× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে

রানা রহমান

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৫ পিএম

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪৩ পিএম

সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে

লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে ১৮ বছর আগে ইউরোপের ছোট্ট দেশ এস্তোনিয়া গিয়েছিলাম। দেশটা ছোট হলেও বেশ উন্নত। লেখাপড়া শেষে জীবন ও জীবিকার উদ্দেশ্যে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করি। নিজের আইটি ফার্ম আছে, আছে হোটেলের ব্যবসা। কিন্তু দেশ ছেড়ে অন্য ভাষা ও সংস্কৃতির দেশে থাকলেও মন পড়ে থাকে বাংলাদেশে।

এস্তোনিয়ার প্রবাসী পুরোনো বাংলাদেশিদের মধ্যে আমি একজন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আমি একটা কমিউনিটি গড়ে তোলার চেষ্টা করি। এটাও বেশ কয়েক বছর আগে। বর্তমানে চারশর বেশি মানুষ যুক্ত আছেন। সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসংশ্লিষ্ট প্রতিটি দিবসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। আমাদের পয়লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, নবান্ন, পিঠা উৎসবসহ ঈদের সময়গুলোয় আমরা একত্র হই।

বিদেশে থাকার কারণে আমাদের সন্তানদের বাংলা ভাষা চর্চার জায়গাটা সীমিত। তবে পারিবারিকভাবে আমরা সচেতনভাবেই চেষ্টা করি মাতৃভাষা বাংলাটা যেন তারা লিখতে ও বলতে পারে। আমার সন্তানদের কথাই যদি বলি, দেশে এলে আমি প্রচুর বাংলা বই নিয়ে যাই। সেটা আমার জন্য এবং কমিউনিটির লোকজনের জন্য। আমার স্ত্রী বাচ্চাদের বইগুলো থেকে পড়ে শোনান, বাংলা শেখান। এখানকার স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা যখন হাইস্কুল শেষ করে, তখন তারা ইংলিশ, এস্তোনিয়ান, জার্মানসহ মোট ছয়টি ভাষায় দক্ষ থাকে। বাংলা শেখানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সুযোগ নেই বলে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি বাংলাটা যেন আমাদের সন্তানরা ভুলে না যায়। কারণ এই ভাষার আবেগ, এই ভাষার টান অন্য কোথাও কিংবা অন্য কোনো ভাষা দিয়ে কি মেটানো সম্ভব? সম্ভব না। আমার জানা মতে এমন অনেক পরিবার আছে, যারা আন্তরিকভাবেই বাংলা চর্চা ধরে রেখেছে। আর আমরা সামগ্রিকভাবে এখানকার বাঙালি কমিউনিটি তো বাংলা সংস্কৃতি চর্চায় কোনো কমতি রাখি না কখনও। আমাদের সঙ্গে এস্তোনিয়ার সরকার যুক্ত আছে, যুক্ত থাকে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাস।

ব্যবসায়িক কারণে আন্তর্জাতিক যোগাযোগই বেশি আমার। কখনও এমনও হয় ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত সারা দিনে একবারও হয়তো বাংলায় কথাই বলা হয়ে ওঠে না। তখন অস্থির লাগে। বাংলাদেশি কোনো বন্ধু বা স্থানীয় বাঙালি কাউকে ফোন দিই। বাংলায় কথা বলে মন জুড়াই। এমনও হয়েছে আমার অফিসে বাংলাদেশ থেকে আসা কোনো ছাত্র গল্প করে যাচ্ছে। আমি বুঝতে পারি, কোনো হেল্প তো তার লাগবে; কিন্তু এর পাশাপাশি অবচেতনে সে দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে শান্তিও পেতে চায়। 

প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওই পারের দেশে থাকলেও, বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা আর আবেগ কখনও ফিকে হবে না। আমৃত্যু চেষ্টা করে যাব, দেশের মানুষকে সহযোগিতা করার। আমার আগামী প্রজন্মকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির শিক্ষা দিয়ে যাওয়ার। কারণ বাংলা তো আমার মায়ের ভাষা, মায়ের ভাষা ভুলে গেলে যে আমি আমার মাকেই ভুলে যাব। 

লেখক : এস্তোনিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ী ও সংগঠক

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা