মহিউদ্দিন মাহি
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৩:১৫ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
দর্শক জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে একের পর এক নাটক নির্মাণ করে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। শুরু থেকেই কমেডি ধাঁচের গল্প দিয়ে দর্শক মাতিয়েছেন তিনি। অ্যাডাল্ট সংলাপের জন্য সমালোচনাও হয়েছে তাকে নিয়ে। তবুও ইউটিউবে তার নির্মাণে নাটক মানেই কোটি কোটি ভিউ। জনপ্রিয়তার সেই শক্তিতে তিনি নাটকের বাজেট নিয়ে রেকর্ড করেছেন। আকাশছোঁয়া বাজেট দিয়েও তাকে চান প্রযোজকরা। তিনি আর কেউ নন, কাজল আরেফিন অমি। ‘ব্যাচেলর’ সংক্রান্ত নানা গল্পে নাটক নির্মাণ করে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। উপহার দিয়েছেন কিছু দর্শকপ্রিয় চরিত্রও। আসন্ন রোজার ঈদকে সামনে রেখে অমির পরিকল্পনা ও ব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার সঙ্গে। লিখেছেন মহিউদ্দিন মাহি....
আসন্ন রোজার ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা কেমন?
প্রতিবার রোজার ঈদেই আমার বেশকিছু নাটক থাকে। যা নিয়ে রোজার আগে থেকেই শুরু হয় ব্যস্ততা। এবারের রোজার ঈদে আমার মাত্র একটি নাটক আসবে। শুটিং ইতোমধ্যে শেষ করেছি। নাটকের নাম ‘বিদেশ’। এডিটিং ও ডাবিংয়ের কাজ চলছে।
এ নাটকের গল্প সম্পর্কে একটু জানতে চাই...
এ নাটকটির গল্প আমাদের দেশের কিছু স্বপ্নবাজ মানুষের জীবনের। যারা অবৈধভাবে ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যায় ভাগ্য বদলাবে বলে। অনেকে জীবন বাজি রেখে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলেও, অনেকের জীবন আবার ভেসে যায় গভীর সমুদ্রে। সেসব ঘটনা বিভিন্ন সময় আমরা গণমাধ্যমে দেখতে পাই। মর্মান্তিক সেই গল্পগুলো নিয়েই এবারের নাটক ‘বিদেশ’। ঈদের আনন্দের মাঝে এবার বিষাদের নির্মাণ নিয়ে হাজির হব।
আপনি তো কমেডি গল্পেই নাটক নির্মাণ করেন। হঠাৎ ঈদ আনন্দে বিষাদের নাটক কেন?
আসলে এই গল্পটি প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখেই নির্মাণ করেছি। প্রিয়জনদের জন্য তাদের জীবন-মরণ সিদ্ধান্ত কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা ফুটে উঠবে নাটকে। পরিবারের স্বপ্নপূরণে ইউরোপের বড় বড় দেশে যাওয়ার জন্য অনেকে ছোট একটি বোটে করে বিশাল সমুদ্র পারি দেন। কেউ যেতে পারেন, কেউ সমুদ্রেই বিলীন হয়ে যান। তারা জানেন, জীবন কত কঠিন। আমরা তো বিদেশ যাওয়া প্রিয়জনের উপার্জিত অর্থ দিয়ে দেশে ঈদের জামা কিনছি, আনন্দ করছি। কিন্তু এই আনন্দটুকুর জন্য তারা যে কতবার জীবন বাজি রাখেন, সেটা কি আমরা জানি? সেইসব রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের কথা তুলে ধরতেই আমাদের এই আয়োজন।
এই নাটকের শুটিং কোথায় করেছেন, নাটকে কারা কারা অভিনয় করেছে?
নাটকের শুটিং বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী সন্দ্বীপ এলাকায় হয়েছে। টানা সাতদিন শুটিং করেছি আমরা। নানা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হয়। হুটহাট বৃষ্টি ও হঠাৎ নদীর ঢেউ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মাঝে মধ্যেই শুটিং বন্ধ করে তীরে চলে আসতে হতো। অনেক সময় ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যেত। তবে গোটা টিমের প্রচেষ্টায় কাজটি আমরা আল্লাহর রহমতে ঠিক টাইমে শুরু করতে পেরেছিলাম। এই নাটকে আমার পুরোনো আর্টিস্টরাই অভিনয় করেছেন। তারা হলেন মিশু সাব্বির, পলাশ, শরাফ আহমেদ জীবন, শিমুল, পাভেল, শিবলু, আবদুল্লাহ রানা, জিসান, পারসা ইভানা, লামিমা।
ঈদে কি তবে এই একটি নাটকই থাকছে আপনার?
আমার আরও একটি প্রজেক্ট আসছে রোজার ঈদে। নাম ‘ হোটেল রিলাক্স’। এটি দেশের ডিজিটাল একটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে। এই সিরিজের শুটিং শেষ হলেও এখনও অনেক কাজ বাকি। তাই এখানে সময় দিতে হচ্ছে। কোনো কাজে এখন আর হাত দিতে পারছি না। একটা নতুন সিরিজ নিয়ে কথা হচ্ছে। কিন্তু বসা হচ্ছে না। রোজার ঈদের ঝামেলা কাটুক, তারপর এইটা শুরু করব।
টিভি থেকে ইউটিউব, এখন ওটিটিতে কাজ করলেন। চ্যালেঞ্জটা কেমন?
অনেক চ্যালেঞ্জিং। নতুন প্ল্যাটফর্ম। রেসপন্সটা নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। কেমন অভিজ্ঞতা হয় সেটাই ভাবছি। প্ল্যাটফর্মটি আমাদের দেশে নতুন হলেও বিশ্বজুড়ে এই মার্কেট অনেক আগে থেকেই সচল। যেহেতু এটি একটি ওপেন মার্কেট, তাই এখানে প্রতিযোগিতাটিও বেশি। সেই প্রতিযোগিতায় আপনাকে কাজ দিয়েই টিকে থাকতে হবে। কারণ পুরোটাই দর্শকদের হাতে। আপনি ভালো করলে থাকবেন। আর ভালো না করলে বিদায়।
নাটক-ওয়েব সিরিজ তো করে ফেললেন, সিনেমায় কবে দেখতে পাব?
আমার আশা ছিল এ বছরের শুরুতেই সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেব। প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। তবে কাজের কারণে সিনেমার গল্পে এখনও হাত দিতে পারিনি। আশা আছে এ বছরই সিনেমার কাজ শুরু করব।
সিনেমাতেও কি কমেডি গল্পই হবে?
অবশ্যই। কমেডি গল্পই সবার আগে প্রাধান্য পাবে। আমি এই আমেজে অভ্যস্ত ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তাই আমার প্রথম সিনেমার গল্প অবশ্যই কমেডি ধাঁচের হবে।
আপনার গল্প এবং নির্মাণে সব সময় একই ধরনের আর্টিস্ট লক্ষ্য করা যায়। গল্পও প্রায় একই ধরনের। এর কারণ কী?
যদি সঞ্জয় লীলা বানসালিকে বলা হয় রোহিত শেঠির মতো সিনেমা বানাতে আর রোহিত শেঠিকে বলা হয় বানসালির মতো সিনেমা বানাতে তাহলে কী দুজনের নির্মাণের আসল খেলাটা প্রকাশ পাবে? এর কারণ হচ্ছে দুজনের ধরন আলাদা। দুজনের চিন্তা আলাদা। এখন যে কমেডি করছে, সেই আবার ড্রামা বানাচ্ছে, সেই আবার ক্রাইম থ্রিলার বানাচ্ছে। তাহলে তার আসল যোগ্যতাটা কখনই ফুটে উঠবে বলে আমি মনে করি না। সে কারণেই আমি কমেডি নিয়েই থাকতে চাই। সব কিছু নিয়ে ভাবতে চাই না। কমেডিতেও এক্সপেরিমেন্ট করার অনেক জায়গা আছে। ভবিষ্যতে সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। আর যে শিল্পীদের সঙ্গে আমি কাজ করি, সেটা হয় একটা টিম বন্ডিংয়ের জায়গা থেকে।