× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ

মহিউদ্দিন মাহি

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩ ২০:১৭ পিএম

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩ ২২:৩২ পিএম

‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তার জন্য ফরাসি যুবক জ্যঁ কুয়ে ছিনতাই করেছিলেন পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি বিমান। সেই গল্প নিয়ে ‘জেকে ১৯৭১’ নামে সিনেমা নির্মাণ করেছেন ফাখরুল আরেফিন খান। গত ৩ মার্চ দেশের প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাটির গল্প নিয়ে এবার উঠেছে নকলের অভিযোগ, যা নিয়ে অমিত মল্লিক নামের এক নির্মাতা ও সংগীতশিল্পী তার ফেসবুকে চিত্রনাট্য ও কপিরাইটের সনদসহ পোস্ট করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা নিয়ে তিনিই প্রথম সিনেমার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যেটার নাম ‘পশ্চিম থেকে পূর্ব’। তার পোস্টের পর থেকেই সিনেমাটি নিয়ে সমালোচনা চলছে। 

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ফাখরুল আরেফিন খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি ফেসবুকে তার অভিযোগটি দেখেছি। সেখানে যে গল্পের কথা বলা হয়েছে তার সঙ্গে আমাদের সিনেমার গল্পের কোনো মিল নেই। পাশাপাশি আমি তাকে প্রশ্ন করতে চাই, সিনেমাটি তো আর এক দিনে নির্মাণ হয়নি। তিন বছর ধরে এর কাজ করেছি। এ সময় দেশের জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ হয়েছে। আমরা নিজেরাও সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। তখন তিনি ছিলেন কোথায়? এখন মুক্তির পর তিনি দাবি করছেন, গল্পটি তার থেকে নেওয়া। বিষয়টি দেখার পর আমার হাসি পাচ্ছে।’

এ সময় নির্মাতা আরও বলেন, ‘তার অভিযোগের বিপরীতে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। সে তার মতো করে একটি দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা জানি, গল্পটি আমাদের।’
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেবেন কি না, জানতে চাইলে ‘ভুবন মাঝি’খ্যাত নির্মাতা বলেন, ‘আমরা তার এমন দাবিকে সম্মান জানাই। তিনি যদি চান তাহলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন। আমরা কোনো আইনি ব্যবস্থা নেব না।’

এদিকে নিজের অভিযোগের বিষয়ে অমিত মল্লিক বলেন, ‘ঘটনাটি আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগের। তখন একটি বেসরকারি চ্যানেলে কর্মরত আমি। একদিন হুট করে লেখক শহীদুল ইসলাম ছুট্টু ভাই আমার কাছে গল্পটা নিয়ে আসেন। আমাদের স্বাধীনতার অনেক গল্পই তো অজানা। তার মধ্যে এই গল্প অন্যতম। গল্পটি শুনে আমি বেশ উৎসাহী হয়ে পড়ি। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিই গল্পটি নিয়ে নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন খানের সঙ্গে বসার। ছুট্টু ভাইও একমত হন। এরপর আমরা ফাখরুলের অফিসে যাই। গল্পটি দেখে তিনি আমাদের বিস্তারিত চিত্রনাট্য ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতে বলেন। এরপর আমি ই-মেইলে পুরো গল্পটা পাঠাই। চিত্রনাট্যও। মাঝে করোনার প্রভাবে সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। হুট করে একদিন শুনি তিনি আমাদের এই গল্প নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন।’

আপনাদের গল্পে ফাখরুল আরেফিন খান সিনেমা নির্মাণ করছেন এটি জানার পর চুপ ছিলেন কেন? এ প্রশ্নের জবাবে অমিত মল্লিক বলেন, ‘মোটেও চুপ ছিলাম না। তিনি শুটিং শুরু করার পরপরই ছুট্টু ভাই তার কাছে গেছেন। জানতে চেয়েছেন কেন এমনটা করছেন তিনি। গল্পটা তো তার নয়। সব শুনে ফাখরুল এমন ভাব করেছেন, মনে হয় সব স্মৃতি তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। তার কোনো কিছুই নাকি মনে নেই। আমি যে তার সঙ্গে দেখা করেছি, তাকে গল্প ও চিত্রনাট্য মেইল করেছি, কিছুই নাকি মনে নেই তার।

‘এই বিষয় নিয়ে আইনের কাছে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। যারা শিল্পীসত্তার মূল্যায়ন করে না, শিল্পে সৎ থাকতে পারে না, তাদের আইনি শাস্তি দিয়ে আপনি শোধরাতে পারবেন না। তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাওয়াও বোকামি। এই বোকামি আমি করব না। শুধু পোস্ট করে বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছি নৈতিক অবস্থান থেকে। অন্যের মেধা অনুকরণ করে যেন কেউ বাহবা না পায়। সবাই যেন সতর্ক থাকেন’- যোগ করেন অমিত মল্লিক।

‘জেকে ১৯৭১’ এর বিরুদ্ধে গল্প ‘চুরি’র অভিযোগ এনে অমিত মল্লিক তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ধরেন আপনি আপনার মেধা, শ্রম আর সময় দিয়ে খুব ভালো একটা কাজ করার প্রস্তুতি নিলেন। সেই কাজকে বাস্তবে আনতে অভিজ্ঞ কারো কাছে গেলেন পরামর্শের জন্য। উনি বললেন, মেইল করে দিতে। সময় করে দেখে পরামর্শ দেবেন। আপনি মেইল করলেন। ভাবলেন আপনার তো সরকারি কপিরাইট করা আছে, অসুবিধা কী? তারপর একদিন দেখলেন দীর্ঘ আদরে লালিত সন্তানসম সেই কাজ একটু ভিন্ন মোড়কে বাজারে প্রকাশিত। কেমন লাগবে?’

এরপর ঘটনাটির শুরুর বর্ণনা দিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘ভেবেছিলাম দীর্ঘ একটা লেখা লিখব। ২০১৫ থেকে ২০১৭, দুই বছরের পরিশ্রম আমাদের টিমের। কিচ্ছু বলতে ইচ্ছে করছে না। কাউকে ছোট করতেও ইচ্ছে করছে না। সবাই তো চেনা মানুষ। আমরা গেছিলাম অগ্রজ হিসেবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর বিষয়ে সাজেশন নিতে। ফলাফল, সিনেমা বানিয়ে রিলিজ অবধি হয়ে গেল! ওহ, যারা বোঝেননি, আমি গত ৩ মার্চ রিলিজ হওয়া জেকে ১৯৭১ সিনেমার কথা বলছি। তবে আমার বানানো নয়। আমার কষ্ট, আমার ভাবনা, আমার ব্রেইন চাইল্ড কেন এভাবে হারাতে হবে? পেছনের ইতিহাসটা জানার জন্য ছবিগুলো শুধু মন দিয়ে দেখার অনুরোধ রইল। হোক, তবু বাংলাদেশে সিনেমা হোক।’

‘জেকে ১৯৭১’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার সৌরভ শুভ্র দাশ। এ ছাড়াও আছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেতা ফ্রান্সিসকো রেমন্ড, রুশ অভিনেত্রী ডেরিয়া গভ্রুসেনকো, অভিনেতা নিকোলাই নভোমিনাস্কি, পশ্চিমবঙ্গের সব্যসাচী চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল প্রমুখ। ইতঃপূর্বে মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ঐতিহাসিক সিনেমার পুরস্কার জিতেছে ছবিটি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা