বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪ ২০:১১ পিএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪ ২০:২৯ পিএম
বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার কেটে ফেলা গাছ। প্রবা ফটো
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) একটি মুক্ত মঞ্চ তৈরির জন্য পুরোনো তিনটি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৩ মার্চ) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার গাছ তিনটি কেটে ফেলা হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, বটতলার নিজস্ব সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ পুরো বটতলা এলাকা ছায়া দেয় সেখানকার গাছগুলো। শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে আড্ডা দেন, মানসিক প্রশান্তি পান। এই অবস্থায় গাছগুলো কাটার ফলে নিজস্ব সৌন্দর্য হারিয়েছে বটতলা।
নবনির্মিত মুক্ত মঞ্চের আনুমানিক ৩০ মিটার দূরত্বে দুটি অ্যাকাডেমিক ভবন রয়েছে। ভবন দুটিতে অন্তত এক ডজন ল্যাব ও ক্লাসরুম রয়েছে।
এর মধ্যে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ক্লাসরুমের কাছে মুক্ত মঞ্চ তৈরি হলে তাদের সেই পরিবেশ নষ্ট হবে। তাদের দাবি, অবিলম্বে মুক্ত মঞ্চ অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফা ইসলাম ভাবনা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন গাছগুলো আমাদের সম্পদ। এগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যদি খুব প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই গাছগুলো কাটতে হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফ মো. আল-রেজা বলেন, ‘বটতলায় প্রোগ্রাম হলে আমাদের ক্লাস-পরীক্ষায় ডিস্টার্ব হয়। তারপর যদি আবার একই এলাকায় মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের ক্লাস-পরীক্ষায় আরও ডিস্টার্ব হবে। আমাদের দাবি থাকবে, জিনিসটা যাতে অন্য জায়গায় করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ইমন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমাদের আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন আর একটি গাছেও হাত না দেয়।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে একটি কাজ দিয়েছিল। আমি ওই কাজের চাহিদা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্টরের কোনো ফাংশন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’
এস্টেট অফিসের দায়িত্বরত উপরেজিস্ট্রার শামসুজ্জামান জোহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।