খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৪:০৫ পিএম
রাত জেগে রসুনক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় রসুন চাষে স্বপ্নপূরণের আশায় দিন গুনছেন কিষান-কিষানিরা। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় রসুনের ভালো ফলন হয়েছে। তবে চুরি ঠেকাতে রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকেরা। এদিকে রাতে পাহারা দিতে গিয়ে চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত উপজেলায় ১০ জন কৃষক শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ছয়টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে; যা গত বছর ছিল দেড় হাজার হেক্টরে।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে উপজেলার গোয়ালডিহি, নলবাড়ী, হাসিমপুর ও কাচিনিয়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, জমিতে পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কৃষকেরা সেখানে রাত যাপন করছেন। কৃষকদের চোখে ঘুম নেই, রাত জেগে টর্চ লাইটের আলোয় রসুনক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শিয়ালের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আতঙ্কে রয়েছেন। ঈদের আগেই রসুন উঠানো ও ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে বলে জানান তারা।
উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের জমিরউদ্দিন শাহ্ পাড়ার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে রসুন চাষে খরচ ও শ্রম বেড়েছে। কিন্তু এত কষ্টে আবাদ করেও চোরের চিন্তায় রাত জাগতে হয়। কেননা রসুন দামি ফসল, তাই পাহারা দিচ্ছি।’
মনির জীবন নামের এক যুবক তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমাদের গ্রামে তিনজনসহ আশপাশের গ্রামে ১০ জন কৃষককে শিয়ালে কামড়ানোর খবর শুনলাম। একদিকে রাতের আঁধারে জমির ফসল চুরি, অন্যদিকে দিনদুপুরে শিয়ালের উৎপাত। কৃষক যেন কোনো কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না এখন।
উপজেলার গোয়ালডিহির শাহপাড়ার রসুনচাষি রিশাদ শাহ বলেন, এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৭০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজারমূল্য ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। সে হিসেবে অন্য আবাদের চেয়ে রসুন চাষ লাভবান।
এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে ভালো ফলন হবে। এ ছাড়া বর্তমান বাজারে রসুনের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হবেন। পেঁয়াজ চুরির বিষয়টি স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। চুরি রোধে কৃষকেরা দিনে ও রাতে পাহারা দিচ্ছেন বলে শুনেছি।’
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘থানা-পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও রাত্রিকালীন পাহারাদারেরা চুরি রোধে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে জনগণের সচেতন ভূমিকা চুরি রোধ ও অপরাধ কমাতে অনেক কার্যকর হবে।’