লিমন আহমেদ
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩ ১৩:০৩ পিএম
দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। চলতি বছরে চাকরি নিয়েছেন ‘হ্যালো সুপারস্টারস অ্যাপ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। এর কান্ট্রি হেড হিসেবে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সেই অ্যাপ থেকে শুরু হচ্ছে সংগীত প্রতিভা অন্বেষণের প্রতিযোগিতা। সম্প্রতি এ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে অনুষ্ঠিত হলো সংবাদ সম্মেলন। তাতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাপটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনায়েত করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুকিত টুংকু, হেড অব প্রোগ্রাম নবীন হোসেন, সমন্বয়ক রেজওয়ান, আইটি হেড রোয়ান কুমারা, কণ্ঠশিল্পী শুভ্রদেব, মালয়েশিয়ার ল্যাংকাউ কেদাহ রাজ্যের রানী হাজা নুর সুজানা আবদুল্লাহ প্রমুখ। সেখানেই প্রতিদিনের বাংলাদেশের মুখোমুখি হলেন আসিফ আকবর। লিখেছেন লিমন আহমেদ...
অনেক দিন কোনো আলোচনায় নেই। বেশ চুপচাপ আপনি। কেন?
একটু গুটিয়ে আছি। মনে রাখবেন, বাঘ তখনই দুই পা পিছিয়ে যায় যখন সে একটা মজবুত থাবা বসাবে বলে পরিকল্পনা করে। আমিও চুপ আছি সামনে বড় পরিসরে কিছু করব বলেই। অপেক্ষা করুন। ২০২৩-কে আমি নিজের কামব্যাকের বছর হিসেবে দেখছি। নিজের ওপর কনফিডেন্সটা এখনও হারাইনি। ৫২ বছর বয়সে কামব্যাকের উদাহরণ হতে চাই। দেশের বাইরে সেটেল হওয়ার অনেক সুযোগ ছিল। সে চিন্তাকে কখনও প্রশ্রয় দিইনি। দেশেই আছি, দেশেরই আছি, দেশেরই থাকব।
একজন স্বাধীনচেতা মানুষ হিসেবেও সুপরিচিত। হঠাৎ এই বয়সে চাকরি করার ইচ্ছাটা কেন হলো?
চাকরিটা করছি কারণ এর অফার এবং ধরন দুটোই আমার পছন্দ হয়েছে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আরও একটি নতুন পালক যুক্ত করতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে। আমি বেশ আনন্দ নিয়েই কাজে যোগদান করেছি। কাজ করে যাচ্ছি। ভার্সেটিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. কামরুল আহসান ভাই দারুণ একটি উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলা ভাষার মানুষের জন্য। যার পথ ধরে হ্যালো সুপারস্টার অ্যাপ যাত্রা করেছে। এখান থেকে বাংলাদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ প্রবাসীসহ সারা বিশ্বের মোট ৩০ কোটি বাঙালি উপকৃত হবেন। আমি এর কান্ট্রি হেড হিসেবে আছি। এ চাকরি করার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এর মাধ্যমে দেশের জন্য, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক কিছু করার সুযোগ আমার আছে।
কোন অঞ্চলগুলোয় কাজ করবে অ্যাপটি?
ইতোমধ্যে এ অ্যাপের কার্যক্রম যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় শুরু হয়েছে। এবার শুরু হলো বাংলাদেশে। ধীরে ধীরে আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলেই এটি তার কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।
হ্যালো সুপারস্টারস অ্যাপ থেকে মূলত কী ধরনের সেবা দেওয়া হবে?
মূলত যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। যেখানে বিভিন্ন অঙ্গনের তারকা যুক্ত থাকবেন। আর তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন ভক্তরা। এখানে থাকছে লাইভচ্যাট, লার্নিং সেশন, প্রশ্নোত্তর পর্ব, এক্সক্লুসিভ পেইড কনটেন্ট, ফ্যান গ্রুপ, মিট আপ ইভেন্ট, গ্রিটিংস এবং ই-শোকেস। এর পাশাপাশি প্রতিভা অন্বেষণের কাজ চালিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে সংগীত ছাড়াও থাকছে অভিনয়, খেলাধুলা ইত্যাদি। আমাদের দেশের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবাসে আছেন। তারাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কেননা তারা দেশি বিনোদনের সুযোগ খুব একটা পান না। তাদের জন্যই আমরা অ্যাপটি গড়ে তুলছি। এখানে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের তারকা থাকবেন। তাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে কথা বলতে পারবেন ভক্তরা। আর এ অর্থ চুক্তি অনুযায়ী শিল্পী-তারকাদের কাছে যাবে; যা তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় কাজে লাগবে।
হ্যালো সুপারস্টারস থেকে সংগীতের প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই...
শুরুতে অ্যাপটি ডাউনলোড করে এখানে নিবন্ধন করতে হবে। আসছে ১ জুলাই এ আয়োজনের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। তারপর বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছাতে আটটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এসব ধাপের প্রতি পর্বে বিচারক হিসেবে থাকবেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালকরা। ‘সবাই এবার গাইবে গান, কে হবে সুপারস্টার, হও আগুয়ান’ এ স্লোগানে শুরু হবে প্রতিযোগিতার ই-অডিশন। সেখান থেকে বাছাইকৃত সেরা ১০ জনকে নিয়ে আগামী বছরের ২৬ মার্চ হবে চূড়ান্ত পর্ব। সে পর্বে বিচারক হিসেবে থাকবেন রুনা লায়লা, কুমার শানু, বিনোদ রাঠোর ও আমি। এত বড় আয়োজনে আমি বিচারক হওয়ার মতো কেউ নই। কিন্তু দায়িত্বের জায়গা থেকে থাকতেই হচ্ছে। প্রতিযোগীরা খালি গলায় গাওয়া যেকোনো ধরনের গানের ৪০ সেকেন্ডের ভিডিও আপলোড করে অংশ নিতে পারবেন। এ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন পাবেন ৫০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার। প্রথম রানারআপ ১০ লাখ এবং দ্বিতীয় রানারআপ পাবেন ৫ লাখ টাকা। সেরা দশের বাকি সাত প্রতিযোগীর প্রত্যেকে পাবেন ২ লাখ টাকা। অর্থমূল্য ছাড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন পাবেন দেশবিদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর সঙ্গে দ্বৈত গান গাওয়ার সুযোগও।
এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ন্যূনতম বয়স কত হতে হবে?
এখানে কোনো বয়সসীমা নেই। এ প্রতিযোগিতায় দেশ ও বিদেশে থাকা যেকোনো বাংলাদেশি অংশ নিতে পারবেন। এতে অংশ নেওয়ার জন্য কোনো টাকার প্রয়োজন পড়বে না। আমরা সেবার মাধ্যমে সবার কাছে বিনোদন পৌঁছে দিতে চাই। একটি পাখিও বিনোদনের বাইরে থাকবে না।
আপনি গানের মানুষ। সব সময় গান করে বেড়ান। এ ধরনের বিনোদন বা যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত হলেন কেন?
আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আগেও বলেছি, এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতাও আমার জন্য। আর এখানে গান নিয়েও করার অনেক কিছু আছে। আমি নিজে গানের মানুষ তাই গানের প্রতিযোগিতাই শুরু করেছি। আশা করছি প্রচুর সাড়া পাব।
নতুন গানের কোনো খবর...
কিছু গান করেছি। সেগুলো শিগগিরই প্রকাশ হবে। ‘ রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ নামের একটি সিনেমায়ও গান করেছি। গানটি ভালো লাগবে শ্রোতাদের। বিশেষ করে প্রবাসীদের খুবই ভালো লাগবে বলে আশা করছি।