চলচ্চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৮ মার্চ বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল দুপুরে গাজীপুর আদালতে নিয়ে মাহিয়া মাহির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালতের বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে বিকাল ৫টায় এই নায়িকাকে বিশেষ বিবেচনায় জামিন দিয়েছেন আদালত। একই মামলার আসামি মাহির স্বামী রাকিব পলাতক রয়েছেন।
এদিকে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাহিকে গ্রেপ্তার করে তাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। শোবিজেও হয়েছে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনা। অনেকে কথা বলেছেন গণমাধ্যমে। অনেকে লিখেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে দিনের শেষে সবাই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মাহিয়া মাহি জামিন পেয়ে ঘরে ফেরায়।
রিয়াজ
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহসভাপতি নায়ক রিয়াজ মাহির গ্রেপ্তারের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘খবরটি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। এটি দুঃখজনক। সত্যি কথা বলতে সবাইকেই আসলে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে কথা বলার প্র্যাকটিস করা উচিত। আমি তো একজন সেলিব্রেটি, যা খুশি তা-ই জনসমক্ষে বলে দিতে পারি না। আমার কথাগুলো যেন সমাজে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে তা ভাবতে হবে। যে বিষয়ে মাহিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে আসলে শিল্পী সমিতির বলার কিছু নেই। এটা মাহির ব্যক্তিগত বিষয়। নিশ্চয়ই তিনি আইনিভাবেই এটা মোকাবিলা করবেন। আমাদের কিছু বলতে হলে সাংগঠনিকভাবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বলতে হবে। তবে বিশেষভাবে বলব, নায়িকা মাহি বর্তমানে গর্ভবতী। তার শারীরিক জটিলতার বিষয়টি যেন মাথায় রাখা হয়।’
নিপুণ
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে বসে আলোচনা করে তারপর বলতে চাই। যদি কিছু করণীয় থাকে করব। তবে বিষয়টি একেবারেই মাহির ব্যক্তিগত। তার স্বামীর পারিবারিক সূত্র ধরে একটি ঝামেলা থেকে এই জটিল অবস্থার তৈরি হয়েছে। এসব বিষয়ে সাংগঠনিক দিক থেকে আমার বা শিল্পী সমিতির আসলে কিছু বলার থাকতে পারে না। তবে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে চাই মাহি যেন সুবিচার পান। তিনি গর্ভবতী। তার প্রতি যেন সে বিবেচনা করেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে আমার মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না মাহির স্বামী কেন দেশে এলেন না! তিনি কেন গর্ভবতী স্ত্রীকে এভাবে একটি জটিল পরিস্থিতিতে একা দেশে পাঠালেন।’
জয়া আহসান
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান মাহির গ্রেপ্তারের বিষয়ে ফেসবুকে লিখেছেন। তিনি লেখেন, ‘অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্রই খবরে পড়লাম, পুলিশ তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করলেও আদালত তা মঞ্জুর করেননি। মাহি জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু দেশের সব নাগরিকের মতো তিনিও আইনের অধীন। তবে এ কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, তিনি এখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার অভিযোগের তদন্ত চলুক, কিন্তু একজন গর্ভধারিণী মায়ের এবং তার সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। রিমান্ড মঞ্জুর না করার জন্য বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশের কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করব, মা আর অনাগত সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে সংবেদনশীল থাকবেন।’
আশফাক নিপুণ
নির্মাতা আশফাক নিপুণ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তারে তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে এই আইন বাতিল করতে হবে।’
মেহের আফরোজ শাওন
অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন তার ফেসবুকে লেখেন, “মাহিয়া মাহিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমার পরিচালিত প্রথম ছবি ‘কৃষ্ণপক্ষ-তে কাজ করার সময় প্রায় ১ মাস দিনরাত একসঙ্গে থেকেছি। শুটিং স্পটে দীর্ঘ সময় একসঙ্গে থাকলে মানুষের দোষ-গুণ মোটামুটি ৯০ ভাগ জানা হয়ে যায়। সেই জানা থেকে বলছি, মাহি একজন লক্ষ্মী মেয়ে, ভালো মানুষ। আমি কখনও তাকে সহকর্মীদের নিয়ে রসালো আলাপ কিংবা বদনাম করতে দেখিনি। বরং শুটিং স্পটের সব শ্রেণির কলাকুশলীদের সঙ্গে যথাযথ সম্মান দিয়েই কথা বলতে দেখেছি। আজ শুনলাম মাহি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়েছে। এয়ারপোর্ট থেকে তার গ্রেপ্তারের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ঘোরাঘুরি করছে! আর সেই ছবির নিচে মন্তব্যকারীদের রুচির স্তর সম্পর্কে তো বলে শেষ করা যাবে না! (যদিও সেলিব্রিটিদের ছবিতে কুৎসিত মন্তব্য, মিথ্যা অপবাদ কিংবা অসম্মানের হুমকির জন্য কোনো নিরাপত্তা আইন নেই!)
মাহিয়া মাহি যদি আইনের দৃষ্টিতে কোনো অন্যায় করে থাকেন, অবশ্যই তার তদন্ত চলুক। তবে একজন ৯ মাসের গর্ভবতী মা-কে কারাগারে প্রেরণ কিংবা তার জন্য রিমান্ডের আবেদন কোনোভাবেই কাম্য নয়। আইন রক্ষাকারী এবং প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছে অন্তঃসত্ত্বা মাহি ও তার অনাগত সন্তানের প্রতি ন্যায়সংগত ও সংবেদনশীল আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি।”
পরীমনি
চিত্রনায়িকা পরীমনি তার ফেসবুক থেকে লেখেন, ‘এইটা কোনো কথা না ভাই। চুপ করে থাকতে থাকতে কখন যে বোবা হয়ে যাব আমরা। দেখছেন মাহির দিকে। বুক কাঁপল না আপনাদের! একজন অন্তঃসত্ত্বার এই শারীরিক ও মানসিক ধকলের দায়ভার কে নিচ্ছে তাহলে! আইনের এই খেলা বন্ধ হোক।’
তমা মির্জা
চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ফেসবুকে লেখেন, ‘মাহিয়া মাহি এত বড় অপরাধ করে ফেলেছে যে, নয় মাসের গর্ভবতী এক নারীকে এত আয়োজন করে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলো! এটা দেখে কষ্ট পেয়েছি।’
আরও পড়ুন: সিয়ামের প্রিয় সহশিল্পীরা
শিহাব শাহীন
দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা শিহাব শাহীন। নায়িকা মাহিকে নিয়ে ‘মরীচিকা’ নির্মাণ করে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। এ নির্মাতা মাহি গ্রেপ্তার হওয়ায় নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আরাভ খান থেকে দৃষ্টি সরে যাবে সবার। মাহিকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাই।’
রেদওয়ান রনি
আরেক নির্মাতা রেদওয়ান রনি। তিনিও ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’
অধরা খান
চিত্রনায়িকা অধরা খান মাহির জামিনে স্বস্তি প্রকাশ করে লেখেন, ‘মাহি জামিন পেয়েছেন। তার সুস্থতা ও মজবুত মানসিকতার জন্য প্রার্থনা।’
এ ছাড়া মাহিয়া মাহিকে নিয়ে লিখেছেন শাহ হুমায়রা সুবাহ, রাজ রিপা, নায়ক সাইফ খান, আদনান আজাদসহ শোবিজের নানা মাধ্যমের আরও অনেক তারকা।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.