আলাপন
লিমন আহমেদ
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৪ পিএম
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কেয়া পায়েল
তারকাদের ধর্মপালন নিয়ে তাদের ভক্তদের অনেক কৌতূহল। মুসলিম তারকারাও রোজা রাখেন। রোজা নিয়ে শুটিং করেন, ব্যস্ত থাকেন নানা রকম ধর্মীয় প্রার্থনায়। আর সবার মতো তাদেরও আছে রোজা রাখার অনেক মজার স্মৃতি। তাদের ভিড়ে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কেয়া পায়েল জানালেন রোজা নিয়ে তার দর্শন ও উপলব্ধির কথা। নস্টালজিক হয়ে মজার ছলে বললেন শৈশবে রোজা রাখার অনেক গল্প। লিখেছেন- লিমন আহমেদ
প্রথম রোজা রেখেছিলেন কবে?
অনেক ছোট থাকতে। সম্ভবত নার্সারি ওয়ানে পড়ি। রোজা রাখলে ফিল করতাম বিশাল কিছু করেছি। বাড়ির লোকেরা চাইত না। লুকিয়ে লুকিয়ে রোজা রাখতাম। খুব উত্তেজনা কাজ করত, রোজা শেষ হলে ঈদ আসবে এসব ভেবে। বলা চলে যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই রোজা রাখতাম। মনে পড়ে শবেবরাতের রোজা রাখার অভ্যাসটাও অনেক ছোটবেলা থেকেই গড়ে উঠেছে।
শৈশবের সেহরি বা ইফতারের দিনগুলোর স্মৃতি মনে পড়ে?
খুব পড়ে। অনেক মিস করি সময়গুলো। শৈশবের সেহরি তো খুবই মজার ছিল। বাবা-মা বকা দিতেনÑকেন উঠেছি? রোজা রাখলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, এসব বলতেন। কারণ তখন তো রোজা ফরজ হয়নি। উঠে আরও বিরক্ত করতাম। তাই বাবা-মা চাইতেন না জাগি। কিন্তু আমি তো রোজা রাখবই। সেজন্য সেহরিতে খাবার লুকিয়ে রাখতাম। বাবা-মা ওঠার আগেই খেয়ে নিতাম। ভীষণ মজার দিন ছিল।
আর ইফতারির স্মৃতিও অনেক। ছোটবেলায় একটা বিষয় খুব মজা হতো। এখনও অনেক সময় হয় যখন বন্ধুদের সঙ্গে থাকি। ইফতারির জাস্ট দুয়েক মিনিট আগে সবাই এমন একটা কিছু করে যেন আমি ইফতার করে ফেলি। তো আমি খাওয়ার পর শুনি যে আজান হচ্ছে। এ দুষ্টুমিগুলো মনে পড়ে।
শৈশবের সঙ্গে এখনকার রোজা রাখার মধ্যে কী পার্থক্য পান?
ছোট মানুষ, রোজা রাখলে দুর্বল হয়ে যাব তাই রোজা রাখতে দিত না। আবার ক্লাসের চাপও থাকত। কেউ কেউ বলত যে রোজ দুইটা রোজা রাখা যায় দুই বেলা খেয়ে। মানে আমি যেন রোজা ভেঙে ফেলি। অনেক সময় ক্ষুধায় বড়দের কথা মেনে দুবার খেয়েই দুই রোজা রাখতাম। এ বিষয়টা এখন মনে পড়লে হাসি আসে। আসলে তখন রোজা রাখার উত্তেজনা ছিল মূলত ঈদ কেন্দ্র করে। তা ছাড়া বড়দের সঙ্গে সেহরি ও ইফতার করব সে সুযোগের আশায়ও রোজা রাখার জন্য পাগল ছিলাম। বাট এখন রোজা মানে হচ্ছে একজন মুসলমান হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রোজার দিনগুলোয় সাধারণত কী ধরনের খাবার খান?
সেহরিতে সব
সময় আমি হেলদি ফুড রাখার চেষ্টা করি। এখন তো গরমটা বাড়ছে। পানির পিপাসা থাকে। সারা দিন কাজ থাকে। অনেক ক্যালরি বার্ন হয়। তাই হেলদি ফুড খাই। ইফতারে বলা চলে সব খাই। ইফতারে অনেক খাবারের ঐতিহ্য আছে আমাদের দেশে। ইচ্ছে করে সবই একটু একটু করে খাই। তবে স্পেশালি বলব ইফতারিতে আমার প্রিয় মেন্যু হালিম। আর সেহরিতে যা-ই খাই যেকোনো একটা জুস রাখার চেষ্টা করি।
রোজা সংযমের, সাধনার মাসে। রোজা রেখে আপনার উপলব্ধি কী?
আমার কাছে রোজা মানেই শান্তি। এটা নিজের ভেতরের একটা ফিলিংস। যারা রোজা রাখেন, নামাজ পড়েন তারা অন্যরকম শান্তি টের পান। আমার মনে হয় যারা সঠিকভাবে রোজা রাখেন তারা ক্রাইম করতে পারেন না। নিজের মধ্যেই নিজেকে দমন করে রাখার তাগিদ তৈরি হয়। যারা তারাবি পড়তে পারেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারেন এবং পরিবারকে সময় দিতে পারেন আমার মনে হয় তাদের কাছে এই একটা মাস বেস্ট সময় যায়। যারা রোজা রাখেন এটা তারা জানেন যে রোজার মতো শান্তির মাস আর হয় না।
কাজের কথা বলি। আসছে ঈদে কতগুলো নাটকে দেখা মিলবে আপনার?
অনেক কাজই তো করা হয়েছে। কতগুলো প্রচার হয় বলা মুশকিল। তবু প্রত্যাশা করছি ঈদে সব মিলিয়ে ১৫টির মতো নাটক প্রচার হবে। দেখা যাক।