× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাইবান্ধায় কমছে চারণভূমি, সংকটে খামারিরা

গাইবান্ধা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১০:২৬ এএম

আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১০:২৭ এএম

একসময়ের গোখাদ্যের আধার হিসেবে পরিচিত চরাঞ্চলের চারণভূমি এখন ধু-ধু বালুচর। প্রবা ফটো

একসময়ের গোখাদ্যের আধার হিসেবে পরিচিত চরাঞ্চলের চারণভূমি এখন ধু-ধু বালুচর। প্রবা ফটো

দিগন্তবিস্তৃত মাঠজুড়ে সবুজ ঘাসের সমারোহ আর হাজার হাজার গাভির অবাধ বিচরণ। চর ও হাওরাঞ্চলে একসময়ের নিয়মিত এই অপরূপ দৃশ্যের দেখা মেলে কদাচিৎ। গো-খাদ্যের আঁধার হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে বালুর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এখন আর গজাচ্ছে না প্রাকৃতিক ঘাস। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের। খামারিদের নির্ভর করতে হচ্ছে চড়া দামে কেনা খড়, বিচালি ও দানাদার খাদ্যের ওপর।

গাইবান্ধার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ধকল কাটিয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পালন করেন তারা। এসব গবাদি পশু খাদ্যের প্রধান উৎস ছিল চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক খাবার। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চরে বেড়ে গেছে বালুর পরিমাণ। আর বাকি জমিগুলোতে বর্তমানে চাষ হচ্ছে নানা অর্থকরী ফসলের। 

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার চরদিঘলকান্দি গ্রামের বারেক আলী সরকার। নিজের সম্পদ বলতে তার রয়েছে দুটি মহিষ ও চারটি গরু। প্রতি বছর গরু ও মহিষ বিক্রি করে সংসারের পুরো ব্যয় বহন করে থাকেন তিনি। এভাবে প্রায় দুই যুগ ধরে গবাদি পশু লালনপালনের ওপর নির্ভর করেই চলছে তার সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদাসহ চার সন্তানের পড়ালেখার খরচ। 

গত কয়েক বছর থেকে চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরনের গো-খাদ্য হ্রাস পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। শুধু চরাঞ্চলের পতিত জমির ঘাসের ওপর নির্ভর করে গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে বারেক আলী সরকারের মতো একই এলাকার আব্দুল জলিল, করিম মোল্লা, নুর ইসলাম প্রামানিকের। এতে করে জেলার ১৬৫টি চরাঞ্চলে গবাদি পশু লালনপালনের ওপর নির্ভরশীল অন্তত কয়েক হাজার পরিবার চরম বেকায়দায় পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাজার থেকে গবাদি পশুর খাদ্য কিনে গরু মোটাতাজাকরণ ও দুধ উৎপাদন করছেন তারা। 

সাঘাটার খামারি আকতারুজ্জামান জানান, কয়েকদিন পর পরই গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে গবাদি পশু লালনপালনে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। ৩২টি গরুর জন্য দিনে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে। দানাদার খাবারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী এবং দুধের বাজারমূল্য কম হওয়ায় খামার টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

ফুলছড়ি চরের খইমুদ্দিন জানান, নিজের বাড়িতে নিজেরাই গরু লালনপালন করি। আমাদের সারা বছর গরুর দুধ, গোবর বিক্রি করে কোনোরকম সংসার চলে। কিন্তু খাদ্য সংকটের কারণে গরু, ছাগল নিয়ে বিপাকে আছি। খড় আগে কিনতাম ৫শ’ টাকায়, সেই খড় এখন দাম বেড়ে হয়েছে দেড় হাজার টাকা। এতে করে গরু ছাগল প্রতিপালন আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। 

স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান ও চর উন্নয়ন গবেষক এম. আবদুস সালাম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালা কমে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে প্রাণিকুলে। বিশেষ করে গবাদি পশু লালনপালনের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর জীবন-জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাসুদার রহমান সরকার জানান, চরাঞ্চলের মানুষজনের অন্যতম সম্পদ গবাদি পশু। প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে গাছপালা ও ঘাস খেয়ে এখানকার গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল বেড়ে ওঠে। সাম্প্রতিক সময়ে চরাঞ্চলে বালুর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের ঘাসের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তবে, বিকল্প হিসেবে উন্নত পদ্ধতিতে চরাঞ্চলে ঘাস চাষের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা উন্নতজাতের ঘাসের (নেপিয়ার, পাক চং) চাষে খামারিদের উদ্বুদ্ধ করছি। এতে খামরিদের খরচ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা