আদিবা আমরিন
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১০:৫৩ এএম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১১:১১ এএম
ছোট আয়ানের খুব শখ একদিন অনেক বড় হবে। সবাই তাকে চিনবে। সে একদিন সবার বন্ধু হবে। সবার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু যদি একটু বড় হতো, যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিত তাহলে সেও আন্দোলনে যেতে পারত। এসব ভাবনা এসে দোল খায় তার কিশোর মনে। অবিসংবাদিত নেতার ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, শুনে স্বাধীনতা আন্দোলনে যে মানুষটি সবাইকে
একত্র করেছিলেন তার জীবন সম্পর্কে খুব কৌতূহল জাগে। সেই মানুষটিও তো তার মতো একদিন ছোট ছিলেন।
সেই মানুষটিকে সে জানতে গিয়ে শুনেছে মধুমতী নদীর নাম। এ নদীর জল কি সুমিষ্ট? সঠিক জানে না। যা জানে তা হলো, মধুমতীর অনেক শাখা নদনদী আছে। এর একটির নাম বাইগার। এ শাখা নদের ধারে একটি গ্রামের নাম টুঙ্গিপাড়া। এ গ্রামের ছেলেমেয়েরা এ নদে সাঁতার কাটত। খোকা নামের একটি বালকের বাড়ি ছিল ওই টুঙ্গিপাড়ায়। সেও ওই নদে সাঁতার কাটত। তাই বুঝি এ নদের জল সুমিষ্ট। খোকা নামের এ বালকটিই একদিন বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।
খোকা নামের এ বালকের ছোটবেলা কেমন ছিল আয়ানের খুব জানতে ইচ্ছে করে। তার কি প্রিয় ছিল দোয়েল পাখির ডাক? বুনোলতার মাঝে ফুটে থাকা কচুফুল?
খোকাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে গেটে একটা আম গাছ ছিল। ওই গাছের মুকুলের ঘ্রাণে সে কি আকুল হতো? বৈশাখী মেলায় গিয়ে বাবার সঙ্গে রসগোল্লা খেতে পছন্দ করত? ছায়াঘেরা গ্রাম। পুকুরপাড়ে হিজল গাছ থেকে টপটপ করে ঝরে পড়ছে ফুল। সেই ফুলের সুবাস পকেটে ভরে নিয়ে সেও কি স্কুলে যেত? আয়ানের কল্পনার জগতে খোকার স্কুলে যাওয়ার দৃশ্য মনে পড়ে। বাঁশবন অথবা বর্ষাকালে নদে দলবেঁধে সাঁতরে যাওয়ার দৃশ্য মনে পড়ে।
এই খোকার জন্ম ১৯২০ সালে। অনেক আগের কথা। তখন এ দেশের মানুষ নদনদীতে যাতায়াত করত। মাঝিরা ভাটিয়ালি গাইত। খোকা কি বড় হয়ে নৌকার মাঝি হতে চেয়েছিল? খোকা তো বড় হয়ে নৌকার মাঝিই হয়েছিল। দেশটা হলো নৌকা। খোকা দক্ষ মাঝি ছিল তাই দেশটাকে সঠিক পথে নিয়েছিল। তাই বড় হওয়ার পর বাঙালি খোকাকে উপাধি দিল বঙ্গবন্ধু।
আয়ান ভাবে আচ্ছা। খোকার জন্মসাল ১৯২০। দিনটা ১৭ মার্চ। ওই একই বছরের একই দিনে পৃথিবীতে আরও অনেক মানুষের জন্ম হয়েছে। সবার কথা কি মনে রেখেছে? খোকা নামে এই বঙ্গবন্ধুর কথা সবাই বলে।
বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। এ দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন। শিশু-কিশোরদের ভালোবেসেছেন। একজন মহান নেতা যখন শিশুদের মাঝে যেতেন নিজেও শিশু হয়ে যেতেন। শিশুদের বন্ধু হয়ে যেতেন। আয়ানের কাছে আরও একটি বিষয় ভালো লাগে। খোকার জন্মদিনেই শিশুদের একটা উৎসব হয়। সেটা হলো ‘জাতীয় শিশু দিবস’। তাই স্কুলের সহপাঠীদের ভেতরে একজন খোকা নামের বঙ্গবন্ধুকে খুঁজছে আয়ান।
অষ্টম শ্রেণি
সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী