বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ২২:২৪ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৮ পিএম
অভিযুক্ত নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাশফিক আল তৌহিদ। প্রবা ফটো
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ইফতারের চাঁদা ফেরত চাওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে হলের রুমে আটকে রেখে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। এর আগে বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ২০৬ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর খালেদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাশফিক আল তৌহিদ এবং তার অনুসারী মোজ্জাম্মেল হক, শাওন প্রমুখ। তৌহিদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাশফিক আল তৌহিদের নেতৃত্বে হল ছাত্রলীগের ইফতার পার্টি আয়োজনের কথা ছিল। এই আয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের কথা বলে গত রবিবার তাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলেন তৌহিদের কয়েকজন অনুসারী। গত সোমবার ওই ইফতার পার্টি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর তিনদিন পার হয়ে গেলেও ইফতারের আয়োজন করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খালেদুল ও তার রুমমেট নাফিস ফাহিম বাড়িতে চলে যাবেন বলে বুধবার দুপুরে তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইতে যান। এ সময় তাদের রুমে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ‘শিবির’ বলে মারধরের হুমকি দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে খালেদুল ইসলামকে মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা বারবার ইফতারের তারিখ পরিবর্তন করতে থাকেন। কিন্তু আমরা বাড়িতে যাব বিধায় ইফতারে থাকতে পারছি না। তাই ইফতারের সেই চাঁদা ফেরত চাইতে গেছিলাম। কিন্তু তারা চাঁদা ফেরত না দিয়ে উল্টো রুমে আটকে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা তাশফিক আল তৌহিদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তার অনুসারী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমি নিজেকে নির্দোষ দাবি করছি। ওই ছেলেকে আমি হলের ছোট ভাই হিসেবেই চিনতাম। তার সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই।’
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।’ কোনো অপরাধ করে থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছিল। এ ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে কেউ জড়িত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’