বাকৃবির গবেষণায় সাফল্য
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:১৭ পিএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম
কাসাভা আলু থেকে তৈরি বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য। প্রবা ফটো
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক দীর্ঘ সময়ের গবেষণায় দেশে প্রচলিত শর্করার বিকল্প উৎস হিসেবে কাসাভা (শিমুল আলু) প্রক্রিয়াজাত করণে সাফলতা পেয়েছেন। ধান, গম, চালের ওপর নির্ভরতা কমাতে কাসাভা বিকল্প উৎস হতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন গবেষকরা।
হেক্টরপ্রতি কাসাভা আলুর গড় ফলন ৩৫ থেকে ৫০ টন, যেখান ধানের গড় ফলন ২ থেকে ৩ টন। এটি উচ্চ তাপমাত্রা এবং কম উর্বর মাটিতেও জন্মাতে সক্ষম। তবে মানুষ ও প্রাণীর জন্য এ খাবার সর্বাবস্থায় সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির ও তার গবেষণা দল দীর্ঘ সময় ধরে কাসাভা নিয়ে গবেষণা করে প্রক্রিয়াজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। কাসাভা বা শিমুল আলুর মূলের অংশ প্রক্রিয়াজাত করে কাসাভা-অড়হড় রুটি, চিপস, কাসাভা-স্টার্চ, পশুখাদ্য, অড়হড় পাই, কেক, আটা, পাকোড়া, সিদ্ধ কাসাভা হালুয়া, তেল পিঠা, স্লাইস, তরকারিসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের সম্মেলন কক্ষে গবেষণা সম্পর্কে এসব তথ্য তুলে ধরেন তারা।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ শর্করা, শূন্য দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ আমিষ, শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ২ শতাংশ চর্বি, শূন্য দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ আঁশ, শূন্য দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ৬ শতাংশ খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়। এ ছাড়াও এতে বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি ও স্বল্প পরিমাণ লৌহ উপাদানও থাকে। এই গাছের পাতা, কাণ্ড এবং মূল সবকিছুই ব্যবহারযোগ্য।
সম্মেলনে গবেষক ছোলায়মান আলী ফকির জানান, কাসাভা সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে এমনকি আলুর মতো অন্যান্য তরকারির সঙ্গেও রান্না করে খাওয়া যায়। কাসাভা আটা গমের আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই আলু স্যুপ, চিপস, ট্যাপিওকা (সাগুসদৃশ খাবার), পুডিং ইত্যাদি হিসেবে খাওয়া হয়। এ ছাড়া কাসাভার পাতার প্রক্রিয়াজাতকরণের পর উদ্ভাবিত পিলেট ও আটা- গরু, ছাগল, মহিষ, মাছ এবং পোলট্রিকে খাবার হিসেবে দেওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, কাসাভা গাছে বিষাক্ত সায়ানোজেনিক গ্লুকোসাইড থাকে। তবে সিদ্ধ বা প্রক্রিয়াজাত করলে এই বিষক্রিয়া আর থাকে না। তাই কাসাভা আটা/স্টার্চ সম্পূর্ণ নিরাপদ। আলু উত্তোলনে মাটি ক্ষয় হওয়ার কারণে ফসলি জমিতে চাষ না করাই উত্তম। এজন্য বড় পরিসরে ব্যাণিজিকভাবে এর চাষ না করে মাঝারি বা ছোট পরিসরে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।