আলাপন
লিমন আহমেদ
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১২:৫৫ পিএম
আজম খান
আজম খান পেশায় একজন ব্যাংকার। তবে অভিনয়টা করেন মনের তাগিদে। ২০১৫ সালে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান এফ কিউ পিটারের ‘দ্য হিরো’ নাটকে। নাটকটি প্রচারের পর বেশ আলোচিত হন আজম। নয় বছরের ক্যারিয়ারে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। ছোটপর্দার গণ্ডি পেরিয়ে বড়পর্দায়ও অভিষেক ঘটেছে তার। আসছে ঈদে ‘দেয়ালের দেশ’ সিনেমায় দেখা মিলবে আজম খানের। থাকবেন এক ডজনের বেশি নাটকে। প্রতিদিনের বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছেন এ অভিনেতা। সিনেমা ও নাটকে তার ব্যস্ততাসহ সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে লিখেছেন লিমন আহমেদ-
আসছে ঈদে আপনার অভিনীত দেয়ালের দেশ সিনেমাটি মুক্তি পাবে।
সেখানে আপনার চরিত্রটি কেমন?
এ সিনেমাটি আমার জন্য বেশ স্পেশাল। সাধারণত আমাকে সবাই বাবা
চরিত্রের জন্য ভাবেন। তেমন একটা বৈচিত্র্য থাকে না। কিন্তু দেয়ালের দেশে আমি একটা
মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল। ছবিতে এ কলেজের বিশেষ ভূমিকা আছে। এখানে ছবির হিরো
শরীফুল রাজ কাজ করেন। তার সঙ্গে আমার চরিত্রের বেশ একটা রসায়ন দেখতে পাবেন দর্শক।
অনেক ছবি ঈদে মুক্তির মিছিলে রয়েছে। তার ভিড়ে দেয়ালের দেশ কতটা সাফল্য পাবে বলে আশা করছেন?
আমি এ সিনেমাটি নিয়ে খুবই আশাবাদী। একটা অন্যরকম ভালোবাসার
গল্প নিয়ে এটি বানিয়েছেন মিশুক মনির। তিনি একজন তরুণ নির্মাতা। মেধাবী। এতে জুটি
হয়েছেন আমাদের প্রিয় দুই তারকা শরীফুল রাজ ও শবনম বুবলী। তরুণদের কাছে দুজনের
ক্রেজ আছে। এরই মধ্যে কিন্তু টিজার দিয়ে ছবিটি আলোচনায় এসেছে। ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।
কিছু দৃশ্য নিয়ে কথা হচ্ছে। এতটা আলোচনা কিন্তু অন্য ছবিগুলো নিয়ে হচ্ছে না। আমার
বিশ্বাস অনেক ছবির ভিড়ে আলাদাভাবে দর্শকের মনে দাগ কাটবে দেয়ালের দেশ। খুব ভালো
রেসপন্স আসবে।
দেশজুড়ে হলসংখ্যা খুবই কম। কিন্তু এক ডজনের বেশি সিনেমা মুক্তি পাবে বলে শোনা যাচ্ছে। সিনেমা ব্যবসার জন্য এ বিষয়টা কতটা ইতিবাচক মনে করছেন?
এটা একটা ভাবনার বিষয় সত্যি। আমরা ছোটবেলায় দেখতাম ঈদের সময়
দু-তিনটি সিনেমা মুক্তি পেত। তখন হল ছিল প্রচুর। এখন হলসংখ্যা খুবই কম। তাও আবার
বাজারটা সিনেপ্লেক্সকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। এদিকে ছবি অনেক। গেল বছর দেখেছি চারটি
ছবি মুক্তি পেয়েছে একসঙ্গে। একটা বৈষম্য দেখা গেছে হল নিয়ে যা খুবই হতাশার। সেদিক
থেকে এবারের অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক। আসলে এখন সবাই চায় ঈদে সিনেমা মুক্তি দিতে।
কারণ সারা বছর ব্যবসা হয় না। দর্শক ঈদেই হলে যায়। তাই ঈদের সময় সিনেমার চাপ বাড়ছে।
সবাই চাইছে তার ছবিটি বেশি হলে মুক্তি দিতে। শেষ পর্যন্ত কে কত হল পাবে দেখা যাক।
তবে আমার কথা হলো আমরা সবাই মিলে এক অঙ্গনের এক পরিবারের মানুষ। কোনো নেতিবাচকতা
চাই না। ইতিবাচক প্রতিযোগিতা বজায় রেখে ঈদের সিনেমা ব্যবসা চলুক। দর্শকের যেটা ভালো
লাগে তারা সেটা দেখবে। সবই আমাদের সিনেমা, সবারই ভালো ব্যবসা হোক।
সিনেমায় বেশ নিয়মিত আপনি। আর কী সিনেমা হাতে আছে?
এটা খুবই ভালো লাগার ব্যাপার যে সিনেমা নির্মাণ বাড়ছে আমাদের
ইন্ডাস্ট্রিতে। আমাদের কাজও বাড়ছে। আমি বেশ কিছু সিনেমা করতে যাচ্ছি সামনে। আর
দেয়ালের দেশ তো আসছেই ঈদে, এ ছাড়াও নন্দিনী ও সংযোগ নামে দুটি সিনেমা মুক্তির
অপেক্ষায় আছে। এগুলো কোরবানি ঈদের আগেই হয়তো চলে আসবে। প্রয়াত অভিনেত্রী কবরী
সারোয়ারের ‘এইদিন সেইদিন’ সিনেমার কাজও শেষ করেছি। এটাও চলতি বছর মুক্তি পাবে।
প্রতিবারই ঈদে আপনার একাধিক নাটক আসে। ছোটপর্দায় এবারের ব্যস্ততা কেমন?
অনেক ব্যস্ততায় দিন কাটছে। রোজার আগে থেকেই ঈদের কাজ করছি।
রোজার মধ্যেও কাজ হচ্ছে। শুটিং সেটে সেহরি খাচ্ছি, এখানেই ইফতার। অনেক কাজ তো আমি
করেছি। তার মধ্যে কটা আসবে পরিচালকরাই জানেন। তবে ১৫টির মতো নাটকে আমাকে দেখতে
পাবেন দর্শক। দুটি বিজ্ঞাপনও আসবে।
একসঙ্গে এত কাজ করতে গিয়ে চরিত্রের বৈচিত্র্য বজায় থাকে কতটুকু?
দেখুন এটা একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে গেছে। বেশিরভাগ কাজেই
আমাকে বাবা চরিত্রে দেখা যায়। পরিচালকরা আমাকে সেভাবেই ভাবেন। যদিও এতে আমি
স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তবু এর ভিড়েই প্রতিটি চরিত্রে নতুন কিছু করার চেষ্টা
করতে হয়। এবার ঈদে আমি দুয়েকটি কাজ করেছি ব্যতিক্রম। তার একটি হলো সাত পর্বের নাটক
গার্লস হোস্টেল। এখানে আমাকে দেখা যাবে হোস্টেল ম্যানেজারের চরিত্রে। কিছু
শিক্ষার্থী হোস্টেলে থাকে, তাদের প্রেম-হাসি-কান্না ও নানা সংকট নিয়ে নাটকটি।
এখানে আমার চরিত্রটি খুব সুন্দর। একটা নতুনত্ব আছে। আরেকটা সাত পর্বের নাটক করেছি
আলাল আর দুলাল নামে। এতে ভাগনে আলাল চরিত্রে শামীম হাসান সরকার ও মামা চরিত্রে
চাষী আলম অভিনয় করেছেন। শহীদুন নবীর এ নাটকে আমার চরিত্রটি বেশ মজার।