× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাষাবাদের সেই পুরোনো তথ্যেই ভরসা কৃষকের

ফারুক আহমাদ আরিফ

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:১০ পিএম

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:১১ পিএম

লাঙল দিয়ে হাল চাষ দিচ্ছেন একজন কৃষক।

লাঙল দিয়ে হাল চাষ দিচ্ছেন একজন কৃষক।

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কয়েক লাখ গবাদিপশু মারা গিয়েছিল। ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন কৃষকরা। তারা ঘরে তুলতে পারেননি কোনো ফসল। সেদিনের কৃষক, কৃষি ও চাষাবাদের সঙ্গে আজকের কৃষির রয়েছে বিশাল ফারাক।

এখন বেড়েছে শিক্ষা, প্রযুক্তিগত সুবিধা ও তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ। কিন্তু এরপরও দেশে কৃষি আবহাওয়ার তথ্য হয়ে ওঠেনি কৃষকের আস্থার জায়গা। তথ্যপ্রাপ্তিতে হয়নি পারদর্শী। ক্ষতির মুখেই পড়তে হচ্ছে কৃষিকে। এ প্রেক্ষাপটের মধ্যে আজ ২৩ মার্চ পালিত হচ্ছে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, ২০২০ সালের ২০ মে আঘাত করা ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে আর্থিক ক্ষতি হয় এক হাজার ১০০ কোটি টাকার। ২০২২ সালে সিলেটের বন্যায় কৃষি ফসলের ক্ষতি হয় এক হাজার ১১৩ কোটি টাকার বেশি। একই বছরের ২৪ অক্টোবর সাইক্লোন সিত্রাংয়ে ৩১টি জেলায় বিভিন্ন ফসলের ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ৩১ জেলার মোট ফসলি জমির ০.৪০ শতাংশ। ভুক্তভোগী কৃষকের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। শুধু পানের বরজেই ক্ষতি হয় অন্তত ১৬২ কোটি টাকা।

সত্তরের নির্বাচনের সময় ১৩-১৪ বছরের ছেলে ছিলেন ময়মনসিংহের ওসমান গনি। এখনও কৃষিকাজেই যুক্ত। তিনি বলেন, আগে মুরব্বিদের কথামতো চাষ করতেন। এখনও কৃষিতথ্য দেখে বা গণমাধ্যমের সংবাদে আকৃষ্ট হতে দেখছেন না কৃষকদের। তারা সেই আগের ধারণার মতোই চাষ করছেন। আর যে সময়ের মধ্যে তথ্য দেওয়া হয়, তা কৃষকের তেমন কাজেও আসে না। এক সপ্তাহ বা তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টি বা ঝড়ের তথ্য পেলেও কৃষকরা তেমন গুরুত্ব দেন না এ অঞ্চলে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৌলিসম্পদ ও বীজ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) আলমগীর হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এখন আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি পাল্টে গেছে। তাই কোন পরিস্থিতি তৈরি হবে তা দীর্ঘ সময় আগে বলা যায় না। এখন যে তথ্য দিল, দেখা গেল সপ্তাহের ব্যবধানে তা পাল্টে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ এক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব ফেলছে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে শুরু হয় কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প, যা শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের জুনে। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলার চার হাজার ৫৫৪টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদিসহ তিন ধরনের পূবার্ভাস দিয়ে থাকি। এসব পূর্বাভাস প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাজে আসে। প্রতি সপ্তাহে পরামর্শভিত্তিক কৃষি তথ্য দিয়ে থাকি।’

আজিজুর রহমান আরও বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে আবহাওয়া নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। অনেকেই ৭, ৮ ও ১০ নম্বর সতর্ক সংকেত কী তা জানেন না। এটি জানাতে উপকূলীয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক কৃষক, সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সভা-সেমিনার করছি। ইতোমধ্যে ৩৬টির অধিক সেমিনার করা হয়েছে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, মাঠপর্যায়ের কৃষকদের কাছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যথেষ্ট আগে পৌঁছানো হয় না। এর অন্যতম কারণ হলো দেশে ভারী বৃষ্টিপাত শুরুর মাত্র এক থেকে দুই দিন আগে পূর্বাভাস জারি করা হয়। এ অল্প সময়ে কৃষক শস্য ঘরে তুলতে পারেন না। দ্বিতীয়ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস এই ২০২৩ সালেও ব্রিটিশ আমলের প্রচার পদ্ধতি অনুসরণ করে, যা কৃষকদের বোধগম্য হয় না।

বিশ্ব আবহাওয়া দিবসে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় রাজধানী ঢাকার বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের সেমিনার হলে আলোচনা সভা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা