প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:০৩ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের মোড় ঘোরাতেই দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, আন্দোলন দমন করতেই বঙ্গবন্ধুর নাম অপব্যবহার করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে কোনোরকম আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই প্রশাসনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান তারা। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা জানান তারা।
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে’ একটি প্রতিবাদী দেয়ালচিত্র আঁকার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে একবছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে এই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়া থানায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলা দায়ের করে। প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশটির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাসুদ ইমরান মান্নু, প্রাক্তন শিক্ষার্থী মনি জামান, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, সোহেল জাফর, পাভেল পার্থ, কল্লোল বণিক, অনিন্দ্য আরিফ, মাহি মাহফুজ, সৌমিত জয়দ্বীপ, সিনা হাসান, তন্ময় ধর, দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত, কাব্য কৃত্তিকা, অলিউর সান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘অভিযোগ গঠন থেকে বহিষ্কারাদেশ ঘোষণা পর্যন্ত সময়কালে এই দুই নেতার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো কারণ দর্শানো ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি বহিষ্কার করার মধ্যেই এক ধরনের প্রশাসনিক দুরভিসন্ধির ইঙ্গিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রাষ্ট্রের এমন কোনো আইন নেই, যা দিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, নেতারা ফৌজদারী কোনো অপরাধ করেছেন।’
তারা বলেন, ‘চলমান আন্দোলন দমন করতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন নিপীড়নমূলক সিদ্ধান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে সমকালীন বিষয় ও আন্দোলন-সংগ্রামের বক্তব্য তুলে ধরে বিভিন্ন সময়ে গ্রাফিতি আঁকার রেওয়াজ আছে। ক্যাম্পাসে কোনো গ্রাফিতি পুরোনো হয়ে গেলে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সেখানে নতুন গ্রাফিতি বা দেয়াল লিখন করা খুবই সাধারণ ঘটনা। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্র ইউনিয়ন ক্যাম্পাসে চলমান একটি যৌক্তিক ও স্পর্শকাতর আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন কলা ভবনের দেয়ালে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূলত ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ, ধর্ষকদের প্রশ্রয়দাতাদের বিচারের সম্মুখীন করার দাবিকে আড়াল করতেই বঙ্গবন্ধুর নাম অপব্যবহার করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলন দমনের হাতিয়ার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কথিত অবমাননার অভিযোগ তুলে এই অন্যায় বহিস্কার আদেশ প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার আশুলিয়া থানায় এ নিয়ে মামলা করেছে।’