প্রেমের অণুগল্প
সত্যজিত রায়
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:৪৬ পিএম
আমি নিতান্তই এক সাধারণ মানুষ। ছোট্ট পরিবারে বাবা আর মা। ২০১৮ সালে বিয়ে করি। জীবনটা বদলে যায়। ঘরের প্রতিটি সদস্যই আমার এক একটি ভালোবাসা। ভালোবাসা দিবস আমার সব সদস্যের জন্য। কাউকে বাদ দিয়ে আমি ভালোবাসার কথা চিন্তাই করতে পারি না। ঘর কী, আমি তাদের সবাইকে নিয়ে বুঝি।
২০২০ সালটা কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয়। করোনার ভয়াল থাবার কথা কি কেউ এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া যায়! কিন্তু তার মধ্যেও আমার এই বছরটা সবচেয়ে বিশেষ। ২০২০-এর ৩০ অক্টোবর আমার একমাত্র ছেলে আহানের জন্ম হয়। ওকে কোলে নেওয়ার যে কী এক অপার্থিব সুখ তা পৃথিবীর কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
আমার আর আমার স্ত্রীর জীবন যেন এক মুহূর্তে বদলে গেল। ছেলের আস্তে আস্তে বড় হওয়া, আধো আধো কথা বলা- দিনের ক্লান্তি নিমেষেই দূর করে দেয়।
আমার মনে হয় জীবনের সংজ্ঞা রয়েছে পিতৃত্বের গহিনে। আমি নিজেকে সবচেয়ে সুখী ভাবি যখন দিনশেষে বাসায় ঢুকেই শুনি আমার দুই বছরের ছেলের মুখে ‘বাবা কী আনছো?’ অথবা যখন শুনি সে চিৎকার দিয়ে বলে, ‘আমি সকালে বিকালে টম অ্যান্ড জেরি দেখি, এটা আমি দেখব না’ অথবা ‘Wheels on the bus’-এ হাত ঘুরিয়ে ‘round on round’ বা ‘beep beep beep’. আমার ছেলে আমাকে আর আমার স্ত্রীকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে।
এ পরিপূর্ণতা হলো পিতৃত্বের, পরিপূর্ণতা হলো মাতৃত্বের। এর কাছে বছরের ৩৬৫ দিনই ১৪ ফেব্রুয়ারি, সব দিনই ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা আমার শিখতে হয় ওর কাছে। আমার বাবা-মাকে সে দিয়েছে এক অন্য দুনিয়া। আমি তাদের কাছ থেকেই শিখেছি আসলের চেয়ে সুদ প্রিয়। আমার ছেলে আমার তাজমহল। আমার ভালোবাসা। আমার পরিপূর্ণতা। আপনাদের কাছে পিতৃত্ব কী? বাবার ভালোবাসা কী?
কলেজ রোড, বরিশাল