তারা কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন এবং সরাসরি বিরোধিতা না করে কৌশলগতভাবে গুচ্ছ পদ্ধতির সমালোচনা করে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন।

এ প্রসঙ্গে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মাশরিক হাসান জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ইউজিসির সভায় গুচ্ছে থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এসেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে শিক্ষক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো পক্ষকেই সেটা জানানো হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও সেটাও হয়নি। 

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। গুচ্ছে থাকার ব্যাপারে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে চাপ প্রয়োগ করা হয়নি বলেও দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক প্রতিষ্ঠানটি।

ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এবারও আগের সব বিশ্ববিদ্যালয়ই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এমনকি নতুন করে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ই স্বেচ্ছায় গুচ্ছে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ আমাদের জানায়নি যে, তারা গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকতে চায় না।’ 

এদিকে এবারও গুচ্ছ পদ্ধতি অনুসরণ করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির নেতারা গুচ্ছ পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষকদের অভিযোগ ও অবস্থান এবং ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির সংকট কাটাতে ১০ দফা দাবি পূরণ হলেই কেবল জবির এ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত হবে বলে অভিমত দিয়েছেন তারা।

শিক্ষক সমিতির ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছেÑ রাষ্ট্রপতির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আগামী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এনটিএ (NTA) গঠনের মাধ্যমে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির সব প্রক্রিয়া শেষ করে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস একই দিনে অর্থাৎ ১ জুলাই ২০২৪-এর মধ্যে শুরু করা। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত স্কোর ও মেধাক্রম প্রকাশ করা। একই সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও মাইগ্রেশনের জটিলতা দূর করা। আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষদের সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি নিরীক্ষা টিম গঠন করে ২০২০-২১, ২০২১-২২, এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আয় ও ব্যয়ের নিরীক্ষা কার্য সম্পন্ন করে অংশগ্রহণকারী সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রকাশ করতে হবে।

দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছেÑ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা দেওয়া। সব কয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা গুচ্ছ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা পূর্ণ করার স্বার্থে ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভর্তি পূর্ণ করতে হবে। ভর্তির আবেদন ফি কমিয়ে যৌক্তিক করতে হবে। শিক্ষার্থীরা কেবল ভর্তি আবেদন ফি দেবেন; বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন, মাইগ্রেশন, ভর্তি বাতিল বা অন্য কোনো কারণে অর্থ দেবেন না। গুচ্ছভুক্ত ২২টির মধ্যে আসন সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আবেদনের সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ দিতে হবে এবং পরীক্ষা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ ও এর স্বচ্ছতার জন্য সুস্পষ্ট আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেন, ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের মধ্যে থাকা চারটি বিশ্ববিদ্যালয় একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করছে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে ইউজিসি গুচ্ছ পদ্ধতি চাপিয়ে দিচ্ছে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হচ্ছে। ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এবং বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি গুচ্ছে না থেকে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করলেও ইউজিসি সেখানে কিছু করতে পারছে না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভর্তি পদ্ধতি অনুসরণের নীতিও মানা হচ্ছে না। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমে ইউজিসির বক্তব্যে এসেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের আইন সমুন্নত রেখে চলছে। গুচ্ছ পদ্ধতি তারা কারোর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে না। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে চাপ প্রয়োগ করে গুচ্ছে রাখা হচ্ছে। এটা স্ববিরোধিতা।’

এ বিষয়ে ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এবং সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর বলেন, ‘সকল বিশ্ববিদ্যালয়ই এবার গুচ্ছে অংশ নিচ্ছে। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ইউজিসি শুধু গুচ্ছ পদ্ধতি তৈরি করে দিয়েছে। সেটার আয়োজন করে শিক্ষার্থী ভর্তিসহ বাকি কাজ সম্পন্ন করছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর বাইরে ইউজিসির কিছু করার নেই।’

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মাশরিক হাসান বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতির মতো ব্যর্থ একটা পদ্ধতির কারণে অনেক অভিভাবকই হতাশ। তাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা তাদের সন্তানদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন। কারণ গুচ্ছে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে, নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হচ্ছে। গুচ্ছের সাথে তাদের যোগসাজশও আছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।’

এ বিষয়ে কথা বলতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা