× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

অপরিকল্পিত উন্নয়ন ঘিরে বাড়ছে শঙ্কা

বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:০৫ পিএম

আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৫৮ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৯ সাল থেকে চলছে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার বিভিন্ন অবকাঠামোর নির্মাণকাজ। তবে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়া অপরিকল্পিত এসব অবকাঠামো নির্মাণ হুমকির মুখে ফেলেছে এই ক্যাম্পাসের প্রাণ-প্রকৃতি। এ ছাড়া যত্রতত্র অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণের ফলে বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে দুর্ভোগের।

প্রকল্প অফিস জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি আবাসিক হল নির্মিত হয়েছে। যার প্রতিটিতে ১ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া শেষের দিকে রয়েছে একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স, একটি প্রভোস্ট কোয়ার্টার, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কর্মকর্তা, শিক্ষক, হাউস টিউটরদের জন্য আলাদা ভবন, আন্তর্জাতিক গেস্ট হাউস কাম রিসার্চার ভবন, লাইব্রেরি, লেকচার থিয়েটার কাম এক্সামিনেশন হলের নির্মাণকাজ। 

প্রকল্পের শুরু থেকেই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে নির্মাণকাজ শুরুর দাবি করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এজন্য বেশ কয়েকবার এ নিয়ে আন্দোলনও হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল মহাপরিকল্পনা ছাড়া ভবন নির্মাণ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নানাবিধ বিশৃঙ্খলা। তবে এত দিন ধরে আন্দোলনকারীদের এ দাবি অস্বীকার করে এলেও অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

প্রায় এক বছর আগে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় শেখ রাসেল হল ও কিছুদিন আগে খুলে দেওয়া হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল। এ দুটি হলের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০ ফিটের বেশি না। দুটি হলের প্রায় দুই হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীকে একই রাস্তা শেয়ার করতে হয়। যেকোনো সময় হল দুটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে তা ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে। এ ছাড়া স্বল্প দূরত্বের জন্য এক হলের শিক্ষার্থীদের করা শব্দ আরেক হলের জন্য দুর্ভোগের সৃষ্টি করে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযোগ সড়ককে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় এসেছে।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, শেখ রাসেল হল খুলে দেওয়ার সময় নিজেদের নিরাপত্তা ও শব্দদূষণের বিষয়টি আলোচনায় এনে এ হলের সঙ্গে সংযোগ সড়কে দেয়াল নির্মাণ করেন শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। দুই হলের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের কাছে এক বছর ধরে বলা হলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। 

গত ৫ মার্চ দেয়ালে ছবি আঁকা ও দেয়াল ভাঙাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়, এতে ছয় শিক্ষার্থী আহত এবং অর্ধশতাধিক কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

একই দাবি করেছে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ নামে শিক্ষার্থীদের একটি প্ল্যাটফর্ম। গত ৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে মাস্টারপ্ল্যান-বিহীন উন্নয়নের দুর্বলতা তুলে ধরে বলা হয়, নির্মিত লাইব্রেরির একপাশের পিলার গিয়ে ঠেকেছে লেকে। বিল্ডিং টিকিয়ে রাখতে হলে হয় লেক ভরাট করতে হবে, নয়তো পুরো বিল্ডিং পুনর্নির্মাণ করতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তার মূল কারণ হলো মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ভবনগুলো তৈরি না করা। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে বলা হয় যেন তারা (প্রশাসন) ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ভবনগুলো নির্মাণ করে, কিন্তু তাতে তারা কর্ণপাত না করে নিজেদের ইচ্ছামতো ভবনগুলো নির্মাণ করেই যাচ্ছে।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আরেক অংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত লেকচার থিয়েটারে ৬৫টি ক্লাসরুমে একসঙ্গে ৬ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবেন। সেটির নির্মাণকাজও অনেকটা অগ্রসর। এখন আবার ক্লাস সংকটের দোহাই দিয়ে সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তাহলে নতুন ভবনের প্রয়োজনীয়তা কী? আর ভবন সব নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে মাস্টারপ্ল্যান দিয়ে কী হবে? 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীরা ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পর এসব বিধ্বংসী কার্যক্রম এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধের শামিল। আর ভবন নির্মাণ চালু রেখে মাস্টারপ্ল্যানের আলোচনা ভাওতাবাজি।

এ বিষয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বলেন, ‘মাস্টারপ্ল্যানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করছে। ইতোমধ্যে অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে বলে শুনেছি।’

চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এম এম ময়েজ উদ্দিনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া নতুন ভবনগুলো কেন নির্মাণ করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার, আমরা তো নতুন কোনো ভবন নির্মাণ করছি না, আগের তৈরি হওয়া ভবনগুলোর সম্প্রসারিত ভবন তৈরি করছি। এগুলোর জন্য তো আসলে মাস্টারপ্ল্যানের প্রয়োজন নেই।’ তবে চারুকলা বিভাগের নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে উপাচার্যের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা