জহির রায়হান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলা সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে লেখালেখির প্রতি ছিল তার দারুণ ঝোঁক। পত্রপত্রিকায় গল্প-কবিতা লিখতে গিয়ে একসময় যুক্ত হয়ে পড়েন সাংবাদিকতায়। সেই সঙ্গে বামপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। রাজনীতির ময়দান দাঁপিয়ে বেড়ানো সেই তরুণের ক্যামেরায় একে একে উঠে আসে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনের ঘটনাবহুল দিনের চালচিত্র। দেশের সামাজিক সংকট, রাজনৈতিক টানাপড়েনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র এখনও সেই অগ্নিগর্ভা দিনের সাক্ষী। বাংলার অকুতোভয় যোদ্ধা জহির রায়হানের অন্তর্ধানের ৫১ বছর পূর্তি হলো আজ সোমবার।
১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি দিনটি ছিল রবিবার। সকালে রফিক নামের এক অজ্ঞাত ব্যক্তির টেলিফোন আসে জহির রায়হানের কায়েতটুলির বাসায়। ডিসেম্বরে নিখোঁজ হয়েছিলেন তার বড় ভাই বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার। জহির রায়হানকে ফোনে জানানো হয়, তিনি মিরপুর গেলেই বড় ভাইয়ের সন্ধান পাবেন। বড় ভাইকে খুঁজতে গিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি।
জহির রায়হানের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৫ আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মজুপুর গ্রামে। বাবার নাম মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ও মায়ের নাম সৈয়দা সুফিয়া খাতুন। জহির রায়হানের পরিবারিক নাম জহিরুল্লাহ। ১৯৪০ সালে কলকাতা মডেল স্কুলে ভর্তির মধ্য দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি তার। সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার পর তাকে মিত্র ইন্সটিটিউটে ভর্তি করানো হয়। মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর গোপন কর্মকাণ্ডে নিজের তৎপরতা দেখান। তখন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মণি সিংহ তার নাম দেন জহির রায়হান। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্রদের মিছিলে যে ১০ জনের দলটি সর্বপ্রথম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিল, তাদের অন্যতম ছিলেন ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া জহির রায়হান।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জহির রায়হান চলে যান ভারতের কলকাতায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারাভিযান ও তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। শুরু করেন তার বিখ্যাত ‘স্টপ জেনোসাইড’ তথ্যচিত্র তৈরির কাজ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী বাঙালিদের দুঃখ-দুর্দশা, হানাদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ, ভারতে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের দিনকালসহ বহুকিছু এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা ধরেছিলেন জহির রায়হান। স্টপ জেনোসাইডের প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদসহ মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে ‘স্টপ জেনোসাইড’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.