× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কক্সবাজারে রোমাঞ্চ

গোলাম কিবরিয়া

প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৯ এএম

আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:০৬ পিএম

কক্সবাজারে রোমাঞ্চ

শহরের যান্ত্রিকতা ও ব্যস্ততা থেকে দূরে অবকাশ যাপনে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ থাকে  কক্সবাজার। এখানের নীল জলরাশি, বিস্তীর্ণ বেলাভূমি ও সৈকতের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউয়ে মেতে ওঠেন ভ্রমণপিপাসুরা। বিভিন্ন রোমাঞ্চকর অনুভূতি দিতে কক্সবাজারে রয়েছে নানা আয়োজন। লিখেছেন গোলাম কিবরিয়া  

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থান কক্সবাজার। প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করেন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। তবে এখন শুধু আর সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই কক্সবাজার ভ্রমণ। বিশ্বের যেকোনো জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকতের মতো কক্সবাজারেও কিন্তু এখন অনেক বিচ অ্যাকটিভিটি সহজলভ্য। কক্সবাজারের এখন অ্যাডভেঞ্চার অ্যাকটিভিটি আমাদের আশপাশের দেশগুলো থেকে কোনো অংশেই কম নয়। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক আপনার কক্সবাজার ভ্রমণকে কীভাবে ভিন্নভাবে সাজানো যায়।

প্যারাসেইলিং

আকাশে ওড়ার সাধ কার না জাগে বলুন। আর সে যদি হয় ভ্রমণপিপাসু, তা হলে তার মনটা যেন পাখির মতোই। আরাধ্য সে ইচ্ছেপূরণের সুযোগটাই এখন পাওয়া যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে প্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য কক্সবাজারেই। প্যারাসেইলিং করে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে সৈকতের হিমছড়ি দরিয়ানগর পয়েন্টে মেরিন ড্রাইভের দক্ষিণ পাশের সৈকতে প্যারাসেইলিং করা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠান সেখানে পর্যটকদের জন্য প্যারাসেইলিংয়ের আনন্দ উপভোগের সুযোগ দিচ্ছেন। সেখানে গেলেই চোখে পড়বে প্যারাসুটে চড়ে মানুষ আকাশে উড়ছে। নিচে উত্তাল সমুদ্র।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্যারাসেইলিংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দরিয়ানগরে ভিড় করেন পর্যটকরা। এ আনন্দ পেতে ব্যয় করতে হবে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। একটি প্যারাসুটে বেঁধে দেওয়া হবে আপনাকে, একটি স্পিডবোট আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে সমুদ্রে, আর সেই তীব্র গতিতে আপনি ঠিক একটা ঘুড়ির মতোই উড়তে থাকবেন। পাখির মতো সমুদ্রের ওপর দিয়ে উড়ে বেড়ানোর একমাত্র উপায় প্যারাসেইলিং। রোমাঞ্চকর এ প্যারাসেইলিংয়ের স্বাদ নেওয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্থান হলো সৈকত।

প্যারাসেইলিং করার কয়েকটি প্যাকেজ আছে। খরচ পড়বে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ২০০০ টাকার রাইডে আপনি শুধু আকাশে উড়তে পারবেন। ২৫০০ টাকার রাইডে আপনি আকাশেও উড়তে পারবেন, আবার নামার সময় সমুদ্রের পানিতে হালকা পা স্পর্শও করতে পারবেন। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত পাখির মতো আকাশে উড়তে পারবেন। ৩০০-৫০০ ফুট পর্যন্ত ওপরে ভেসে বেড়াবেন। ১২ বছরের নিচে, দুর্বলচিত্তের মানুষ কিংবা হার্টের রোগী ছাড়া সবাই নিশ্চিন্তে প্যারাসেইলিং করতে পারেন। তবে আপনার যদি উচ্চতা ভীতি থাকে, তবে প্যারাসেইলিং না করাই ভালো। প্যারাসেইলিং করার আগে অবশ্যই উড্ডয়নকারীকে একটি বন্ডে সই করতে হয়। বন্ডে লেখা থাকে প্যারাসেইলিংয়ের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় নেবে না সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান।

যদিও যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা দুর্ঘটনার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে প্যারাসেইলিং রাইড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। এ জন্য একটি স্পিডবোট, একটি জেট স্কি রেডি তাকে আপৎকালীন সময়ের জন্য। প্যারাসেইলিংয়ের সময় হাতে মোবাইল ফোন, চোখে চশমা না রাখাই ভালো। আকাশে ওড়ার রোমাঞ্চকর এই দৃশ্য ধারণ করতে চাইলে বডি মাউন্টেড অ্যাকশন ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেলফি স্টিকের মাধ্যমে ফোনে ভিডিও ধারণ না করাই ভালো।

কিভাবে যাবেন : প্রথমে আপনাকে কক্সবাজার আসতে হবে। সেখান থেকে অটোতে ২০-২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে হিমছড়ির দরিয়ানগর যেতে হবে। যাত্রাপথেই দেখবেন কেউ না কেউ প্যারাসেইলিং করছে।

কুদুম গুহা

কক্সবাজারের টেকনাফ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। টেকনাফে রয়েছে বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ‌‘কুদুম গুহা’। স্থানীয়রা এটিকে বলে কুদুং। যারা টেকনাফ ভ্রমণে রোমাঞ্চকর স্বাদ নিতে চান তারা ঘুরে আসতে পারেন গুহাটিতে। গুহাটির অবস্থান কক্সবাজার শহর থেকে ৮৮ কিলোমিটার দক্ষিণে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায়। বাংলাদেশের একমাত্র 

বালু-মাটির গুহা এটি। দুর্গম পাহাড় অতিক্রম করে যেতে হয় এই গুহায়। কুদুম গুহায় হেঁটে যাওয়ার সময় পাখির ডাক মনোরম পাহাড় ঘেরা গাছপালা ও বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখতে পাবেন। এই গুহার ভেতরে প্রবেশ করেই আপনার মনে হবে হয়তো আদিম যুগে চলে এসেছেন। বাদুড়ের হাঁকডাক আর ওড়াউড়িতে দারুণ এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি পাবেন। যেকোনো সময় এই বাদুড় আর চামচিকা শরীরের ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই আপনাকে সঙ্গে হেডলাইট ও আত্মরক্ষামূলক লাঠি অবশ্যই নিতে হবে। গুহায় যাওয়ার সময় অবশ্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত বন বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফরেস্ট গাইড অথবা ইকো গাইডকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।

কীভাবে যাবেন : কুদুম গুহায় যেতে হলে সড়কপথে সরাসরি টেকনাফ চলে যান। এরপর টেকনাফের হোয়াইখিয়ং বাজার থেকে শাপলাপুর অভিমুখে ৪ কিলোমিটার যাওয়ার পর বাম দিকে পাহাড়ি ঝিরিপথ ধরে আরও ২ কিলোমিটার হাঁটলেই এই গুহায় পৌঁছে যাবেন।

বাইক রেন্টাল সার্ভিস

মেরিন ড্রাইভের রাস্তা ধরে আপনি একাই যদি একটি লং ড্রাইভে যেতে চান, ভেবে দেখুন তো কেমন হয়? একাই বাইক নিয়ে ফাঁকা রাস্তা ধরে ঘুরতে যাওয়া হবে দারুণ ব্যাপার। আর সেই চমৎকার অভিজ্ঞতার অংশ হতে হলে এই বাইক রেন্টাল সার্ভিসটি আপনাকে নিতে হবে। একপাশে পাহাড় এবং আরেকপাশে সাগর, মাঝখানের মেরিন ড্রাইভ দিয়ে বাতাসের পাশ কাটিয়ে ছুটে চলছেন আপনি বাইক নিয়ে!

ট্যুরিস্ট ক্যারাভানে ভ্রমণ

আপনি যদি গাড়ির বদলে একটি দোতলা ট্যুরিস্ট ক্যারাভানে একজন ট্যুরিস্টের মতো পুরো কক্সবাজারের মূল স্থানগুলো ঘুরে আসতে চান, সেটার জন্যও কিন্তু চমৎকার ব্যবস্থা এখন কক্সবাজারেই রয়েছে। একটি দোতলা বাসে করে মেরিন ড্রাইভ ধরে ঘুরতে ঘুরতে খাবার খাওয়া এবং সেই সঙ্গে খোলা ছাদে বই নিয়ে সমুদ্রের ঠিক পাশ দিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে এর আগে হয়নি। দোতলা এই ট্যুরিস্ট ক্যারাভানে ২০ জন ধারণক্ষমতাসহ আছে ছোট লাইব্রেরি, ওয়াশ রুম এবং তিন বেলা খাবারসহ চা-কফির ব্যবস্থা। একুয়াহোলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভানে আপনি এই সেবা পাবেন পূর্ণ বয়স্ক জনপ্রতি ২০৯৯ থেকে ২২৯৯ টাকায়। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন একুয়াহোলিক-এর অফিসিয়াল নাম্বারে। যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৮৭-২৭৩৭২৭ 

গভীর সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানো

এই অভিজ্ঞতা নিতে আপনাকে হতে হবে একটু সাহসী। কিন্তু ভাবছেন কক্সবাজারে অ্যাডভেঞ্চারের কী আছে? চিন্তা করে দেখুন তো, বিশাল সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে একটা মাঝারি সাইজের সাম্পানে করে আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন একদল দক্ষ জেলের সঙ্গে। আর তাদের সঙ্গে মাছ ধরছেন, সুযোগ বুঝে লাইফ জ্যাকেট পরে সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছেন। সমুদ্রের বিশালতার মধ্যে একটি অংশ হয়ে ভেসে বেড়ানোর সুযোগ পেতে গো জায়ানের সার্ভিসটি আপনাকে নিতে হবে। তাই আর দেরি না করে এখনই পরিকল্পনা করে ফেলুন কবে ভেসে বেড়াবেন সমুদ্রের বিশালতায়।

জেট স্কি

কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে জেট স্কি করার সুযোগ। সমুদ্রের বিশালতায় ছুটে চলতে জেট স্কি করতে পারেন। নিজে দক্ষ না হলেও অসুবিধা নেই, সঙ্গে থাকবে দক্ষ চালকÑ যিনি নীল জলরাশির বুকে ছুটে চলতে সাহায্য করবে। মৌসুম ও সময়ভেদে জনপ্রতি ২০০ থেকে ৮০০ টাকা লাগবে এই সার্ভিসটি নিতে।

রেজু খালে কায়াকিং

চারপাশের শান্ত পরিবেশে একা অথবা বন্ধুদের নিয়ে কায়াকিংয়ের অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে আসতে হবে রেজু খালে। কক্সবাজারের পাশেই রেজু খালে যে এখন কায়াকিংয়ের সুযোগ আছে।

এ ছাড়াও থাকছে

পুরো পরিবার, বিশেষ করে বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে যদি সারাদিন দারুণ সময় কাটাতে চান তাহলে চলে যান কক্সবাজারেই সি পার্ল ওয়াটার পার্কে। ৬টি রাইডে চড়তে পারবেন এখানে। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে একটা দিন অনেক আনন্দে কাটিয়ে দেওয়া যায় সহজেই। আর অ্যাডভেঞ্চার না করতে চাইলে পরিবারসহ চলে যেতে পারেন শহরে অবস্থিত রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডে। সমুদ্রের জগৎকে একদম কাছ থেকে উপভোগ করা যাবে। ফুড আর অ্যাডভেঞ্চারের মিশ্রণ পাবেন ফ্লাই ডাইনিং অভিজ্ঞতা নিলে। সুগন্ধা বিচের পাশেই ব্যতিক্রম এই অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ থাকছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা