× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গানে গানে আসিফের ২৫ বছর

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৩ ১২:৪৩ পিএম

গানে গানে আসিফের ২৫ বছর

২০০১ সালে সাউন্ডটেকের ব্যানারে ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ বাজারে আসে। সেই সময় অ্যালবামটির ৬০ লাখ কপি বিক্রি হয় এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী অডিও অ্যালবাম হয়ে ওঠে। অ্যালবামটিতে মোট ১২টি গান আছে। যার প্রতিটি গানের কথা ও সুর করেছেন ইথুন বাবু। আর এই অ্যালবামের গায়ক আসিফ আকবর। দিনে দিনে যিনি হয়ে উঠেছেন বাংলা গানের অনেক বড় ব্রান্ড। অনেকে ভালোবেসে তাকে যুবরাজ নামে সম্মানিত করে থাকেন।

আসিফ আকবরের ক্যারিয়ার মূলত ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবামটি দিয়েই শুরু বলে মনে করা হয়। তবে গায়ক গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আরও অনেক আগে থেকেই। পেশাদারত্বের হিসেবে আসিফের গান গাওয়ার ২৫ বছর পূর্ণ হলো এবার। ১৯৯৮ সালের ৭ জুলাই প্রথম তিনি কোনো গানের রেকর্ডে অংশ নেন। সেটি ছিল সিনেমার গান। যার গীতিকার মনিরুজ্জামান মনি। শওকত আলী ইমনের সুর ও সংগীতে আলম আরা মিনুর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে আসিফ আকবর সেদিন গেয়েছিলেন নায়ক মান্না ও নায়িকা শাহনাজ জুটির ‘রাজা নাম্বার ওয়ান’ সিনেমার জন্য। সেই শুরু আসিফের। এর পর অপেক্ষা, আসে ২০১১ সাল। বাজারে আসে রেকর্ড সৃষ্টি করা ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ । বাকিটুকু সবার চেনা গল্প।

১৯৯৮ থেকে ২০২৩, ক্যারিয়ারের রজতজয়ন্তীতে প্রথম গানে কণ্ঠ দেওয়ার স্মৃতিচারণ করেছেন আসিফ নিজেই। তিনি ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে শওকত আলী ইমনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেখেন, “শ্রদ্ধেয় সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন ভাইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে আছি প্রায় আট মাস হয়ে গেল। ফাঁকে সিনিয়র গায়কদের গানগুলোর ডামি ভয়েস দিয়ে নিজেকে শানিয়ে নিচ্ছি। সন্ধ্যায় ওনারা এসে ভোকাল দিয়ে যান, আমারটা মুছে যায়। ইমন ভাই চাইছেন আমার সঙ্গে মাইক্রোফোনের বন্ধুত্ব হয়ে যাক। আমিও নিবিষ্টচিত্তে প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছি, তিনি আমাকে উৎসাহ দিয়েই যাচ্ছেন। ঠিক ০৬/০৭/১৯৯৮ সালে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ইমন ভাই তখন সিদ্ধেশ্বরী থাকতেন।

সকালে ওনার মিউজিক রুমে ঢুকতেই স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে বললেন আসিফ কাল তোমার প্রথম প্লে-ব্যাক, রেকর্ডিংয়ে সঙ্গে কাকে দেখতে চাও! সঙ্গে সঙ্গেই বললাম আলম আরা মিনু আপা হলে ভালো হয়। মিনু আপা শুরু থেকেই আমাকে মহা উৎসাহ দিয়ে আসছিলেন, ওনার অনেক শোতে ওয়ার্মআপ গায়ক ছিলাম আমি। আবার আমার সাউন্ড সিস্টেমও ভাড়া নিতেন তিনি। ইমন ভাই সদয় সম্মতি দিলেন। বললেন মিনু আপাকে ফোন দিয়ে বলো আগামীকাল সন্ধ্যায় সিম্ফনি স্টুডিওতে ভয়েস ডাব করা হবে। আমিও জানতাম না ওই গানটাই ছিল মিনু আপার প্রথম প্লে-ব্যাক। ছবির নাম রাজা নাম্বার ওয়ান। দেশবরেণ্য গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনির ভাইয়ের লেখা গান আমারই ভাগ্যে তোমারই নাম ছিল যে লেখা। প্রয়াত মান্না ভাইয়ের লিপে গানটি যাবে, নায়িকা ছিলেন শাহনাজ ম্যাডাম। প্রযোজক-পরিচালক মরহুম শরীফউদ্দীন খান দীপু ভাই খুব খুশি হয়ে বলেছিলেন লেগে থাকো, তোমার ভবিষ্যৎ ভালো।

ইমন ভাইয়ের হাত ধরে গানের রাজ্যে প্রবেশ আমার। সিকি শতাব্দী কেটে গেছে এর মধ্যে, কেমন যেন ঘোর লাগা অনুভূতি হচ্ছে। এখনও গেয়ে যাচ্ছি গান, পঁচিশটা বছরকে মনে হচ্ছে এই তো সেদিন! দেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার বিরল সৌভাগ্য হয়েছে, সেই ভালোবাসার রেশ এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী। নিজের অতীতের সঙ্গে বর্তমান মেলাতে গিয়ে শুধুই আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের কাছে আমার অনেক ঋণ। এখনই সেলিব্রেশন নয়, আমৃত্যু দেশের গান গেয়ে যাব মানুষের মনে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখব ইনশাআল্লাহ, দাগ রেখেই যাব। ইমন ভাই, আপনার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আর কিচ্ছু বলার নেই আমার।”

শিষ্যের এই শ্রদ্ধার প্রত্যুত্তরে ইমনের অনুভূতি, ‘তোমার লেখনী পড়ে হঠাৎ শিউরে উঠলাম। মনে হচ্ছে এই তো সেইদিনের কথা। কীভাবে এতটা পথ, এতটা সময় চলে গেল চোখের পলকে পঁচিশটা বছর! আজকের তারিখটা আমার মনেই ছিল না। সকালে উঠে তোমার স্ট্যাটাস দেখে আপ্লুত হলাম। সেই প্রথম দিনের মতো এখনও তোমার প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা রয়েছে। আমাকে গর্বিত করেছ সব সময়ই। সবচেয়ে ভালো যা লাগে তা হলো অন্যান্য অনেকেই ভুলে গেছে কিন্তু তুমি কখনোই অতীত ভুলে যাওনি। ভালোবাসা অবিরাম।’

এদিকে আসিফ আকবরের গান গাওয়ার ২৫ বছর পূর্তিতে ঘরোয়া পরিবেশে হয়েছে উদযাপনের মধুর আয়োজন। আসিফের বর্তমান কর্মস্থল হ্যালো সুপারস্টার্সে তার সহকর্মীরা এর আয়োজক। এই ভালোবাসায় মুগ্ধ আসিফ বলেন, ‘আমার কলিগরা ক্যারিয়ারের পঁচিশ বছর পূর্তিতে একটা আয়োজন করেছে ভালোবেসে। মফস্বল থেকে উঠে আসা আসিফকে দোয়া জানাতে এসেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির মুরব্বি এবং কলিগরা। কেউ কেউ আসেননি, কেউ আসতে পারেননি, কিছু প্রিয় মানুষের কাছে ম্যাসেজ যায়নি ভুলে, এ জন্য কলিগদের পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী। ফিডব্যাক লিজেন্ড মাকসুদ ভাইয়ের ভাষায় ধন্যবাদ এই বেঁচে থাকা…’

এদিন আসিফকে ভালোবাসা জানাতে হাজির হয়েছিলেন শওকত আলী ইমন, আলম আরা মিনু, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, বেলাল খান, নাজির মাহমুদ, মানাম আহমেদ, আজিজুল হাকিম, জিনাত হাকিমসহ আরও অনেকে।

আসিফ আকবর দীর্ঘ ২৫ বছরে ৩০টির মতো একক অ্যালবামে গান গেয়েছেন। প্রায় ৫০টির মতো মিশ্র অ্যালবামও প্রকাশ হয়েছে তার। আর প্লেব্যাক দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই সুপারস্টার গায়ক উপহার দিয়েছেন অনেক হিট-সুপারহিট সিনেমার গান। ২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া সামিয়া জামান পরিচালিত ‘রানীকুঠির বাকি ইতিহাস’ ছবিতে গান গেয়ে সেরা গায়ক হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। তার ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে একই নামের সিনেমা। তৎকালীন সুপারহিট জুটি রিয়াজ-শাবনূরের পাশাপাশি এতে ছিলেন শাকিব খানও। 

আসিফ তার নিজের গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে থাকেন নিয়মিতই। তবে ২০১৯ সালে পরিপূর্ণ অভিনেতা হিসেবে সাদাত হোসাইন পরিচালিত ‘গহীনের গান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চমকে দেন তিনি।

একজন লেখক হিসেবেও আসিফ আকবরের সুনাম রয়েছে। অনেক পত্রপত্রিকায় নানা বিষয়ে কলাম লিখে প্রশংসা পেয়েছেন। প্রকাশ করেছেন একটি বইও। এর নাম পোটকরা টু ম্যানহাটান। এটি ২০২০ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ হয়।

ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠা কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জন্ম কুমিল্লা জেলায় ১৯৭২ সালের ২৫ মার্চ। তার পিতার নাম আলী আকবর। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। তার স্ত্রীর নাম সালমা আসিফ মিতু। এ দম্পতির তিন সন্তান। তারা হলেন শাফকাত আসিফ রণ, শাফায়াত আসিফ রুদ্র এবং সর্বকনিষ্ঠ কন্যাসন্তান আইদাহ আসিফ রঙ্গন। বড় পুত্র রণ এরই মধ্যে বিয়ে করে কানাডায় সংসার পেতেছেন। তার স্ত্রীর নাম ইসমত শেহরীন ঈশিতা।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা