মহিউদ্দিন মাহি
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫৭ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৯ পিএম
বিশ্বজুড়ে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে, তখন বাংলাদেশের দর্শকরাও ক্রমেই ওয়েবে ঝুঁকছেন। দেশি বিদেশি নির্মাতাদের নানা কনটেন্ট তারা উপভোগ করছেন। দেশে যাত্রা করেছে বেশ কিছু ওটিটিও। সেগুলো ভালোই বিনোদন জুগিয়ে যাচ্ছে দর্শককে। তরুণ নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী ‘তাকদীর’ ও ‘কারাগার’ দিয়ে বাংলা ভাষার দর্শক মাতিয়েছেন। তার কাজের প্রশংসা ছড়িয়েছে বলিউডেও। এমনি সময়ে দারুণ এক উদ্যোগ নিয়ে আসছেন তিনি। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফিল্ম সিন্ডিকেটের ব্যানারে আসতে চলেছে ১০ জন নির্মাতার ১২টি নির্মাণ।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিল্ম সিন্ডিকেটের যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালে। ওয়েব সিরিজ ‘তাকদীর’ প্রযোজনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে পা রাখে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর গেল দুই বছরে এই প্রোডাকশন থেকে প্রযোজিত হয় ‘ঊনলৌকিক’, ‘কাইজার’ ও ‘কারাগার’- এর মতো জনপ্রিয় সব ওয়েব সিরিজ। এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ছয় নির্মাতা। যাদের মধ্যে আছেন নির্মাতা তানিম নূর, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সালেহ সোবহান অনিম ও সৈয়দ আহমেদ শাওকীরা।
এবার এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৮ মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে ১২টি ওয়েব সিরিজ, ফিল্ম ও প্রেক্ষাগৃহের জন্য সিনেমা দর্শকদের উপহার দিতে যাচ্ছেন ১০ জন নির্মাতা। ফিল্ম সিন্ডিকেটের এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশের কথা হয় নির্মাতা ও ফিল্ম সিন্ডিকেটের প্রযোজক আহমেদ শাওকীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত ছয় মাস আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। যেখানে দর্শকদের দীর্ঘ সময় ধরে এন্টারটেইন করার প্ল্যান রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা আগামী দুই বছরের মধ্যে ১০ জন নির্মাতাকে নিয়ে মোট ১২টি প্রজেক্ট উন্মুক্ত করতে চাই। সেখানে ওয়েব সিরিজ, ওয়েব ফিল্ম ও হলে মুক্তি দেওয়ার জন্য সিনেমাও রয়েছে।’
সবরকম প্ল্যাটফর্মের জন্য আমরা নির্মাণের দীর্ঘ পরিকল্পনা করেছি। এতে ১০ জন নির্মাতার মধ্যে থাকবে তানিম নূর, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সালেহ সোবহান অনিম, ভিকি জাহেদ ও রবিউল আলম রবি। শাওকী নিজেও নির্মাণ করবেন। এ ছাড়া আরও বেশ কজন নির্মাতা থাকবেন নতুন। যারা নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করে এই প্রকল্পগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন।
এ সময় ফিল্ম সিন্ডিকেটের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই যেহেতু কাজের লোক কিছুদিন পরই সবাই কিন্তু জানতে চায় আমাদের কী কী কাজ সামনে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আর কী কী কাজ নিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। তাই আমরা আলাদা আলাদাভাবে কাজের খবর প্রকাশ না করে দুই বছরের কাজের রোডম্যাপ দর্শকদের উপহার দিতে চাই। তারা যেন আগেই জানতে পারেন যে গত দুই বছরের মধ্যে আমাদের ফিল্ম সিন্ডিকেট থেকে এই নির্মাণগুলো আসতে যাচ্ছে।’
এ সময় তাদের এখানে কাজের ধরন কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রডাকশন সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে চাইলে যে কেউ যুক্ত হতে পারবেন। আমাদের স্লোগান হচ্ছে ‘এ কল টু পার্টনার্শিপ’। যার মানে হচ্ছে সবাই মিলেই আমরা এক হয়ে কাজ করব। সেই প্রেক্ষিতে যোগ্যতা অনুযায়ী যে কেউ চাইলে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। যেকোনো সেক্টরে। কারণ আমাদের কোম্পানি দেখে যে আমরাই প্রডিউস করব, ইনভেস্ট করব বা পরিচালনা করব সেটা নয়। এখানে সবাই স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। এটা কাজের একটি ওপেন মার্কেট হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া আমাদের ফিল্ম সিন্ডিকেট হচ্ছে বন্ধুত্বের বন্ধন। এটা আমরা সব সময় প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
এ সময় ফিল্ম সিন্ডিকেটের নির্মাণগুলোতে কারা অভিনয় করবেন জানতে চাইলে শাওকী বলেন, ‘অভিনয়ের বিষয়টি নিয়ে এখনও আমরা চিন্তা করিনি। আমাদের কাজ চলছে গল্প গোছানোর। গল্প নিয়েই গবেষণা চলছে। এদিকের কাজ সব শেষ হলে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।’
কবে নাগাদ ১২টি প্রজেক্টের কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে শাওকী বলেন, ‘একটু সময় নিয়ে গুছিয়ে কাজগুলো হবে। সেক্ষেত্রে প্রথম কাজটি আমরা রোজার ঈদের পর শুরু করতে পারব বলে আশাবাদী।’
ফিল্ম সিন্ডিকেটের এমন উদ্যোগ দেশের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত নির্মাতাদের পাশাপাশি নতুন নির্মাতাদের জন্য এটি একটি চমৎকার উপযোগী এবং পেশাদার প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।