কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৩ ১৬:৩৮ পিএম
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩ ১৬:৫৩ পিএম
নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এসেছে নানা বর্জ্য। প্রবা ফটো
মৃত জেলিফিশ ও ডলফিনের পর এবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক, ছেঁড়া জাল, স্যান্ডেল ও রশিসহ নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে এসেছে। এগুলো সৈকতের বালিয়াড়ির কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে এসব বর্জ্য ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাতের জোয়ারের সময় এসব বর্জ্য ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিচকর্মী বেলাল হোসেন। তিনি জানান, রাতের জোয়ারের পর শুক্রবার সকালে এসব বর্জ্য ভেসে আসতে দেখা গেছে।
সৈকতের কবিতা চত্বর
পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বালিয়াড়িতে দেখা
মিলেছে এসব বর্জ্যের। এগুলোর বেশিরভাগ প্লাস্টিকের বোতল ও অন্যান্য সামগ্রী। এর সঙ্গে ছেঁড়া জাল, রশি, কাচের বোতল, গাছের গুঁড়ি, স্যান্ডেলসহ অন্যান্য বর্জ্য রয়েছে।
সৈকতের লাইফ গার্ডকর্মী
সৈয়দ নুর জানান, বুধবার অসংখ্য মৃত জেলিফিশ, বৃহস্পতিবার দুটি মৃত ইরাবতী ডলফিন ভেসে
আসার পর ব্যাপকহারে বর্জ্য ভেসে এলো। এ কারণে বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা বর্জ্যে সৌন্দর্যহীন
হয়ে পড়েছে সৈকত। একই সঙ্গে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, যা দেখে বিব্রত হচ্ছে পর্যটকরা।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক
রিসার্স ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, এর আগে বিভিন্ন সময়
কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর হতে মহেশখালির বিভিন্ন দ্বীপসহ সোনাদিয়া দ্বীপে একই বর্জ্য
ভেসে এসেছিল। সমুদ্রে নিম্নচাপ, বায়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণন (এডি), সমুদ্রের পানির গতি
প্রবাহসহ সমুদ্রপৃষ্ঠের ধরনের ওপর ভিত্তি করে উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ভাসমান
প্লাস্টিকসহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়।
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গোপসাগরে একটি ছোট আকারের নিম্মচাপ লক্ষ্য
করেছি। এসব নিম্নচাপে জোয়ারের সময় সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি অতিমাত্রায় বেড়ে গিয়ে ফুলে
ওঠে। ঘূর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান বর্জ্য একসঙ্গে জমা হয়ে ভেসে আসে সমুদ্র সৈকতে। এসব
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত বিভিন্ন লতা, গুল্ম ও ম্যানগ্রোভের সঙ্গে আটকা পড়ে।
এটি টেরেসস্ট্রিয়াল মাইক্রোপ্লাস্টিকের উৎসে পরিণত হয়েছে।’
সাঈদ মাহমুদ বলেন, ‘অনতিবিলম্বে এই বর্জ্য অপসারণ না হলে সৃষ্ট মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে
সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে এবং
মানুষের জন্য বিশাল স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের
পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ
ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অপসারণ করা হবে।
এর আগে কক্সবাজার সৈকতে বৃহস্পতিবার দুটি মৃত ইরাবতী ডলফিন, বুধবার, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর, ১১ নভেম্বর ও আগস্ট মাসের শুরুতে দুই দফায় অসংখ্য মরা জেলিফিশ ভেসে এসেছিল। একইভাবে গত বছর তিন দফায় ভেসেছে এসেছে চারটি নানা প্রজাতির ডলফিন।